ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নৌ নিরাপত্তা বাড়াতে টোয়িং ট্যাংক আনছে সরকার

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০১৫
নৌ নিরাপত্তা বাড়াতে টোয়িং ট্যাংক আনছে সরকার

ঢাকা: নৌ নিরাপত্তা বাড়াতে ও জাহাজের নিরাপদ নকশা প্রণয়ণে টোয়িং ট্যাংক (Towing tank) স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নৌযান ও নৌযন্ত্রকৌশল বিভাগের তত্ত্বাবধানে এই যন্ত্রটি স্থাপন করা হবে বুয়েটেই।


 
বুয়েট সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ ২০০৫ সালে আন্তর্জাতিক মানের সমুদ্রগামী জাহাজ নির্মাণ ও রফতানির মাধ্যমে এই সেক্টরে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সক্ষম হয়। কিন্তু নির্মিত জাহাজের পারফরম্যান্স, ভারসাম্য, রেজিসট্যান্স ও প্রোপালশন, সি-কিপিং ইত্যাদির জন্য শিপ মডেল টেস্টিং সুবিধা সৃষ্টির লক্ষ্যে টোয়িং ট্যাংক জরুরি। যার মাধ্যমে জাহাজের মডেল টেস্ট করে নকশার প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা সম্ভব হবে।
 
সূত্র আরও জানায়, বর্তমানে দেশে এই সুবিধা না থাকায় প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে বিদেশ থেকে জাহাজের ডিজাইন ও পারফরম্যান্স পরীক্ষা করতে হচ্ছে। দেশে এই সুবিধা সৃষ্টি হলে জাহাজ নির্মাণ ক্ষেত্রে দেশিয় জনবলের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে ও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।

প্রতি বছর নৌ-দুর্ঘটনায় জান-মালের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। টোয়িং ট্যাংক স্থাপনের মাধ্যমে জাহাজের নিরাপদ নকশা প্রণয়ন ও জাহাজ তৈরি করে নৌ নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা সম্ভব।
 
বুয়েটে নৌযান ও নৌযন্ত্রকৌশল বিভাগ থাকলেও এতোদিন শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে হাতে-কলমে শিক্ষা দেওয়া যায়নি একমাত্র টোয়িং ট্যাংকের অভাবে।
 
এ প্রসঙ্গে বিভাগটির প্রধান ড. মোহাম্মদ সাহাজাদা তরফদার বাংলানিউজকে বলেন, টোয়িং ট্যাংক স্থাপন করা হলে আমরা দেশেই আন্তর্জাতিক মানের জাহাজের নকশা প্রণয়ন ও পারফরম্যান্স পরীক্ষা করতে পারবো। আশা করছি, শিগগিরই এটি স্থাপন করা হবে। দেশে এই সুবিধা সৃষ্টি হলে জনবলের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে এবং প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। এটি স্থাপনের মাধ্যমে জাহাজের নিরাপদ নকশা প্রণয়ন ও ত্রুটিমুক্ত জাহাজ তৈরি করে নৌ নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।
 
বুয়েটের রশিদ হলের পেছনে স্থাপন করা হবে এ টোয়িং ট্যাংক। এটি স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই, পরিবেশগত সুবিধা, জমি নির্বাচন ও প্রস্তাবটি স্বয়ংসম্পূর্ণ কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে ‍বুয়েটের নৌযান ও নৌযন্ত্রকৌশল বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। কারিগরি উৎকর্ষতা ছাড়া কোনো দেশই জাহাজ নির্মাণ শিল্পের মতো একটি প্রতিযোগিতামূলক সেক্টরে টিকে থাকতে পারে না। এই সেক্টরকে টিকিয়ে রাখতে হলে আধুনিকায়ন অপরিহার্য। তাই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন জরুরি। এজন্য বুয়েটের ভেতরেই জমি নির্বাচন করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চাহিদা নিরূপন করা হয়েছে।

অন্যদিকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দ্রুততম সময়ের মধ্যে টুয়িং ট্যাংক স্থাপনের জন্য সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে ‘বুয়েটে টেস্টিং সেন্টার স্থাপন (টোয়িং ট্যাংক)’ প্রকল্পের মূল্যায়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হুমায়ুন খালিদ।
 
প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় প্রায় ৫০ কোটি টাকা। প্রকল্পটিতে ৫ কোটি টাকা অনুদান হিসেবে দেবে অ্যাসোসিয়েশন অব এক্সপার্ট ওরিয়েন্টেড শিপ বিল্ডিং ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশ। এপ্রিল ২০১৬ থেকে জুন ২০১৭ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
 
এটির স্থাপন ব্যয় বহন করবে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ও অ্যাসোসিয়েশন অব এক্সপার্ট ওরিয়েন্টেড শিপ বিল্ডিং ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশ। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।   
 
বাংলাদেশ সময়: ০১১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৫
এমআইএস/আরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।