ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

৪ কেনো ১০ সন্তান হলেও কাউকে দিতাম না

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৬
৪ কেনো ১০ সন্তান হলেও কাউকে দিতাম না ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম/ফাইল ফটো

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে একসঙ্গে জন্ম হওয়া চার নবজাতকদের দত্তক নিতে চাইছেন অনেকেই। আত্মীয়-স্বজন ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগ্রহীরা ওই নবজাতকদের অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে জানা গেছে।



বুধবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে নবজাতকদের মামা মো. মাসুদ বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, যাদের সন্তান নেই এমন অনেকেই হাসপাতালে এসে শিশুদের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন এবং লালন-পালনের জন্য একটি করে নবজাতক দত্তক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। এছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে ফেসবুক ও মোবাইল ফোনে যোগযোগ করছেন অনেকেই।

কেউ-কেউ সরাসরি বলতে না পেরে হাসপাতালের পরিচালক, চিকিৎসক ও সাংবাদিকদের সঙ্গে দত্তক নেওয়ার ব্যাপারে তাদের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।

হাসপাতালের পরিচালক আবদুর রহমান তুহিন চৌধুরী বলেন, রায়পুর পৌর এলাকার এক নারীসহ বেশ কয়েকজন সন্তান দত্তক নিতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

এদিকে, বাংলানিউজে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর থেকে লক্ষ্মীপুরের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট সাজ্জাদুর রহমানের সঙ্গেও দত্তক নেওয়ার ব্যাপারে বেশ কয়েকজন ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করেছেন।

নবজাতক শিশুদের বাবা সৌদি প্রবাসী জাকির হোসেন তার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের বলেছেন, দীর্ঘ আট বছর অপেক্ষার পর সন্তান হওয়ায় তিনি খুব খুশি। এক সঙ্গে চার সন্তান জন্ম হওয়া সৌভাগ্য হিসেবে দেখছেন তিনি। তিনি সন্তানদের দত্তক দিতে আগ্রহী নন। খুব শিগগিরই তিনি সন্তানদের দেখতে দেশে ফিরবেন বলেও জানিয়েছেন।

বর্তমানে প্রসূতি মা কাজল আক্তার আশঙ্কামুক্ত। তিনি এখন অনেকটা স্বাভাবিক। জন্ম দেওয়া চার সন্তানকে কোলে নিয়ে আদর করেছেন।

বুধবার দুপুরে একসঙ্গে চার সন্তান দেখে আনন্দে কেঁদে ফেলেন তিনি। সন্তান পালক (দত্তক) দেওয়ার ব্যাপারে পরিবারের লোকজন মা কাজলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি জানতাম আমার দুই সন্তান হবে। কিন্তু আল্লাহ আমাকে একসঙ্গে চার সন্তান দিয়েছেন। এ সময় তিনি আরো বলেন, চার কেনো আল্লাহ আমাকে ১০ সন্তান দিলেও কাউকে দিতাম না। যত কষ্টই হোক আমি নিজের স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে তাদের বড় করবো।

দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. শামিমা নাসরিন ও ডা. ইফতেখার উল হক খান বলেন, প্রসূতি মা কাজল আক্তার দীর্ঘ সময় অচেতন ছিলেন। যে কারণে সন্তানদের খোঁজ-খবর নিতে পারেননি। এখন মা ও শিশুরা সুস্থ আছেন। তবুও তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। হাসপাতালে তাদের আরো সপ্তাহ খানেক থাকতে হবে বলে জানান তিনি।

শনিবার (২৩ জানুয়ারি) রাতে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর শহরের মাতৃছায়া প্রাইভেট ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের (সিজারে) মাধ্যমে কাজল আক্তারের (২৭) চার সন্তানের জন্ম হয়। এদের মধ্যে দু’টি ছেলে ও দু’টি মেয়ে।

কাজল আক্তার লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দালাল বাজার ইউনিয়নের মহাদেবপুর গ্রামের প্রবাসী জাকির হোসেনের স্ত্রী। ওই দম্পতির এর আগেও আট বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৬
আরএ

** লক্ষ্মীপুরে একসঙ্গে ৪ সন্তানের জন্ম
** সুস্থ রয়েছে নবজাতকরা, মা পর্যবেক্ষণে
** আশঙ্কামুক্ত ৪ সন্তান জন্ম দেওয়া মা


বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।