ঢাকা: সত্তরের দশক থেকে শুরু করে চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় সাংবাদিকতা করেছেন। মাঠ পর্যায়ের সাংবাদিক থেকে হয়েছেন সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতিও।
জীবনের এই গল্পটা সাংবাদিক নেতা আলতাফ মাহমুদের। রোববার (২৪ জানুয়ারি) সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে গেছেন যিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৬২ বছর।
স্বজন-বন্ধুসহ সর্বমহলে সৎ ও নির্লোভ, নিরহঙ্কারী সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত আলতাফ মাহমুদের বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের গাজীবাড়িতে।
পটুয়াখালী থেকে ঢাকায় এসে আলতাফ মাহমুদ প্রথমে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। পরে ওই চলচ্চিত্রের প্রযোজক আবদুল আলিম আরও কিছু ছবিতে অভিনয়ের জন্য তাকে অনুরোধ জানান। কিন্তু অভিনয়ে অনাগ্রহী আলতাফ মাহমুদ আগ্রহী হয়ে ওঠেন সাংবাদিকতায়। এর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তাতে যোগ দেন তিনি।
আলতাফ মাহমুদের সাংবাদিকতা জগতে প্রবেশ সাপ্তাহিক খবর দিয়ে। সেখান থেকে তিনি কাজ করেন দৈনিক খবরে। এরপর যোগ দেন দৈনিক ডেসটিনিতে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের বড় বড় সমাবেশের সংবাদ সংগ্রহ করেন আলতাফ মাহমুদ। টেলিভিশনের টকশো’তে রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবেও তাকে দেখা যায়।
আলতাফ মাহমুদ স্বৈরশাসক এরশাদের আমলে চট্টগ্রামের লালদিঘি ময়দানের জনসভায় শেখ হাসিনার ওপর গুলিবর্ষণসহ অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী।
মনে-প্রাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক আলতাফ মাহমুদ স্মৃতিচারণ করে একবার বলেছিলেন, ‘১৯৭৫ সালে যখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছবি ছাপতে গণমাধ্যম ভয় পেত, তখন আমি বঙ্গবন্ধুর ছবি বুকে নিয়ে সাহস করে সাপ্তাহিক খবরে প্রকাশ করেছিলাম। ’
সহকর্মীদের মতে, সাংবাদিকতা জীবনে সবার বিপদে-আপদে পাশে থাকতেন আলতাফ মাহমুদ। সেজন্য সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের বিভিন্ন পদে বিপুল ভোটে জয়ী হতেন তিনি।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিকবার নির্বাচিত আলতাফ মাহমুদ সর্বশেষ বিএফইউজে’র সভাপতি পদেও বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। তিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্যও ছিলেন।
ব্যক্তিজীবনে আলতাফ মাহমুদ এক ছেলে ও দুই মেয়ের জনক। তার ছেলেও সাংবাদিক।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৬/আপডেট ১৪৩৮ ঘণ্টা
এমএম/এইচএ/এএসআর