ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

১২ বছরে স্যানিটেশন ব্যবস্থায় ২৮ শতাংশ উন্নতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৬
১২ বছরে স্যানিটেশন ব্যবস্থায় ২৮ শতাংশ উন্নতি ছবি: দীপু মালাকার/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, স্যানিটেশন ব্যবস্থায় মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাপক অগ্রগতি সাধন করেছে। গত বারো বছরে স্যানিটেশন ব্যবস্থায় ২৮ শতাংশ উন্নয়ন হয়েছে।


 
বুধবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন  কেন্দ্রে (বিআইসসি) আয়োজিত সাউথ এশিয়ান কনফারেন্স অন স্যানিটেশন (স্যাকোসান)-সিক্স ২০১৬ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি  কথা বলেন।
 
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ২০০৩ সালে দেশব্যাপী ৩৩ শতাংশ হাউজহোল্ড হাইজেনিক টয়লেট ব্যবহার করতো। ২৫ শতাংশ আনহাইজেনিক টয়লেট ব্যবহার করতো। আর ৪২ শতাংশ হাউজহোল্ড বা ৫৫ শতাংশ মানুষ কোনো প্রকার টয়লেট ব্যবহার করতেন না। কিন্তু এ বারো বছরে সে অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে।
 
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর নানামুখী উদ্যোগের কারণে এখন দেশের ৬১ শতাংশ হাউজহোল্ড টয়লেট ব্যবহার করে। যা ২০০৩ সালের চেয়ে ২৮ শতাংশ বেশি।
 
মন্ত্রী বলেন, নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা মানবজীবনের মৌলিক চাহিদা। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত লাখ লাখ মানুষের এ মৌলিক অধিকার নেই। সাউথ এশিয়ার বিশাল সংখ্যক মানুষের এ সুবিধা নেই। এজন্য এ অঞ্চলে শিশু মৃত্যুহার খুব বেশি।
 
স্যানিটেশন সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ নিয়ে তথ্য আদান-প্রদানের জন্য ‘স্যাকোসান’ একটি কমন মঞ্চ। যেখানে রাজনৈতিক ও কারিগরি দিক দিয়ে আলোচনা ও পরবর্তীতে যা বাস্তবায়নের সুযোগের ক্ষেত্র তৈরি করে।
 
মন্ত্রী বলেন, স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার শুধু পলিসি তৈরি এবং প্রতিশ্রুতি দেয়নি। বর্তমান সরকার তা বাস্তবায়নের জন্য এখাতে বাজেট বরাদ্দও বাড়িয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বের ১৯২টি দেশের সঙ্গেই ২০৩০ সালের মধ্যে এ খাতে স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের জন্য কাজ করছে।
 
তিনি বলেন, গত তিন দিনে সম্মেলনে আগতরা তাদের স্ব-স্ব দেশের অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করেছেন। এতে বিভিন্ন ধরনের ইস্যুভিত্তিক আলোচনা স্থান পেয়েছে। আশাকরি, ঢাকা ডিক্লারেশন ভবিষ্যতে সাউথ এশিয়ার দেশগুলোকে স্যানিটেশন সমস্যা সমাধানে পলিসি ও স্ট্রাটিজি নিরুপণে সহায়তা করবে। একইসঙ্গে আমরা পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে পারবো।
 
মন্ত্রী আরো বলেন, আনন্দের সঙ্গে বলছি যে, ঢাকা ডিক্লারেশন বেশ কিছু পলিসি ও স্ট্রাটিজি অভিযোজন করেছে। কিন্তু তা প্রত্যেক দেশ নিজ নিজ ক্ষেত্রে নিশ্চিত করলেই কেবল এর যথাযথ বাস্তবায়ন হবে। আশকারি এ থেকে রোডম্যাপ তৈরি করতে সহজ হবে, যার ভিত্তিতে স্থায়ীত্বশীল স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নে সাউথ এশিয়ার দেশগুলো একসঙ্গে অংশদারিত্বে ভিত্তিতে কাজ করতে পারবে। তাই আসুন আমরা স্যাকোসান এর সহযোগী দেশগুলো একে অপরের মধ্যে স্যানিটেশন সুবিধা বাড়াতে এবং লাখ লাখ শিশুর অকাল মৃত্যুর রোধ করতে এবং সুস্বাস্থ্য সম্পন্ন জাতি গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হই। আসুন আমরা সম্বলিত উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করি।
 
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল মালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কনফারেন্সে অন্যদের মধ্যে ভারতের পরিবেশ উন্নয়ন ও পয়ঃনিষ্কাশন মন্ত্রী, শ্রীলংকার শহর পরিকল্পনা ও পানি সরবরাহ মন্ত্রী, ভুটানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী, আফগানিস্তানের পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক উপমন্ত্রী, মালদ্বীপের পরিবেশ ও জ্বালানি মন্ত্রী, নেপালের পানি সরবরাহ মন্ত্রী ও সার্কের মহাসচিব ছাড়াও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
 
বক্তারা বলেন, আশাকরি আগামী স্যাকোসানে আমরা আরো অগ্রগতি আনতে পারবো। এজন্য পারস্পরিক সহযোগিতার মধ্য দিয়েই এগিয়ে যেতে হবে।
 
কনফারেন্সে প্রত্যেক দেশের প্রতিনিধিরা স্ব স্ব দেশের পক্ষে ঢাকা ডিক্লারেশনে স্বাক্ষর করেন।
 
এবারের কনফারেন্সের আয়োজক ছিলো বাংলাদেশ। যা গত ১১ জানুয়ারি বিআইসিসিতে উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
 
এবারের কনফারেন্সের শ্লোগান ছিলো ‘বেটার স্যানিটেশন বেটার লাইফ’, যেখানে গত তিনদিনে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি অংশ নেন।
 
স্যানিটেশনের বিষয়ে তথ্য আদান-প্রদানের জন্য সার্কভুক্ত দেশগুলোর উদ্যোগে প্রতিটি দেশে দু’বছর পরপর এ কনফারেন্স আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশে এবার দ্বিতীয়বারের মতো যা আয়োজন করে। এর আগে ২০০৩ সালে প্রথমবার এ অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল বাংলাদেশ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৬
ইইউডি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।