ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রেহমান সোবহানের চিন্তাধারা

রাজনীতিবিদ-অর্থনীতিবিদদের মধুর বিতর্ক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৬
রাজনীতিবিদ-অর্থনীতিবিদদের মধুর বিতর্ক ছবি: রানা / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: অর্থনীতিবিদ ও পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক সদস্য (প্রতিমন্ত্রী) রেহমান সোবহানের স্মৃতিকথা ‘আনট্রাঙ্কুইল রিকাকেশনস, দ্য ইয়ারস অব ফুলফিলমেন্ট’ বইয়ের ওপর ‘দ্য স্ট্রাগল ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক সংলাপে অর্থনীতিবিদ ও রাজনীতিবিদেরা মধুর বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন।

দেশবরেণ্য রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদের মিলনমেলা বসে বইটির আলোচনায়।



সংলাপে উঠে আসে ব্রিটিশ শাসন, পাকিস্তানি শাসন ও আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আলোচনা। এছাড়া দেশের সমৃদ্ধি ও ভবিষ্যত প্রজন্মের উন্নয়নে নানা প্রস্তাবনা উঠে আসে।

শনিবার (৩০ জানুয়ারি) রাজধানীর ব্র্যাক-ইন সেন্টারে অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহানের বই বিষয়ক এ সংলাপের আয়োজন করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন, শিক্ষাবিদ প্রফেসর আনিসুজ্জামান, অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান, সিপিডি’র ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, অধ্যাপক এম এম আকাশ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক বিএনপি নেতা শমসের মোবিন চৌধুরী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান, রাশেদা কে চৌধুরী, ড. মির্জা আজিজুল ইসলাম, সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম প্রমুখ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘স্যারের বইটি পড়ে যতোটুকু জেনেছি, স্যার এলিট ক্লাসে বড় হয়েছেন। এ বইটি দেশে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে অনেক প্রেক্ষাপট বইটিতে স্থান পেয়েছে’।

মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আপনাকে (রেহমান সোবহান) আরো একটি বইলে লিখতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আপনার ভূমিকা আমরা জানি এবং তা আপনি এ বইয়েও লিখেছেন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়েও দেশ গঠনে আপনার ভূমিকা আছে। এ বিষয়ে আপনার লেখা চাই আমরা’।

তিনি আরও বলেন,  স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশের অর্থনীতির চাকা মজবুত করতে প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়।

মওদুদ বলেন, আমি মনে করি, বঙ্গবন্ধুকে বোঝানো হলো, গণতন্ত্রের মাধ্যমে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায় না। তাই ‘ওয়ান পার্টি’ দরকার। এর পরে ‘ওয়ান পার্টি’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ ওয়ান পার্টি প্রতিষ্ঠাই  বঙ্গবন্ধু হত্যার কারণ’।

তবে এতে দ্বিমত পোষণ করে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, সমাজতান্ত্রিক প্ররোচনায় ওয়ান পার্টি করা হয়নি। এ তথ্যটি সঠিক নয়।

রেহমান সোবহানের বই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্যারের বইটি চমৎকার লেখনি সমৃদ্ধ। দেশের সকল তরুণের কাছে এটি পৌছে দেওয়া দরকার’।
 
সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন, বইটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ছোট ঘরের মধ্যে আলোচনা না করে বাংলা একাডেমিতে এ বই প্রসঙ্গে আলোচনা করা দরকার। ব্রিটিশ শাসন, পাকিস্তানি শাসন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগের বিশাল জয়- সব কিছুই আলোচনা করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা পালন করেছে, সে বিষয়েও আলোচনা করা হয়েছে।

ড. আকবর আলী খান বলেন, রেহমান সোবহান অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সে বিষয়গুলো বইটিতে আলোচনা করা হয়েছে। রেহমান সোবহান সমাজতান্ত্রিক ভাবধারায় বিশ্বাসী ছিলেন। এ চিন্তাধারা কেন বিশালভাবে বিকশিত হয়নি, সে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হওয়া দরকার। আমরা মনে করি, তিনি (রেহমান সোবহান) আরও একটি বই লিখবেন এবং এ বিষয়টি পরিষ্কার করবেন’।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।