ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনের জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য আনিছুর রহমান মানিকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার(২৮ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩নং আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন উপজেলার কাকচর গ্রামের শহীদ ইউনুস আলীর ছেলে মো. রুহুল আমীন।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল বাংলানিউজকে জানান, আদালতের বিচারক আবেদা সুলতানা মামলাটি গ্রহণ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়েছেন।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- রাজাকার মোখলেছুর রহমান মুকুল, শামসুল হক বাচ্চু, শামসুল হক ফকির, নুরুল হক ফকির, সুলতান ফকির, মানিক মুন্সী, খাদেম রাজাকার, আব্দুল করিম, মৌলভী মোফাজ্জল হোসেন, সাইদুর রহমান রতন ও ইব্রাহিম রাজাকার।
তাদের মধ্যে আব্দুল করিমের বাড়ি সদর উপজেলার চর সিরতা এলাকায়। বাকিদের বাড়ি ত্রিশালের বিভিন্ন গ্রামে।
মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, শান্তি কমিটির সভাপতি আব্দুল খালেক সরকার ওরফে খালেক রাজাকারের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের জুন/জুলাই মাসে শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়। স্থানীয় আহমেদাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে পাকিস্তানি হানাদার ও রাজাকার বাহিনীর ক্যাম্প স্থাপিত হয়।
স্থানীয় কাকচর গ্রামের ইউনুছ আলী মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের নদী পারাপার করে দিতেন। এ অপরাধে আনিছুর রহমান মানিকের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল তাকে ধরে নিয়ে যায়। একাত্তরের ১৫ আগস্ট সকাল ১০টায় ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতনের পর গুলি করে তাকে হত্যা করেন মানিক।
তখন বাদী রুহুল আমিনের বয়স ছিল মাত্র ১৪ বছর। রুহুল তার বৃদ্ধ দাদাকে নিয়ে বাবার মরদেহ আনতে গিয়েছিল। কিন্তু রাজাকাররা তাকে ক্যাম্পে প্রবেশ করতে দেয়নি। পরে স্থানীয় আহমেদাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে ইউনুস আলীকে গণকবর দেওয়া হয়।
মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, মানিকসহ আসামিদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা, ধর্ষণ, লুন্ঠন ও বাড়ি পোড়ানোর অভিযোগ রয়েছে।
এর আগে গত ২৫ অক্টোবর সাবেক সংসদ সদস্য আনিছুর রহমান মানিকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে একই অভিযোগে ত্রিশাল উপজেলার বারইগ্রামের হাফিজ উদ্দিন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৫
পিসি/এএসআর