ঢাকা: ঢাকায় শুরু হয়েছে অভিবাসন বিষয়ক বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলন গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (জিএফএমডি) সম্মেলন। এ সম্মেলনে মাধ্যমে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের অন্যরকম এক ব্র্যান্ডিং হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশ্বের প্রায় ১৩০টি দেশের সাতশ’র বেশি প্রতিনিধি এ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। এসেছেন ২০টিরও বেশি দেশের মন্ত্রীরা। পাশাপাশি জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থাও সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে।
অভিবাসন ও উন্নয়ন নিয়ে জাতিসংঘের উদ্যোগে এক দশক আগে জিএফএমডি সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। গত বছর তুরস্কের কাছ থেকে বাংলাদেশ ডিএফএমডি’র চেয়ারম্যান পদ লাভ করে। চেয়ারম্যান হিসেবেই বাংলাদেশ এবারের সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
তবে গত ১ জুলাই গুলশান হামলার পরে বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে থাকে বিভিন্ন দেশ। আর তাই এত বড় আয়োজনে বিরাট সংখ্যক বিদেশি অতিথি আসা নিয়ে কিছুটা শঙ্কা থেকেই গিয়েছিল। তবে সেসব শঙ্কা কাটিয়ে গত কয়েকদিন ধরে বিদেশিদের আনাগোণায় ভারী হয়ে উঠেছে ঢাকা। অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দে ঘুরে বেড়াতেও দেখো গেছে তাদের।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) কাতার প্রতিনিধি দলের সদস্য ফয়সাল আলী আল-শোয়াইবি বাংলানিউজকে বলেন, কাতার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন শ্রম ও সামাজিক বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ড. ইসা সাদ আল জুফালি আল নুআইমি।
প্রথমবারের এই সফরে বাংলাদেশে এসে ভীষণ ভালো লেগেছে তার। এখানকার আবাহাওয়া ও খাবার ভীষণ উপভোগ করছেন তিনি। শিগগিরিই আবারও দ্বিপাক্ষিক সফরের আগ্রহও দেখিয়েছেন নুআইমি।
এ বিষয়ে আলাপ করতে গিয়ে মালয়েশিয়া থেকে আসা সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধি শ্রেষ্ঠা বিজয়া রায় বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশকে কোনোভাবেই অনিরাপদ দেশ মনে করিনি। এজন্যই এখানে এসেছি। গত আটদিন ধরে আমি কাজের ফাঁকে ফাঁকে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে গিয়েছি। শপিং করেছি। তাতে কোনভাবেই নিরাপত্তা শঙ্কায় ভুগিনি।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সম্মেলনের প্রথমদিনের সরকারি পর্যায়ের আলোচনা শেষে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, শুরু থেকে ১২০টি দেশের প্রতিনিধিরা আসবে বলে ধরে নেওয়া হয়। তবে এখন দেখা যাচ্ছে ১২৫টিরও বেশি দেশ থেকে প্রতিনিধিরা এসেছেন। এ সংখ্যা ১৩০ এর কাছাকাছিও হতে পারে।
প্রতিনিধিদের সংখ্যা বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম পাঁচশ জন হবে, তবে গত রাতে সে সংখ্যা সাতশ জন পেরিয়েছে। আমরা ভাবছি সাতশ’র উপরে যাবে।
এর আগে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত অষ্টম জিএফএমডি সম্মেলনে এত মানুষ ছিল না বলেও উল্লেখ করেন পররাষ্ট্র সচিব। আকাশ পথে যোগোযেগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি হাব না হওয়া সত্ত্বেও বিরাট সংখ্যার প্রতিনিধি ঢাকায় আসা সত্যি গর্বের বিষয় বলে জানান তিনি।
সচিব বলেন, এখানে অংশ নেওয়া মানুষগুলো বাংলাদেশকে মনে রাখবেন। জিএফএমডি নামটি এলেই তারা ঢাকার কথা স্মরণ করবেন।
এ সম্মেলন করার ইচ্ছে প্রকাশ করার পর থেকে অনেক বাধা ও নেতিবাচক কথা বাংলাদেশকে সহ্য করতে হয়েছে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এখানে এসে যারাই আমাদের আয়োজন দেখছেন তারা বলছেন, এ তো অন্য রকম বাংলাদেশ!
আয়োজনের সাফল্য ধরে আগামী বছর বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সংসদীয় ইউনিয়ন (আইপিইউ) সম্মেলন আয়োজনের চিন্তাও করছে বলেও জানান পররাষ্ট্র সচিব।
** কাতারের শ্রম বাজারে সুবাতাসের আভাস
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৬
জেপি/এমজেএফ