ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নবম অধিবেশন শুরু বুধবার

অবসরভাতা বাড়ছে রাষ্ট্রপতির, পাবেন না অবৈধরা

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৬
অবসরভাতা বাড়ছে রাষ্ট্রপতির, পাবেন না অবৈধরা

ঢাকা: দশম জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশনেই পাস হচ্ছে রাষ্ট্রপতির অবসরভাতা, আনুতোষিক ও অন্যান্য সুবিধা আইন-২০১৬। এরমধ্যে দিয়ে বৈধ রাষ্ট্রপতিরা অবসরকালীন বর্ধিত ভাতা পাবেন, তবে বাদ যাবেন অবৈধ রাষ্ট্রপতিরা।



সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এই সুবিধা পাবেন না। এছাড়াও অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীদের নাম এই তালিকা থেকে বাদ যাবে।

অবসরে যাওয়া রাষ্ট্রপতিদের ভাতা বৃদ্ধির লক্ষে গত (০৯ নভেম্বর) অষ্টম অধিবেশনে ‘রাষ্ট্রপতির অবসরভাতা, আনুতোষিক ও অন্যান্য সুবিধা আইন-২০১৫’ নামে নতুন একটি বিল সংসদে উত্থাপিত হয়।

প্রস্তাবিত আইনের বিধান অনুযায়ী বর্তমান রাষ্ট্রপতি অবসরে গেলে ৪৫ হাজার ৯০০ টাকা ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে, সর্বোচ্চ আদালত ঘোষিত অবৈধ রাষ্ট্রপতিরা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।

বিলটি উত্থাপন করেন সংসদ কার্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।   পরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব করলে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহিত  হয়। কমিটিকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

কমিটি বিলটি নিরীক্ষা করে পাসের জন্য বিবেচনায় রেখেছে বলে জানা গেছে। বুধবার (২০ জানুয়ারি) শুরু হওয়া দশম জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশনেই বিলটি পাস হতে পারে বলে জানা যায় জাতীয় সংসদের আইন শাখা থেকে।  

 এর আগে, গত ৩ আগস্ট মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিলটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

রাষ্ট্রপতিদের অবসর সুবিধার জন্য ১৯৭৯ সালে প্রেসিডেন্ট পেনশন অর্ডিন্যান্স করা হয়। পরে ১৯৮৮ সালে এটি সংশোধন করা হয়।

উত্থাপিত বিলে রাষ্ট্রপতির পেনশন ভাতা ধরা হয়েছে মূল বেতনের ৭৫ শতাংশ। বর্তমান রাষ্ট্রপতির ৬১ হাজার ২০০ টাকা বেতন হিসেবে অবসর ভাতা হয় ৪৫ হাজার ৯০০ টাকা। আনুতোষিকের পরিমাণ এক বছরের জন্য প্রদেয় অবসরভাতা তত গুণ হবে, যত বছর কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। আর অন্যান্য সুযোগ সুবিধার ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তিগত সহকারী ও একজন অ্যাটন্ড্যান্ট এবং দাপ্তরিক ব্যয় পাবেন।

 এছাড়া একজন মন্ত্রীর প্রাপ্য চিকিৎসা সুবিধা, সরকারি অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য বিনামূল্যে যানবাহন ব্যবহার, টেলিফোন সংযোগ, কুটনৈতিক পাসপোর্ট এবং দেশের অভ্যন্তরে সার্কিট হাউস ও রেস্ট হাউস ব্যবহারের সুযোগ পাবেন।

বিলে বলা হয়েছে, কমপক্ষে ৬ মাস রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন এমন ব্যক্তি এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। আর অবসর ভাতা গ্রহণ করে কোনো রাষ্ট্রপতি মৃত্যুবরণ করলে তার বিধবা স্ত্রী বা ক্ষেত্র মতে বিপত্নীক স্বামী মাসিক অবসর ভাতা দুই-তৃতীয়াংশ হারে আমৃত্যু মাসিক ভাতা পাবেন। তবে, নৈতিক স্খলন বা অন্য কোনো অপরাধে আদালতে দণ্ডিত হলেও কোনো রাষ্ট্রপতি অবসর ভাতা পাবেন না।

এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক অসাংবিধানিক পন্থায় অবৈধ উপায়ে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন বা হয়েছিলেন মর্মে ঘোষিত কোনো ব্যক্তি অবসর ভাতা বা অন্যান্য সুবিধা লাভের অধিকারী হবেন না বলেও প্রস্তাবিত আইনে বিধান রাখা হয়েছে।

জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল থেকে ১৯৮১ সালের ৩০ মে পর্যন্ত ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৮৩ সালের ১১ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। এ দুই সাবেক সেনা  কর্মকর্তার শাসনামলকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন সর্বোচ্চ আদালত।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৬
এসএম/পিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।