ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে বিয়ে বাড়িতে উচ্চ সুরে মাইক বাজানোকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় আব্দুস সালাম বেপারি (৬৫) ও লাল মিয়া (৫৫) নামে দুই ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
এ সময় কয়েকটি বসতঘর ভাঙচুর ও আছিয়া খাতুন নামে এক বৃদ্ধাসহ তিনজন আহত হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন- নিহত আব্দুস সালামের পক্ষের কালিকাপুর গ্রামের রহমতুল্লাহ (৬৫) ও তার আত্মীয় পার্শ্ববর্তী কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার দাড়িগাঁও গ্রামের শুক্কুর আলীর ছেলে মো. শাহ আলম (৪০) এবং লাল মিয়ার পক্ষের কালিকাপুর গ্রামের বাসিন্দা সামাদ আলীর ছেলে সুরুজ মিয়া (৬৫) ও আনোয়ার হোসেনের ছেলে সজীব মিয়া (২৫)।
এ ঘটনার পর থেকে এলাকা পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে।
বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অংশু কুমার দেব আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, কালিকাপুর গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষকদের ইন্ধনে দু’পক্ষের লোকদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে।
সূত্র জানায়, কালিকাপুর গ্রামের বড় বাড়ির এনু মিয়ার ছেলের বিয়ে উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) মাইকে উচ্চ সুরে গান বাজানো হয়। এ সময় কালিকাপুরের সীমান্তবর্তী রাধানগর হাফেজিয়া মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষক ও মুসল্লি উচ্চ সুরে মাইক না বাজাতে অনুরোধ করলে সিদ্দিক মিয়ার ছেলে সাইদুর রহমান তা বন্ধ করবে না বলে জানায়। এ সময় মুসল্লিদের সঙ্গে সাইদুরের কথা কাটাকাটি হয়।
এ ঘটনার জের ধরে ওই দিন সন্ধ্যায় ওমুদ আলী প্রধানের পক্ষের আব্দুল সালামের লোকজন সাইদুর রহমানকে মারধর করলে শুক্রবার (২৫ জানুয়ারি) বাঞ্ছারামপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন সাইদুর রহমানের বাবা।
রোববার সকাল সাড়ে দশটার দিকে আব্দুস সালাম বেপারি জমিতে কাজ করতে যাওয়ার সময় বড় বাড়ির সিদ্দিকের নেতৃত্বে ১০/১৫ জন তার উপর হামলা চালিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। তাকে গুরুতর আহতাবস্থায় বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। ঢাকায় নেওয়ার পথে আব্দুস সালাম বেপারি মারা যান।
এদিকে মৃত্যু খবর পাওয়ার পর আব্দুস সালামের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালায়। এ হামলায় লাল মিয়া নিহত হয়।
এ সময় আহত হন বৃদ্ধা আছিয়া খাতুন (৮২), নাজমা বেগম (৪৫) ও সবুজ (২০) নামে তিনজন।
এ বিষয়ে স্থানীয় উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ওয়ারিশ মিয়া বাংলানিউজকে জানান, মাইক বাজানোকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন আগে দু’পক্ষের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা হয়। এর জের ধরে রোববার সকালে সিদ্দিকের লোকজন সালাম বেপারির উপর হামলা চালায় পরে সালামের লোকজন সিদ্দিকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তার ভাইকে মারধর করেন। আহত দুইজনই পরে মারা যান।
বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অংশু কুমার দেব বলেন, এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে আটক করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৬
আরএ