রাজশাহী: ‘গত বছর রোগ-বালাই আছিলো কম। আলুর ভালো ফলন হয়াছিলো।
শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) সকালে আলু চাষের জমি পরিচর্যা করার সময় রাজশাহীর পবা উপজেলার পিল্লাপাড়া গ্রামের কৃষক জলিল মিয়া ফলন নিয়ে জানাচ্ছিলেন তার প্রত্যাশার কথা।
গতবার দাম ভালো পাওয়ায় রাজশাহী অঞ্চলে এবার আলুর আবাদ বেড়েছে। বিভাগের জেলাসহ বিভিন্ন উপজেলার চাষিরা তাই এখন আলু চাষের জমির নিবিড় পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
গত সপ্তাহ থেকে রাজশাহীতে হঠাৎ করেই শীতের তীব্রতা বেড়ে গেলেও চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলেই রয়েছে। তাই ভালো উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখছেন আলু চাষিরা।
পবা উপজেলার পিল্লাপাড়া গ্রামের অপর আলুচাষি শফিকুল ইসলাম জানালেন, গত মৌসুমে আলুর দাম খুবই ভালো ছিল। আলুর বাজারদর ১৩শ’ টাকা থেকে ২৪শ’ টাকা বস্তার (৯০ কেজি) মধ্যে ওঠা-নামা করেছে। এতে করে চাষিরা কোল্ড স্টোরেজে রক্ষিত আলু বিক্রি করে ভালো মুনাফা পেয়েছেন।
পবার বড়গাছী গ্রামের রাষ্ট্রপতি পদকপ্রাপ্ত আলু চাষি রহিমউদ্দিন সরকার জানান, তিনি এবার ১২ বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছেন। তার ছেলেরা প্রায় ১শ’ বিঘা জমিতে আলু বুনেছেন। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া আলু চাষের অনুকূলে থাকায় উৎপাদন ভালো হবে বলে মনে করছেন তিনি।
পবার নওহাটা গ্রামের আলু চাষি নুরুল আমিন বলেন, ‘মথুরা-নওদাপাড়া বিলে এবার ১৪ বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছি। গত বছর আলুর চাষ করেছিলাম ১১ বিঘায়। ভালো দাম পাওয়ায় এবার ৩ বিঘা বেশি জমিতে আবাদ করেছি’।
রাজশাহী জেলা কৃষি তথ্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ-হিল-কাফী জানান, তিনদিন আগে বৃষ্টি হয়েছে। তবে সেই বৃষ্টি আলুর জন্য বেশ উপকারে লেগেছে। এরপর থেকে শীত একটু বাড়লেও তেমনভাবে কুয়াশা পড়েনি এখনও। বিশেষ করে দীর্ঘ সময়ের ঘন কুয়াশা ও টানা বর্ষণ আলুর মারাত্মক ক্ষতি করে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলু চাষিরা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন। গত মৌসুমে আলুর ভালো দাম পাওয়ায় এবার আবাদও বেড়েছে। তাই শেষ পর্যন্ত সবকিছু ঠিক থাকলে এবার আলুর ফলন গতবারের চেয়ে দ্বিগুণ হবে বলেও জানান তিনি।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল সাহা জানান, রাজশাহীতে চলতি মৌসুমে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩৬ হাজার ৯১৫ হেক্টর জমিতে। কিন্তু আবাদ লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে। এবার ৩৭ হাজার ৫৯০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, গত বছর আবাদ হয়েছিল ৩৬ হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে। সাধারণত ফলন একটু বেশি হলে সেটাকে পরবর্তী বছরের লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ধরা হয়। গতবার ভালো ফলনে এবার আলুর আবাদ বেড়েছে। কৃষি কর্মকর্তারাও সব সময় আলু চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০২২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৬
এসএস/আরএম/এএসআর