ঢাকা: আসন্ন বই মেলায় প্রয়োজনে ব্যক্তিকে বিশেষ নিরাপত্তা দেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
শনিবার (৩০ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে অমর একুশে বইমেলার নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, নিরাপত্তার ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে যদি কোনো নাগরিক, লেখক, প্রকাশক বা ব্লগার মনে করেন তাহলে তাৎক্ষণিক পুলিশ কন্ট্রোল রুমে জানাবেন।
কমিশনার বলেন, অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে এবারের বইমেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। বইমেলা প্রাঙ্গণে ৪ স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে সূর্যাস্তের আগেই বইমেলা বেস্টনির বাইরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কেউ অবস্থান করতে পারবেন না। বইমেলা চত্বরে ২ শতাধিক সিসি টিভি ক্যামেরা দ্বারা মনিটরিং করা হবে। ওই ব্যবস্থায় দু’জন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক তদারকি করবেন।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, গত বছর প্রবেশ ও বাহির পথ একসঙ্গে হওয়ায় অনাকাঙ্ক্ষিত ও ইভটিজিংয়ের মতো ঘটনা ঘটেছে। এবার এমন যেন না হয়, সেজন্য আলাদা গেট করা হয়েছে। প্রতিটি গেটে আর্চওয়ে স্থাপন ও চেকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগত দর্শনার্থীদের হ্যান্ড ও মেটাল ডিটেক্টর দ্বারা দেহ তল্লাশির পর মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। ২৪ ঘণ্টার জন্য তিন ধাপে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে।
তিনি জানান, নিরাপত্তার জন্য ২০০ এর বেশি সিসি টিভি স্থাপন, সিসি টিভি মনিটরিং, সুইপিং, ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন, পোশাকে-সাদা পোশাকে ডিউটির ব্যবস্থা, মেলার ভেতরে ও বাইরে ফুট পেট্রল, মেলার চারদিকে লাইনিংয়ের ব্যবস্থা, ইভটিজিং রোধে বিশেষ টিম, ফায়ার টেন্ডার ও লাইটিং ইউনিট মোতায়েন, লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেন্টার, ব্লাড ব্যাংক স্থাপন এবং হকার উচ্ছেদের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এছাড়া বিদেশি স্টল ও আগত বিদেশি অতিথি এবং ভাষা সৈনিকদের জন্য নিরাপত্তার বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, মেলায় আগতদের সুবিধার্থে টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত রাস্তা বন্ধ থাকবে। দর্শানার্থীরা হেঁটে চলাচল করতে পারবেন।
হুমকিতে রয়েছেন এমন ব্যক্তিদের তালিকা রয়েছে কি-না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছেন, হুমকি পেয়েছেন, তাদের তালিকা রয়েছে। বিভিন্নভাবে আমরা তাদের নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছি।
হুঁশিয়ারি দিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, যে চক্র দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য সাম্প্রদায়িক উসকানি দিয়ে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার চেষ্টা করছে তাদের রুঁখতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তাদের অধিকাংশ আমাদের কাছে গ্রেফতার হয়েছে।
ব্লগার অভিজিৎ রায় ও প্রকাশক দীপন হত্যাকাণ্ডের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে আমাদের দৃশ্যমান অগ্রগতি রয়েছে। বলার মতো অগ্রগতি রয়েছে। বিদেশি হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর মামলার সাফল্য রয়েছে।
গত বছরে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে সস্ত্রীক হামলার শিকার হয়ে নিহত হন বিজ্ঞান বিষয়ক লেখক-ব্লগার অভিজিৎ রায়। ওই সময়ে গুরুতর আহত হন তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা। ওই ঘটনা ছাড়াও একই বছর পহেলা বৈশাখে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশ পথে নারী লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটে। এসব অভিজ্ঞতার আলোকে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এ বছর ব্যাপক পরিবর্তন আনে ডিএমপি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৬
এনএইচএফ/জেডএস