ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সিলেটে সম্পদে-শিক্ষায় এগিয়ে এনামুল, আয় নেই লুৎফুরের!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৬
সিলেটে সম্পদে-শিক্ষায় এগিয়ে এনামুল, আয় নেই লুৎফুরের!

জেলা পরিষদ নির্বাচনে সিলেটের চার প্রার্থীর মধ্যে সম্পদে শিক্ষায় শক্তিশালী অধ্যক্ষ এনামুল হক সরদার। তার বিপরীতে শিক্ষায় লুৎফুর রহমান এগিয়ে থাকলেও আয় ও সম্পদের দিক থেকে এনামুলের ধারেকাছেও নেই।

সিলেট: জেলা পরিষদ নির্বাচনে সিলেটের চার প্রার্থীর মধ্যে সম্পদে শিক্ষায় শক্তিশালী অধ্যক্ষ এনামুল হক সরদার। তার বিপরীতে শিক্ষায় লুৎফুর রহমান এগিয়ে থাকলেও আয় ও সম্পদের দিক থেকে এনামুলের ধারেকাছেও নেই।

তবে অন্য দুই প্রার্থী মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের লক্ষাধিক এবং জিয়া উদ্দিন আহমদ লালার বার্ষিক আয় ২ লাখ ২৫হাজার টাকা।

সিলেট জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী চার চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে সম্পদশালী অধ্যক্ষ এনামুল হক সরদারের বার্ষিক আয় ১০ লাখ ১৯ হাজার ১৬৯ টাকা। তার স্ত্রীর ৬ লাখ ২৭ হাজার ২১০ টাকা।

আর সিলেট জেলা পরিষদের সদ্য সাবেক প্রশাসক এডভোকেট মো. লুৎফুর রহমানের বার্ষিক কোনো আয় নেই। মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের বার্ষিক আয় ১ লাখ ২০ হাজার এবং জিয়া উদ্দিন আহমদ লালার বার্ষিক আয় ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

আয় না থাকলেও অলঙ্কার এবং দামি আসবাবপত্রের হিসেবে শীর্ষে রয়েছে অ্যাডভোকেট মো. লুৎফুর রহমান। সবার নীচে মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম। নির্বাচন কমিশনে প্রদত্ত প্রার্থীদের হলফনামায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
হলফনামার তথ্য অনুযায়ী—সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যক্ষ এনামুল হক সরকারের স্ত্রীসহ তার বার্ষিক আয় ১৬ লাখ টাকার বেশি। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তার নগদ টাকা রয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৪৭৯ টাকা। রয়েছে ১৯ লাখ টাকার শেয়ার। জীবন বীমা ৩ লাখ টাকা। স্থায়ী আমানত ২ লাখ ২৮ হাজার। স্ত্রীর নামে নগদ টাকা দেখানো হয়েছে ৭৫ হাজার। ব্যাংকে দেখানো হয়েছে ১০ লাখ ৮৮ হাজার ৫০২ টাকা।

এ ছাড়াও নির্ভরশীলদের নামে ব্যাংকে রয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার টাকার বেশি। ফ্ল্যাট রয়েছে একটি। তবে তার নামে মোটা অংকের ব্যাংক ঋণও রয়েছে।

নিজের নামে অকৃষি জমি ২ দশমিক ৪ হাজার ৬৫০ একর, যৌথ মালিকানায় ১২ দশমিক ৩ হাজার ৫০ একর, অন্যটি ০.০২৮০ একর। তিনটি ব্যাংকে তার ব্যাংক ঋণ রয়েছে ৬২ লাখ ৯১ হাজার ৪০৫ টাকা। এর মধ্যে এবি ব্যাংক লিমিটেড গার্ডেন টাওয়ার শাখায় মেসার্স বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল এর নামে ৪০ লাখ ৩১ হাজার ৪০৫টাকা, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড সিলেট প্রধান শাখায় মেসার্স ইস্ট বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল নামে ১৯ লাখ টাকা এবং পূবালী ব্যাংক লিমিটেড স্টেডিয়াম,সিলেট শাখায় দি ম্যান এন্ড কোম্পানির নামে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

নিজের নামে একটি জিপ যার মূল্য দেখানো হয়েছে ১০ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে আরেকটি গাড়ির মূল্য ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, নিজের অলঙ্কার ৩৩ তোলার মূল্য দেড় লাখ টাকা, আর স্ত্রীর ১৫ ভরির মূল্য ৯০ হাজার টাকা, নিজের ইলেক্টনিক্স সামগ্রী ১০ হাজার  ও আসবাবপত্র ২০ হাজার টাকা এবং স্ত্রীর ইলেক্টনিক্স সামগ্রী ৫০ হাজার  ও আসবাবপত্র ৫০ হাজার টাকা। সিটি কলেজকে  ঋণ দান ৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। ব্যবসায় পুঁজি আছে ৩১ লাখ টাকা।

অধ্যক্ষ এনামুল হক সরদারের শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএ-পিএইচডি। তিনি দি ম্যান এন্ড কোম্পানি লিমিটেড এর পরিচালক, মেসার্স ইস্ট বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ও মেসার্স বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল এর প্রোপাইটর।
ব্যবসা থেকে তার আয় ৫ লাখ, চাকুরি থেকে আয় ৫ লাখ ১০হাজার ৯৫৩ এবং অন্যান্য খাতে ৮২১৬ টাকা। নগদ টাকা ১ লাখ ২০ হাজার, স্ত্রীর ৭৫ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৪৭৯ স্ত্রীর ১০ লাখ ৮৮ হাজার ৫০২, নির্ভরশীলদের নামে ১লাখ ২৭হাজার ৮৩৪ টাকা।

দি ম্যান এন্ড কোম্পানির শেয়ার আছে ১ হাজার ৯ টি-যার মূল্য ১৯ লাখ টাকা, সঞ্চয়পত্র আছে-৩ লাখ ১০ হাজার ৯শ' টাকার, আমেরিকান লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি ‘আলিকো’তে বিনিয়োগ আছে ২ লাখ ২৮হাজার ২৮০টাকা।

চেয়ারম্যান প্রার্থী জিয়া উদ্দিন আহমদ লালার বার্ষিক আয় ২লাখ ২৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে ভাড়া পান ২লাখ ১০ হাজার এবং কৃষি থেকে ১৫ হাজার টাকা। নিজের বা স্ত্রীর কাছে নগদ কোনো টাকা গচ্ছিত নেই।
ব্যাংকে জমা নিজের নামে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। স্ত্রীর ৬ ভরি স্বর্ণালঙ্কারের মূল্য দেখানো হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, ইলেক্টনিক্স সামগ্রী ১ লাখ টাকা, আসবাবপত্র ১ লাখ টাকা এবং অন্যান্য ৩৫হাজার টাকা। তবে হলফনামায় কৃষি বা অকৃষি জমির বিবরণ দেননি জিয়া উদ্দিন আহমদ লালা। তাঁর নামে ব্যাংক ঋণও নেই।
মো. লুৎফুর রহমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা এলএলবি। পেশায় আইনজীবী এই চেয়ারম্যান প্রার্থীর বার্ষিক কোনো আয় নেই। দুই ছেলের কাছ থেকে প্রাপ্ত ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন তিনি। ব্যাংকে জমা টাকার পরিমাণ ১লাখ ৩৪ হাজার ৭৮১ টাকা।

স্ত্রীর স্বর্ণালঙ্কার আছে দেড় লাখ টাকার, নিজের ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার ইলেক্টনিক্স সামগ্রী এবং এক লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের আসবাবপত্র রয়েছে। তাঁর নিজের নামে কোনো জমি-জমা না থাকলেও যৌথ নামে রয়েছে ৮৬ শতক কৃষি এবং ২৬ শতক অকৃষি জমি।

শিক্ষাগত যোগ্যতা স্ব-শিক্ষিত মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের বার্ষিক আয় একমাত্র কৃষিখাত থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। তবে জমির পরিমাণ উল্লেখ নেই তার হলফনামায়। নগদ ২০ হাজার এবং ব্যাংকে ১০ হাজার টাকা রয়েছে তাঁর। স্ত্রীর ২ ভরি স্বর্ণালংকার দেখালেও সেগুলোর মূল্য উল্লেখ করেননি তিনি। নিজের ইলেক্টনিক্স সামগ্রী হিসেবে টিভি, ফ্রিজ, আয়রণ এবং আসবাপত্রের তালিকায় খাট, সোফা, আলমিরা ও বাসন-কুশন উল্লেখ করেছেন।

প্রার্থীদের সিলেট জেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, প্রার্থীদের হলফনামা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে, ইচ্ছে করলে যে কেউ দেখতে পারবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৬
এনইউ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।