ঢাকা: কোনোরকম লিখিত ছাড়া মৌখিক নির্দেশে পার্টির নামে করা ৭টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে চার কোটি টাকা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করতে বাধ্য করা হয়।
অ্যাকাউন্ট বন্ধ ও টাকা স্থানান্তরের বিষয়ে একটি দরখাস্ত দিতে ব্যাংকের এজিএম অনুরোধ করলে, তার উপর চাপ প্রয়োগ ও চাপড়ানো হয় তার টেবিল।
বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার সাক্ষ্য দিয়ে সোনালী ব্যাংকের লালমাটিয়া শাখার তৎকালীন এজিএম মামলার সাক্ষী আমিন উদ্দিন আহম্মদ এসব কথা বলেন।
আমিন উদ্দিন সাক্ষ্যে বলেন, ২০০৫ সালের ১৩ জানুয়ারি দুই জন ব্যক্তি আমার চেম্বারে প্রবেশ করেন। তাদের একজন নিজেকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর পিএস হিসাবে পরিচয় দেন। তারা আমাকে সোনালী ব্যাংক লালমাটিয়া শাখায় বিএনপি দলীয় ৪টি সঞ্চয়ী হিসাব ও ৩টি এফডিআর অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে, সমুদয় টাকা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অবস্থিত সোনালী ব্যাংকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করার নির্দেশ দেন।
এসময় বিচারক সাক্ষীকে বলেন, তারা নির্দেশ দিয়েছিলেন না অন্য কিছু? সাক্ষী বলেন, তারা সরাসরি নির্দেশই দিয়েছিলেন)।
আমিন উদ্দিন বলেন, আমি তাদের কাছে কিছু সময় চাইলে তারা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তারা আমার টেবিল চাপড়ান। হিসাবগুলো দ্রুত বন্ধ করে সমুদয় টাকা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অবস্থিত সোনালী ব্যাংকের জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।
তিনি আরও বলেন, আমি তাদের কাছ থেকে এক ঘণ্টা সময় নিয়ে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সোনালী ব্যাংক প্রধান শাখার ডিজিএম সরোয়ার হোসেনকে ফোন করি। তিনি আমাকে বলেন, তারা যা চান করুন। নইলে এ থেকে উদ্ভুত পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না। এরপর আমি ৭টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে সমুদয় স্থিতি তিন কোটি ৯৯ লাখ ৫৬ হাজার ১শ ৪৮ টাকার একটি পে অর্ডার তৈরি করি। এক ঘণ্টা পর তারা এসে পে অর্ডারটি নিয়ে চলে যান।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার ৩০তম সাক্ষী হিসেবে তিনি এ সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ঢাকার ৩য় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদার আগামি ২১ ডিসেম্বর সাক্ষীদের জেরার জন্য দিন ধার্য করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৫
এমআই/এসএস