ঢাকা: রাত আড়াইটা। বিমানবন্দর রেলস্টেশনে এক বছরের তাহসিন আর ৫ বছরের প্রীতিকে নিয়ে সাইফুর রহমান-শারমিন দম্পতির অপেক্ষা।
বেসরকারি একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা পরিবার নিয়ে পারাবাত ট্রেনে সিলেট থেকে রাত ১০টায় ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে আটকা পড়লেন। লালমনি এক্সপ্রেসে রংপুর যাবেন। শুক্রবার লালমনি এক্সপ্রেস বন্ধ জানা ছিল না।
সাইফুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ভুলের মাশুল দিচ্ছি। তেমন গরম কাপড় আনা হয়নি। কনকনে শীত, সঙ্গে বাতাসও রয়েছে, ছোট বাচ্চাটা বেশ কষ্ট পাচ্ছে। সকাল ৯টায় ট্রেন, কীভাবে এতাটা সময় পার করবো বুঝতে পারছি না।
লিমন-আবদুল্লাহ দুই বন্ধু পাবনা থেকে কাজের এসেছেন খোঁজে ঢাকায়। বিমানবন্দর স্টেশনে এসে জানলেন যে বন্ধুর কাছে এসেছেন তিনি বাড়ি চলে গেছেন। বাধ্য হয়ে স্টেশনে রাত যাপন করবেন। কিন্তু শীতে প্রায় কাবু দুই বন্ধু।
লিমন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা দু’জনে ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্র। কাজের খোঁজে ঢাকায় এসেছি। সকালে কাজ খুঁজব, কিন্তু রাতে কোথায় থাকবো। চাদর ছাড়া শীতের বেশি কিছু আনা হয়নি। আজ বাতাসের সঙ্গে বেশ শীত পড়ছে।
বিমানবন্দর এলাকায় প্রতি রাতে রিকশা চালান শফিউল। প্রতিদিন বাতাস থাকলে কনকনে শীত তেমন থাকে না। আজকে বাতাসের সঙ্গে শীতের তীব্রতাও বেশ। বাধ্য হয়ে কাগজ আর খড়কুটা দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে নিলেন।
শফিউল বলেন, কিছুক্ষণ রিকশা চালানোর পর শীতে হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে আসছে। বেশিক্ষণ থাকা যাবে না। আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম করে নিচ্ছি। সামান্য বাতাসে এ অবস্থা। এবার পুরো শীতে কি অবস্থা হবে আল্লাহ জানে।
বিমানবন্দর রেলস্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, হঠাৎ করে শীত বেড়ে যাওয়ায় ট্রেনের জন্য স্টেশনে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা বেশ কষ্ট পাচ্ছেন। এছাড়া কষ্ট পাচ্ছেন অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষ।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৬
আরইউ/আরএ