ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় চাই সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নয়ন কাঠামো

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৬
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় চাই সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নয়ন কাঠামো ছবি: পিয়াস / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: সাংঘর্ষিক হলেও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বের প্রতিটি দেশকেই সামঞ্জস্যপূর্ণ উৎপাদন কাঠামো গড়ে তুলে, তা বাস্তবায়ন করতে হবে। আর এতে উন্নত-অনুন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে একযোগে কাজ করা প্রয়োজন।



শনিবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘বার্ষিক বক্তৃতা-২০১৫’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ক্লাইমেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট নলেজ নেটওয়ার্কের নির্বাহী প্রধান সাইমন ম্যাক্সওয়েল।

স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নেতৃত্ব, সঠিক পরিকল্পনা ও সঠিক বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দিয়ে ম্যাক্সওয়েল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় এ তিনটি বিষয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

প্যারিসে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলন সফল হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে অন্তত বিশ্বের ১৮৫টি দেশ তার কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে। তবে তা কতটুকু সফল হবে, তা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর নীতি ও সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করবে। জলবায়ু সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে তাদের উৎপাদন কাঠামোর পরিবর্তনের পাশাপাশি বিভিন্ন খাতে দেওয়া প্রণোদনাতেও ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নয়ন অনেক ক্ষেত্রেই সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে এই গবেষক বলেন, পরিবেশ রক্ষা এবং ক্রমবর্ধমান উৎপাদন অবশ্যই সাংঘর্ষিক। তবে বিশ্ব নেতৃত্বের প্রতিশ্রুতি থাকলে সামঞ্জস্যপূর্ণ উৎপাদন কাঠামো তৈরি সম্ভব। তাছাড়া বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন এমন এক জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে যে, গোটা বিশ্ব নেতৃত্ব একসাথে কাজ না করলে তা মোকাবিলা করা প্রায় অসম্ভব।

উন্নত দেশগুলোকে এই সক্ষমতা অর্জনে অগ্রণী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে ম্যাক্সওয়েল বলেন, এক্ষেত্রে অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্ষেত্রে কেবল ক্ষতিপূরণ দাবি করে দায়িত্ব এড়িয়ে গেলে চলবে না। অনুন্নত, উন্নয়নশীল দেশগুলোকে তাদের সীমিত সম্পদ নিয়ে তুলনামূলক অংশীদার হতে হবে।

নিজেরা সোলার প্যানেল বসানোর আগে বাণিজ্যিকভাবে চীনের সোলার প্যানেল বিপণনের উদাহরণ টেনে ম্যাক্সওয়েল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার বিষয়টিকে একটি সঙ্কট হিসেবে দেখলে চলবে না, এর মাঝে সম্ভাবনাকেও আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। আর এ জায়গাটিতেই বেসরকারি অর্থনৈতিক খাতের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন এই গবেষক।
  
এদিকে হাজারীবাগ ট্যানারি স্থানান্তর, বুড়িগঙ্গা নদী দূষণমুক্ত করা ও ঢাকা শহরের জলাধার, খাল দখল করে গড়ে ওঠা আবাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াকে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান।

অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়ানোর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেমন পদ্মা সেতু নির্মাণকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন, তেমনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলাকেও তিনি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেবেন বলে আশা করি।

বিশ্বের ধনী রাষ্ট্রগুলো জলবায়ু তহবিলে অর্থ না দিলেও নিজস্ব অর্থায়নে বাংলাদেশকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার সক্ষমতা অর্জনের আহ্বান জানান রেহমান সোবহান।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। স্বাগত বক্তব্য দেন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান। এ ছাড়া দেশের জলবায়ু ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, কূটনৈতিক পরিবেশবাদী সংগঠন ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা প্রশ্নোত্তরপর্বে অংশ নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৫
এমএইচপি/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।