ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গ্রামীণফোন আনছে ‘একাত্তরের কথা’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৬
গ্রামীণফোন আনছে ‘একাত্তরের কথা’

মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাথা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মুখ থেকে সরাসরি বর্ণনার মাধ্যমে ডিজিটাল ভিডিও সংগ্রহশালা তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে গ্রামীণফোন।

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাথা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মুখ থেকে সরাসরি বর্ণনার মাধ্যমে ডিজিটাল ভিডিও সংগ্রহশালা তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে গ্রামীণফোন। দেশব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন কাহিনী বা গল্প ভিডিও’র মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়াই এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য।

 
 
মুক্তিযুদ্ধের অনুপ্রেরণামূলক গল্পগুলো যেনো প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মনে গেঁথে থাকে সে উদ্দেশে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এ উদ্যোগ নিয়েছে গ্রামীণফোন।
 
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মঙ্গলবার (০৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘একাত্তরের কথা’ শীর্ষক এ উদ্যোগটির উদ্বোধন করেন।
 
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এ হান্নান, লে. কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির, গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিটার বি. ফারবার্গ ও প্রধান বিপণন কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান এসময় উপস্থিত ছিলেন।  
 
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ ৪৫ বছর পার করেছে। এ ৪৫ বছরে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা হারিয়ে গেছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, প্রতি মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে সঙ্গে তার বীরত্বগাথার কথাও হারিয়ে যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্ম এসব যুদ্ধক্ষেত্রের গৌরবময় সত্য গল্পগুলো থেকে বঞ্চিত হওয়ার পথে।  
 
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধারা যে যেখানে আছেন সেখানে গিয়ে তাদের মুখ থেকে মুক্তিযুদ্ধের গল্পগুলো ভিডিও করার কাজ ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছে।  
 
আলাদাভাবে সংগৃহীত সব মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিকথা ভিডিও ডকুমেন্টারির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হবে। পরে সবগুলো ভিডিও একত্রিত করে অনলাইন ভিডিও সংগ্রহশালা তৈরি করবে গ্রামীণফোন, যেখানে ফুটিয়ে তোলা হবে কিভাবে মুক্তিযোদ্ধার স্বাধীনা বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছেন।  
 
গল্প সংগ্রহ করতে দেশের ৬৪টি জেলায় মোট ২০ দল একযোগে কাজ করবে। দলগুলো মুক্তিযোদ্ধাদের সরাসরি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে ভিডিও তৈরি করে নিয়ে আসবে।  
 
দেশের সাধারণ জনগণ তাদের পরিচিত মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য ওয়েবসাইটে (www.ekattorerkotha.com) প্রদান করতে পারবেন।
 
গ্রামীণফোনের এ উদ্যোগের প্রশংসা করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, আমরাও এধরনের একটি উদ্যাগ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছি। ভিডিও লাইব্রেরি তৈরির কাজটি শুরু করায় গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ। আমি আশা করবো যে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তুলে ধরতে গ্রামীণফোনের মতো এগিয়ে আসবে।  
 
মুক্তিযোদ্ধা ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা পালনকারী শিল্পী, চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের যুক্ত করার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
 
গ্রামীণফোন জানায়, ‘একাত্তরের কথা’ শীর্ষক এ উদ্যোগটি আনুষ্ঠানিকভাবে ৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে চলবে আগামী তিন মাস। ২০১৭ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের দিন গ্রামীণফোন আনুষ্ঠানিকভাবে ভিডিও সংগ্রহশালাটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হাতে তুলে দেবে। ভিডিওটি সবার জন্য অনলাইনে উম্মুক্ত থাকবে।  
 
গ্রামীণফোনের সিইও বলেন, দীর্ঘ সময় পার হয়ে যাওয়ায় আমরা অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের চিরতরে হারিয়ে ফেলেছি, আর তাই এখনই সময়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধের একেবারে সত্য গল্পগুলো সংরক্ষণ করার। উদ্যোগটির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের গল্পগুলো চিরকাল থেকে যাবে এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে প্রেরণার সর্বোৎকৃষ্ট উৎস হয়ে থাকবে যারা পরবর্তীতে দেশকে নেতৃত্ব দেবে। জাতিগতভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতিদের কাছে চির কৃতজ্ঞ, আর তাদের গল্পগুলো অজানা থেকে গেলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, এমনকি বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।  
 
গ্রামীণফোন বলছে, বর্তমান প্রজন্মই হচ্ছে শেষ প্রজন্ম, যারা কিনা সরাসরি মুক্তিযোদ্ধাদের মুখ থেকে মুক্তিযুদ্ধের কথা শুনতে ও জানতে পারবে, কিন্তু এই উদ্যোগ চিরকালের জন্য সংরক্ষিত করে রাখবে কিভাবে আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে একটি রাষ্ট্রকে স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত করতে মুক্তিযোদ্ধারা ঝাপিয়ে পড়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে। ডিজিটাল আকারে তৈরি হতে যাওয়া গল্পগুলো অনলাইনে বিশ্বের সব স্বাধীনচেতা মানুষ সহজেই দেখতে পারবে।  
 
বাংলাদেশ সময়: ২১০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৬
এমআইএইচ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।