ঢাকা: একজন রিপোর্টারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ডেডলাইন। আর অনলাইনের জন্য এই ডেডলাইন এতটাই কঠোর যে এর জন্য সামান্য সময়টুকুও থাকে না।
কথাগুলো বলছিলেন বাংলানিউজের সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট মাজেদুল নয়ন।
বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল (বিবিআইএন) মোটর র্যালির একমাত্র সাংবাদিক সদস্য তিনি। ভারতের ওড়িশ্যা থেকে শুরু হয়ে সাড়ে চার হাজার কিলোমিটারের যাত্রা এই র্যালির। সোমবার র্যালির অবস্থান ছিলো বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। এর আগে তা ঘুরে এসেছে ভারত, ভুটান ও সিকিমের গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য ও শহর। ঢাকা থেকে কলকাতায় গিয়ে শেষ হবে এই দীর্ঘ যাত্রা।
মাজেদুল নয়নের প্রশংসা হচ্ছিলো বিবিআইএন’র ঢাকার সেমিনারে। এত দ্রুত, এত বিস্তারিত রিপোর্টিং করায় বিষ্মিত সফরসঙ্গীরাই সেই প্রশংসা করছিলেন। আর অনুষ্ঠানের প্রধানঅতিথি খোদ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার প্রশংসা করে বলেন, এভাবেই বাধার দেয়ালগুলো ভেঙ্গে আমরা সম্পর্কের সেতু গড়বো।
মাজেদুল নয়নের সঙ্গে কথা হচ্ছিলো সোমবার সকালে সোনারগাঁও হোটেলের লবিতে। তিনি জানাচ্ছিলেন এই সফরের অভিজ্ঞতার কথা। নয়ন বলেন, খবর সংগ্রহ ও তা প্রকাশের জন্য তৈরি করার তাড়া প্রত্যেক রিপোর্টারেরই থাকে। কিন্তু প্রতিকূল পরিবেশে যখন কাজটি আরও কঠিন হয়ে যায় তখন সে কাজটি সম্পন্ন করতে পারলে এক ধরনের ভালোলাগা কাজ করে। এই ভালোলাগাকে পূঁজি করেই কাজগুলো করে গেছি। আসলে প্রতিকূলতায় কাজ করার সুযোগটাও এক ধরনের অনুপ্রেরণা।
অনলাইনের জন্য খবর পাঠানোর কোনও নির্ধারিত সময় নেই, এখানে সকাল বা সন্ধ্যা বলে কোনও ডেডলাইনও নেই, ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর একটাই চেষ্টা কত দ্রুত খবরটি লিখে অফিসে পাঠানো যায়। আমি সে কাজটিই করে গেছি।
আমি পুরো র্যালিকে কিংবা র্যালি সংশ্লিষ্টদের বুঝিয়ে দিতে পেরেছি, বাংলানিউজ সময়ের সাথে সাথে চলে, এটাই সেরা আনন্দের, বলেন মাজেদুল নয়ন।
‘সাংবাদিক প্রশংসা পেতে কাজ করে না, তবে কাজের প্রশংসা পেলে ভালোই লাগে, আর তা যদি হয় দেশের মন্ত্রীর কাছ থেকে তাহলে তো কথাই নেই। ’
কেবল বাংলাদেশিরাই নয়, মাজেদুল নয়নের প্রশংসা করছিলেন, ভারত, নেপাল, ভুটান থেকে এই র্যালিতে যোগ দেওয়া সরকারি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরাও।
নয়ন কৃতজ্ঞতা জানান, বাংলানিউজের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেনের প্রতি। তিনি বলেন, এডিটর ইন চিফ আমার ওপর আস্থা রেখেছেন এবং এমন একটি অ্যাসাইনমেন্টে পাঠিয়েছেন এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া।
নয়ন বলেন, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি। গাড়ির বহরে বসে কম্পিউটারকে ইন্টারনেট কানেক্টেড করা সম্ভব ছিলো না। একমাত্র ভরসা মোবাইল ফোনে স্টোরি লেখা। অনেক কষ্টে যখন লেখা শেষ হতো তখন বেঁকে বসতো ইন্টারনেট সংযোগ। দুর্গম পথ দিয়ে চলা বহরে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক মেলাই ভার ছিলো। পেলেও বাফারিং চলতে থাকতো। ই-মেইলে ফাইল অ্যাটাচড করা কখনো কখনো সম্ভবই হতো না। তখন ফেসবুকের মেসেঞ্জার ভরসা ছিলো। কিন্তু এই সফর শুরু দুই দিনের মাথায় বাংলাদেশে ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়ায় দেখা দিলো নতুন বিপত্তি। তখন চালু ছিলো একমাত্র টেলিগ্রাম। বিকল্প পদ্ধতিতে টেলিগ্রাম ব্যবহার করে খবর ও ইমেজ পাঠাতে থাকি।
নয়ন বলেন, আসলে একজন সাংবাদিকের কাজ শুরু হয় কোনও কর্মসূচি যখন শুরু তখন অন্যদের সাথেই। কিন্তু তার কাজ শেষ হতে আরও সময় লাগে। কারণ ওই কর্মসূচির ওপর রিপোর্টটি তখনই লিখতে বসতে হয়। এটাও একটা চ্যালেঞ্জ ছিলো, সবাই কর্মসূচি শেষ করে, কিংবা ঘুরে ফিরে গাড়িতে চেপে বলতেন, এবার গাড়ি চলুক। সুতরাং স্বাভাবিকভাবে কোথাও বসে স্টোরি লেখা সম্ভবই ছিলো না। উঁচু নিচু পথে ঝাকি খেতে খেতেই লেখা চলতো। আর রাতে যখন সবাই ঘুমানোর আয়োজনে ব্যস্ত তখনও লিখতে হতো নতুন স্টোরি। এতে যার সঙ্গে রুম শেয়ার করতে হয়েছে তার ওপরও জ্বালাতন কম হয়নি।
এ ধরনের ট্যুরে যখন ধারাবাহিকভাবে স্টোরি লিখতে হয়, তখন প্রতিটি ঘটনার পরপরই সেটি লিখে ফেলা প্রয়োজন, কারণ তা না হলে একটু পরেই নতুন স্টোরি এসে পড়ে, তারপর আরও একটি এসে একটির নিচে অন্যটি চাপা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই অবস্থা যাতে সৃষ্টি না হয় সেই সচেতনতা থেকেই একটু বেশি চাপ নিয়ে কাজগুলো যখাসময়ে শেষ করেছি, বলেন মাজেদুল নয়ন।
বিষয়টি যেকোনও অনলাইন সাংবাদিকের জন্য শিক্ষনীয় বলেই তিনি মনে করেন।
ট্যুর কেমন লাগলো তার উত্তর মাজেদুল নয়ন দিলেন ভিন্নভাবে। ওড়িশ্যাকে তার মনে হয়েছে ধার্মিকদের শহর, ঝাড়খন্দকে পরিচ্ছন্নতার, বিহারকে দারিদ্রের, থিম্পুকে শুনশান নিরবতার আর ক্ষণে ক্ষণে হাসির, সিকিমকে অতিসতর্কতার, সিলেটকে সবুজের, চট্টগ্রামকে অর্থনীতির আর এত শহর দেখে এসে ঢাকাকে নিঃসন্দেহের সেরা যানজটের শহর বলেই মনে হয়েছে।
এসব নিয়ে বিস্তারিত স্টোরি লেখার আগ্রহ রয়েছে মাজেদুল নয়নের।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকা থেকে ফ্ল্যাগ অফ। বহর যাবে কলকাতায়। সেখানেই শেষ এর যাত্রা। দেশে ফিরে বাংলানিউজের পাঠকদের আরও ভালো কিছু স্টোরি উপহার দেওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করলেন সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট মাজেদুল নয়ন।
** বিবিআইএন সেমিনারে বাংলানিউজের প্রশংসা
** ‘বিবিআইএন ভিসা চালুর উদ্যোগ নিতে হবে’
** মৈত্রী মোটর র্যালি এখন ঢাকায়
** ফ্ল্যাগ অফ করলেন মেয়র, ‘জয় বাংলা’ স্লোগান সবার কণ্ঠে
** ওই তো বাংলাদেশ...
** ৪৫০০ কিমি পাড়ি দিচ্ছেন ৩ নারী
** দুঃসহ ভ্রমণ শেষে ঐতিহাসিক আগরতলায় র্যালি
** ও আমার দেশের মাটি...
** শিলচর হকি দলে এখন ৫৫ নারী
** পথের শেষ কোথায়...
** মেঘালয়ের নারীর পোশাক জাইনসেম
** শামুক-ঝিনুকে গড়া স্বপ্নকথন
** ১৬ ঘণ্টায় শিলচর
** বাংলাদেশকে প্রয়োজন, বললেন মেঘালয়ের মূখ্যমন্ত্রী
** চোখ জুড়ানো শিলংয়ে বড়া নদীর পাড়ে
** ব্রহ্মপুত্রের পাড় ধরে এবারে যাত্রা শিলচরে
** অবশেষে সমতলে, ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে
** পাপীকে গ্রাস করা মেবার টিশো হ্রদ
** পুরে ওয়ারমং বাজারে
** যে দেশে সুখটাই প্রধান
** আবারও ভারতের উদ্দেশে যাত্রা
** ভুটানে শেষ রাত, মনগারে র্যালি
** ১৩শ ফুট ওপরে বরফ মাড়িয়ে ছুটে চলা
** বিদায় ‘ভ্যালি অব বিউটিফুল গার্লস’
** ভুনতাংয়ের ঠাণ্ডায় তুগবোর উত্তাপ
** ইয়াকের দেখা মিললো উরা উপত্যকায়
** মাইনাস ৮ ডিগ্রি তাপমাত্রার ভুমতাংয়ে
** অস্ত্রহীন পুলিশ, সিগন্যাল ছাড়া ট্রাফিক
** পান চাবানোর দেশে স্মোক ইজ ক্রাইম!
** থিম্পুতে ফ্ল্যাগ অফ করলেন ধুনজেল
** থিম্পুতে বুদ্ধের দীর্ঘ বসা মূর্তি
** অাঞ্চলিক সম্পর্ক মজবুত করবে বিবিঅাইএন এমভিএ
** যান চলাচল শুরু মানেই বাণিজ্য সম্প্রসারণ
** ড্রাগনের শহরে
** চুজুম নদীর স্রোতে
** সুখের শহরে যাত্রা
** হিমালয় রাজ্যের সকাল
** ওয়েলকাম টু ভুটান
** মেঘে ভাসা কালিম্পং হয়ে গোরবাথানাত
** মায়াবতী সিকিমের উপত্যকা জীবন
** বাই বাই সিকিম....
** শুধু র্যালি নয়, বন্ধুত্বের বিনিময়
** আর যদি কখনো যাও আমার কালিম্পং...
** রাইডারস আর ওয়ে টু গ্যাংটক
** দীর্ঘতম পথ পাড়ি দিয়ে শিলিগুড়িতে রাইডাররা
** হাওটায় সূর্যস্নান
** নেতা হতে আসতে হবে গান্ধী ময়দান
** ছট পূজার মধ্যে গঙ্গা পেরোলো র্যালি
** র্যালি পৌঁছালো পাটনা
** বিহারের পথে ধাবায় চা
** দ্রৌপদী মুরমু’র অাশীর্বাদ নিয়ে রাঁচি ছাড়লো র্যালি
** ওড়িষ্যা-ঝাড়খণ্ডের ঐতিহ্যবাহী ৫ নাচ (ভিডিও)
** ৫৩৪ কিমি পাড়ি দিয়ে র্যালি এখন রাঁচিতে
** মহারাজার পথে পথে সংবর্ধনা
** তাদের জন্য যত ভক্তি
** ভুবনেশ্বর থেকে রাঁচির পথে মোটর র্যালি
** মন্দিরের শহরে...
** ওড়িশায় বিবিআইএন র্যালির উদ্বোধন
** পুরির বাতাসে....
** ১৯ দিনে ৩ দেশে ৪২২৩ কিলোমিটার মোটর র্যালি
বাংলাদেশ সময় ১৯৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৫
এমএমকে