ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আখাউড়া থেকে: ‘কেন্দ্রে গিয়া সবার সঙ্গে কথা কয়ে সিদ্ধান্ত নিবো, যারে উপযুক্ত মনে হইবো তারেই ভোট দিমু। জনগণে জনগণে একটা আলোচনা আছে না!’
আসন্ন পৌর নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা ওঠতেই ৫৫ বছর বয়সী নূর আলী বলছিলেন কথাগুলো।
শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরসভার কলেজ রোড এলাকায় চায়ের দোকানে কথা হয় নূরের সঙ্গে।
নির্বাচনের সময় চায়ের দোকান থেকেই যে ভোটের ঝড় শুরু হয় তার প্রমাণও মিললো এখানে কিছুক্ষণ বসে থেকে। মিনিট বিশেক বসতেই সত্যি জমে উঠলো ভোটের আড্ডা।
সবাই মিলে যখন ভোটের আলোচনায় মশগুল, তারই এক ফাঁকে কথা হয় নূরের সঙ্গে।
অভিজ্ঞ এ ভোটারের কথায় যে সবাই সায় দিলেন এমন নয়, পাশে থাকা রহমানের সোজাসুজি কথা, যে যোগ্য তারেই ভোট দেবো। কী কী বিষয় যোগ্যতায় ফেলছেন তাও বললেন পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের এ ভোটার।
কীভাবে যোগ্যপ্রার্থী বাছাই করবেন এ প্রশ্নের উত্তরে নূর বলেন, ক্যান কেন্দ্রে জনগণে জনগণে আলোচনা আছে না! সবাই মিলা সিদ্ধান্ত নিবো।
এ পৌরসভার ভোটারেরা জানালেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চার পৌরসভার মধ্যে শুধু এ পৌরসভাতেই নির্বাচন হচ্ছে। নির্বাচনের সময় হাতে আছে প্রায় তিন সপ্তাহের মতো। তবে প্রতীক বরাদ্দের পরই নির্বাচনী প্রচারণা জমে উঠবে বলে মনে করছেন তারা।
কলেজরোড থেকে চার নম্বর ওয়ার্ডের মসজিদ পাড়ায় পাওয়া গেলো নির্বাচনী আমেজ। আসন্ন পৌর নির্বাচন নিয়ে জটলা পাঁকিয়ে গল্প করছিলেন কয়েকজন।
পরিচয় দিয়ে কথা বলতেই সবাই আগ্রহ নিয়ে কথা বললেন। তুলে ধরলেন নানা মত। তবে সবাই এলাকার উন্নয়নের বিষয়টিকেই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিলেন।
এ পৌরসভার ভোটারেরা জানান, এলাকার উন্নয়ন নিয়ে যারা কাজ করবেন তাদেরই তারা ভোট দেবেন। রাজনৈতিক পরিচয়ে কাউকে ভোট দেবেন না।
মালদার এলাকার আবু বকর সিদ্দিক ও শাহেদ মিয়া বলেন, এলাকাটি পৌর ভবনের সঙ্গেই রয়েছে। অথচ গত কয়েক বছরে কোনো উন্নয়ন হয়নি। এ কারণে এবার আমরা প্রার্থী যাচাই-বাছাই করেই ভোট দেবো।
মেয়র পদে দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের বিষয়টিও গল্পের অনেক অংশ জুড়ে ছিলো। খুররম নামের একজন ভোটার বলেন, প্রথমবার এরকম হচ্ছে, তবে সবাই স্থানীয় প্রার্থীদেরই বেশি প্রাধান্য দেবে। পাশ থেকে হাবিবুর বলে ওঠেন, অনেক দিন পর নৌকা-ধানের শীষের লড়াই হবে। তাই এটাকে সবাই বেশ উপভোগও করবেন।
এদিকে বড় দুই দল থেকে দু’জন বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে থাকায় এ পৌরসভায় ভোটের গতি বাড়বে বৈ কমবে না বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
১৯৯৯ সালে এ পৌরসভা যাত্রা শুরু করেছে। ‘খ’ শ্রেণীর এ পৌরসভায় মোট ভোটার ২৪ হাজার ৭৪৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ হাজার ৩৭১জন ও নারী ভোটার ১২ হাজার ৩৭৫ জন। ওয়ার্ড সংখ্যা নয়।
মেয়র পদে সাতজন ও কাউন্সিলর পদে ৪২ ও নারী কাউন্সিলর পদে নয়জন ভোট যুদ্ধে লড়াই করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৫
একে/এএ