ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মুখোশধারী পলিথিনের আত্মকথন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৬
মুখোশধারী পলিথিনের আত্মকথন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: পলিথিন এর প্রধান রাসায়নিক উপাদান হচ্ছে ইথিলিন। যা মাটির সঙ্গে মেশে না।

ফলে পলিথিনের ব্যবহার পৃথিবীর অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নিষেধ। কিন্তু ভিন্ন নামে ভিন্ন প্রক্রিয়ায় এই পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ হয়নি।

বাজারে এখন টিস্যু পলিথিনের ব্যবহার চলছে হরদম। সকল সেক্টরেই যা জনপ্রিয়তাও লাভ করেছে, এর আকর্ষণীয় বাহ্যিক দিকে কারণে। কাপড়ের দোকান থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক্স পণ্য কেনার পর এখন বিক্রেতারা টিস্যু পলিথিনেই দ্রব্য সরবরাহ করেন। আর যাকে বলা হচ্ছে ‘মুখোশধারী পলিথিন’। কেননা, এতেও ব্যবহার হচ্ছে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ। কিন্তু এ নিয়ে সরকারে কিংবা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যাথা নেই।

এই টিস্যু পলিথিন আবার বেআইনিভাবেই উৎপাদন হচ্ছে। নেওয়া হয়নি পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্রও। সরকার একদিকে পাটজাত পণ্যের ব্যবহারের উৎসাহ দিচ্ছে আবার বেআইনি টিস্যু পলিথিন উৎপাদনে সুযোগ দিয়ে ব্যবসায়ীদেরও উৎসাহিত করছে। কেননা, এই মুখোশধারী পলিথিন উৎপাদন, বিপনন ও সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে সরকারের কোনো অবস্থান বা পদক্ষেপ নেই।

শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সকল প্রকার পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে আন্দোলনে নেমেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ বান্ধব শপিং ব্যাগ প্রস্তুতকারক অর্গানাইজেশন (বিইএসএমও)।

বাপা ও বিইএসএমও এর ব্যানারে আন্দোলনকারীরা একটি পদযাত্রা শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি সমাবেশে করেন।

এতেই দেখা গেল ‘মুখোশধারী পলিথিনে’র উপস্থিতি। যা নিজেই জানান দিচ্ছে তার পরিচয় ও ক্ষতির দিকগুলো। বিশেষ প্রক্রিয়াজাত এক পলিথিন বলছে- আমি মুখোধারী পলিথিন। আমি নতুন পলিথিন। আমি পলিথিনের বিকল্প। আমি দেশের ক্ষতি করি।

এ যেন নিজের বিরুদ্ধে নিজেরই ভুল বুঝতে পারা। সবাইকে জানান দেওয়া যে, আমি মুখোশধারী পলিথিন, আমার থেকে দুরে থাকো।

সমাবেশে আগতরা একটি ভ্যানের উপর বাশের খুঁটির সঙ্গে ঝুলিয়ে দিয়েছে ওই পলিথিনগুলো। আর সে পলিথিনের গায়ে কলম দিয়ে লেখা হয়েছে-সেই আত্মকথন।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, সরকার পাটজাত পণ্যের ব্যবহারে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। যা আমাদের উৎসাহিত করে। কিন্তু বিকল্প পলিথিনসহ সকল ধরণের পলিথিন উৎপাদন, বিপনন ও সরবরাহ বন্ধ করতে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এর মাধ্যমে পলিথিন উৎপাদনকারী ব্যবসায়ীদেরও উৎসাহিত করছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

তিনি বলেন, পলিথিনের মতোই এই টিস্যু পলিথিনও অত্যন্ত ক্ষতিকর। সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে এর উৎপাদন চলছে। কেননা, সংশ্লিষ্ট কারখানাগুলো পরিবেশ ছাড়পত্রও নেয়নি।

তাই সরকারকে পাটজাত দ্রব্যের সর্বোচ্চ ব্যবহার বৃদ্ধির পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়াও সকল প্রকার পলিথিন ও টিস্যু পলিথিনের উৎপাদন, বিপনন ও সরবরাহ অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানান তিনি।

বিইএসএমও এর সভাপতি আব্দুর রহমান রানার সভাপত্বি অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন- বাপা’র সাধারণ সম্পাদক ড. এমএ মতিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবার হাবিব প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, টিস্যু পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে সরকার কোনো উদ্যোগ না নিলে তারা বৃহত্তর কর্মসূচিতে যাবেন। এক্ষেত্রে দেশের প্রতিটি জেলায় জেলায় তারা আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৬
ইইউডি/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।