পদ্মাপাড় (মাওয়া) থেকে ফিরে: বছর খানেক আগে যেখানে ধু ধু বালুচর, সেখানে এখনই যেন এক সাংহাই! চীনের শহর সাংহাই খুব পরিপাটি আর রাতে আলো ঝলমলে শহর। অনেকটা সাংহাইয়ের আদলে পদ্মার প্রকৌশলী-কর্মকর্তাদের ছোট ছোট থাকার ঘর তৈরি হয়েছে।
রাতের আঁধারে সেখানে ফুটে ওঠে শত শত আলো। কেননা এখানে কাজ চলে দিনেরাতে, আর সেখানেই সবচেয়ে আকষর্ণ যে ঘরটি ঘিরে সেটি আরও অনিন্দ্য!
মান হিসেবে ধরলে সেটি হবে পাঁচ তারকা। সামনে ২০টিরও বেশি দেশি-বিদেশি প্রজাতির ফুলের বাগান। ভেতরে সুরম্য ৩টি কক্ষে সজ্জিত অত্যাধুনিক সব সুবিধা। রয়েছে ড্রয়িং-ডাইনিং স্পেসসহ সুপরিসর সব আয়োজন। আর ঘরের চারধারে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো।
ভেতরে বিশাল মনিটরের একটি কম্পিউটার স্ক্রিনে দেখা যাবে পদ্মা সেতুর সর্বশেষ তথ্য, আর সেতু এলাকার কোন প্রকল্পের কাজ কতটুকু এগুচ্ছে।
কক্ষটির নাম পদ্মা-১০। তার নিচে এই ঘরের মালিকের নাম লেখা। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কেবলমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য সেতু এলাকায় এভাবে ঘরটি সাজানো। তিনি পদ্মাসেতুর স্বপ্নদ্রষ্টা। আর স্বপ্ন পুরণের কারিগরও।
১২ ডিসেম্বর এখানে কিছু সময় কাটিয়ে যাবেন তিনি। প্রথম বারের মত তার ঘরে উঠবেন তিনি। এটা কেবল তারই জন্য আলাদা করে তৈরি করা।
উদ্বোধনের দিন এই ঘরের ভেতরে নিজের কক্ষে বসেই প্রধানমন্ত্রী দেখবেন সাত মিনিটের একটি ডকুমেন্টারি। যে ডকুমেন্টারিতে দেখানো হবে পদ্মাসেতুর কর্মযজ্ঞগুলো।
দিনে পদ্মা সেতুর সার্ভিস এরিয়ার সৌন্দর্য্য যতটা না দেখা যায় তার চেয়ে বেশি দেখা যায় রাতে। এখানে রাত মানে সাংহাই। সাংহাই নগরীর মত পদ্মা তীরের এই সার্ভিস এরিয়ার আলো গুলো যখন জ্বলে উঠে তাকে সাংহাই মনে হয়, এমনটা বলছিলেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সার্ভিস এরিয়া নিয়ে সাংহাই উপমা দিয়ে যখন ঘুরে ঘুরে দেখাচ্ছিলেন তখনই মন্ত্রী জানান, সার্ভিস এরিয়ার পাঁচতারকা মানের পদ্মা-১০ ঘরটি প্রধানমন্ত্রীর জন্য স্থায়ীভাবে নির্মাণ করা হয়েছে।
হাত বাড়িয়ে তিনি নিজেই ঘরটি দেখিয়ে দিলেন। সঙ্গে আরও বললেন, ‘এর পরের ঘরটি আমার। তবে আমার ঘরটি স্থায়ী নয়, প্রধানমন্ত্রীর ঘরটি স্থায়ী। পদ্মা-৯ নামে ঘরে বসে সেতুর কাজ মনিটরিং করেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, জানালেন তার একজন সহকারী।
মন্ত্রীর ভাষায়, পদ্মা সেতু প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন। আমি তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের সৈনিকমাত্র।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৫
এসএ/এসএইচ
** স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রকল্প!