লালমনিরহাট: তামাকের বিকল্প ফসল চাষের পক্ষে লালমনিরহাটে মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিক্ষুব্ধ কৃষকসমাজ নামে একটি সংগঠন।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় লালমনিরহাট জেলার ‘বিডিআর’ গেট মুক্তমঞ্চ থেকে একটি মিছিল বের হয়ে মিশন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
এসময় অনেকের মধ্যে বিক্ষুব্ধ কৃষকসমাজের পক্ষ থেকে কৃষক মো. জাহিদুল ইসলাম, নেসার আলী, হরেকৃষ্ণ, সাইদ উদ্দিন, আবুল হোসেন বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, তামাকচাষ নিরুৎসাহিত করতে রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো নীতিমালা না থাকায় বিগত কয়েক দশকে অরক্ষিত কৃষকদের ব্যবহার করে তামাক কোম্পানিগুলো তামাক চাষ বাড়িয়ে চলেছে। ফলে সারা দেশে এ বিষাক্ত ফসলের আবাদ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী দেশে ২০১৩-১৪ মৌসুমে ১০৮,০০০ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে, ২০১২-১৩ মৌসুমে যা ছিল ৭০,০০০ হেক্টর। অর্থাৎ এক বছরেই তামাক চাষের জমির পরিমাণ বেড়েছে ৩৮,০০০ হেক্টর।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে ২০১৫-১৬ মৌসুমে লালমনিরহাট জেলায় ১১০৭৫ হেক্টর জমিতে তামাক চাষের কথা বলা হলেও এ জেলায় তামাক চাষের জমির প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। সাময়িক মুনাফার প্রলোভনে পরে কৃষক ক্রমশ তামাকচাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ফলে খাদ্য ও অর্থকরী ফসলের জমি চলে যাচ্ছে তামাকের দখলে। সরকারের দেওয়া কোটি কোটি টাকার ভর্তূকির সার ও সেচ সুবিধা ব্যবহার করে বছরের পর বছর মুনাফা লুটে নিচ্ছে তামাক কোম্পানিগুলো।
একই সঙ্গে অতিরিক্ত সার ও কীটনাশক ব্যবহারের মাধ্যমে জমির উর্বরাশক্তিও মারাত্মকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। তামাক চাষ ও প্রক্রিয়াজাত করায় দীর্ঘসময় যুক্ত থাকতে হয়। ফলে গোটা কৃষক পরিবারই বছরের অধিকাংশ সময় নানারকম অসুস্থতায় ভোগে। কৃষক ও কৃষি আমাদের গ্রামীণ ও জাতীয় অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি। এসবে সুরক্ষা প্রদান রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। এ লক্ষ্যে প্রয়োজন কৃষকদের বিকল্প ফসল চাষে উদ্বুদ্ধকরণ ও সার্বিক সহযোগিতা প্রদান।
এছাড়া তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ মোকাবেলার বিধান সম্বলিত একটি কার্যকর তামাকচাষ নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নই কেবল কৃষকদের সুরক্ষা প্রদানের মাধ্যমে তামাকচাষ রুখতে সক্ষম বলেও মন্তব্য করেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৬
এসআই