ঢাকা: হ্যামারের শক্তিতে পদ্মার তলদেশে যাচ্ছে একের পর এক পাইল। স্বংক্রিয়ভাবে স্বশব্দে পাইলে সজোরে আঘাত হানছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী হ্যামার।
মাওয়া ঘাটের অদূরে ৭ নাম্বার পিলারের পাইল ড্রাইভ শেষে এবার ৬ নাম্বার পিলারের কাজ শুরু হবে খুব শিগগিরই।
১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মাসেতুর পাইল ড্রাইভ সূচনা করে দিয়ে এসেছিলেন। সে কাজের উৎসবে পদ্মাপাড়ে ছড়িয়ে পড়া উচ্ছ্বাস এখন সেতু গড়ে তোলার অপেক্ষায়। ঢেউ আর গভীরতার সঙ্গে লড়াই করেই এখন এগুচ্ছে পদ্মাসেতুর কাজ।
সেতু প্রকল্পের প্রকৌশলীরা বাংলানিউজকে জানান, পদ্মাসেতুর একেকটি পিলারে বাঁকা করে ৬টি পাইল ড্রাইভ করা হবে। ইতোমধ্যে ৭নং পিলারের ২টি পাইল ড্রাইভ শেষ করা হয়েছে। আর ৬ নাম্বার পিলারেরও পাইল ড্রাইভ শুরুর জন্য তারা প্রস্তুত।
চায়না মেজর ব্রিজের প্রকৌশলীরা জানান, জার্মান থেকে নিয়ে আসা বিশেষ হেমারের শক্তি এতই যে একেকটি পাইল ড্রাইভ একদিনেই শেষ করা যায়। কিন্তু তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজে আরও ৬ থেকে ৭ দিন লাগে।
যে হ্যামার দিয়ে পদ্মাসেতুর পাইল ড্রাইভ চলছে সেটি ২৪০ টন শক্তিসম্পন্ন। এক নাগাড়ে চলছে এই হ্যামারিং। কম্পিউটারের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক যার মনিটরিং করা হচ্ছে।
৪১টি পিলারের ওপর নির্মাণ করা হবে ৬.১৫ কিলোমিটারের পদ্মাসেতু। পিলারের পাইলগুলো ইংরেজি উল্টো ভি’ অক্ষরের মতো হবে। ভূমিকম্পসহ নদীর পানির ধাক্কা মোকাবেলা যাতে করতে পারে এজন্যই বাঁকা করে ড্রাইভ হচ্ছে।
এছাড়া দেড় কিলোমিটার করে উভয়পাড়ে তিন কিলোমিটার সংযোগ সেতুর জন্য আরও ২৪টি পিলার থাকবে। নদীতে ১৫০ মিটার পরপর বসবে এই পিলার। সেতুর ৪২টি পিলারে মোট ২৪০টি এবং দু’পাড়ের ১২টিতে ২৪টি পাইল বসানো হবে। সর্বমোট ২৬৪টি পাইল হবে।
পাইলিংয়ের মাধ্যমে তৈরি করা পিলারের ওপর বসবে স্পেন। মাওয়া ঘাটের পাশেই কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্পেন জোড়া লাগিয়ে পিলারের ওপর বসানো হবে।
দ্বিতল পদ্মা বহুমুখী সেতুর পুরোটা হবে স্টিল আর কংক্রিট স্ট্রাকচারে। সেতুর ওপরের তলায় থাকবে চারলেনের মহাসড়ক আর নিচ দিয়ে যাবে রেললাইন।
পদ্মাসেতুর প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, পদ্মাসেতুর কাজ শেষ হয়ে গেছে প্রায় ৩০ ভাগ। দ্রুত এগিয়ে চলছে সেতুর পাইলিং কাজ। ২০১৮ সালেই সেতুর কাজ শেষ হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১৬
এসএ/পিসি