ঢাকা: নারীবান্ধব ও পরিচ্ছন্ন পাবলিক টয়লেট গড়ে উঠেছে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে। পথচারী ও জনসাধারণের সুবিধার্থে উন্নতমানের সেবা দিতে নির্মিত হয়েছে আধুনিক পাবলিক টয়লেটে।
এসব টয়লেটে নারী-পুরুষদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা রয়েছে। পৃথক লকার ও হাত ধোয়ার জন্য পৃথক স্থানসহ লিক্যুইড হ্যান্ডওয়াশ, বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা রয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রতিবন্ধীদের জন্য রয়েছে উন্নতমানের ব্যবস্থা। তাদের ব্যবহারের জন্য রয়েছে আধুনিক কমোড।
ভেতরের ফ্লোর রয়েছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। টয়লেটের প্রতিটি কক্ষে রয়েছে সাবান, হ্যান্ডওয়াশ ও উন্নত মানের কমোড।
সার্বক্ষণিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে রয়েছেন পরিচ্ছন্নকর্মী। পাঁচ টাকার রশিদ সংগ্রহে মিলবে টয়রেটের সোব।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের তেজগাঁও হাজী মরণ আলী রোড পাবলিক টয়লেটে সরেজমিনে এমনটাই দেখা গেছে।
বেসরকারি সংস্থা এইচ এম কনসাস ও ওয়াটার এইড এর সহযোগিতায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এই আধুনিক টয়লেট নির্মাণ করেছে। চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল এই টয়লেট চালু করা হয়। প্রায় ৮ মাস ধরে নিরলসভাবে সেবা দিয়ে আসেছে এটি।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে দুই শিফটে ৫ জন পরিচ্ছন্ন কর্মীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সাধারণ পথচারীদের ব্যবহারের পরও পাবলিক টয়লেটটি রয়েছে ঝকঝকে।
পাবলিক টয়লেটের সেবার মান আগামীতে এ রকম থাকবে, না কি অতীতের মতো নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন হয়ে যাবে, সাধারণ মানুষের মনে এখন এমনই প্রশ্ন।
এ বিষয়ে টয়লেট ব্যবহারকারী মো. আজিজুল হক বাংলানিউজকে বলেন, ইতোপূর্বে নগরীতে যেসব পাবলিক টয়লেট ছিল সেগুলোতে যেতেই ইচ্ছে করতো না। এখন সময় পরিবর্তন হয়েছে। আগামীতে দেশ আরও উন্নত হবে। পাবলিক টয়লেট উন্নত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়েছে। তবে এই ধারাটি বজায় থাকবে তো?
টয়লেটের স্যান্ডেল দরজার সামনে: পাবলিক টয়লেট ব্যবহারের জন্য দরজার সামনেই রয়েছে কয়েক জোড়া স্যান্ডেল। আধুনিক টয়লেট ব্যবহার করতে আসা পথচারীরা নিজেদের স্যান্ডেল বা জুতা রেখে দরজায় রাখা স্যান্ডেল পড়ে ভেতরে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে পারিছন্নকর্মী সুফিয়া বেগম বাংলানিউজকে বলেন, টয়লেট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাটাই আমাদের কাজ। পরিষ্কার থাকলে ব্যবহারকারীরাও নোংরা করবে না। এতে ব্যবহারকারীদের মধ্যেও সচেতনতা আসবে।
স্লিপ নিয়ে নিন: স্লিপ নিয়ে টয়লেট ব্যবহার করার নির্দেশনা রয়েছে। নির্ধারিত মূল্য দেওয়া আছে পাঁচ টাকা।
লকার সুবিধা: ‘লকার সুবিধার জন্য ৩০ টাকা জমা দিন। টয়লেট থেকে বের হওয়ার সময় লকারের চাবি বুঝিয়ে দিয়ে ২৫ টাকা ফেরত নিন। ’
টয়লেট ব্যবহাকারীদের লকারে ব্যাগ রাখার সুবিধা রয়েছে। তবে এই লকার ব্যবহারের জন্য আলাদা কোনো টাকা দিতে হবে না।
সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত: পাবলিক টয়লেটে প্রবেশ পথে রয়েছে দুটি ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য সবসময় মনিটরিং করা হয়ে থাকে।
টয়লেটের ভেতরে কিছু নির্দেশনা: টয়লেটগুলোর ভেতরে দেওয়া আছে বেশ কিছু নির্দেশনা। একজন ব্যবহারকারী যাতে এই নির্দেশনাগুলো দেখেই সহজে টয়লেট ব্যবহার করতে পারেন। ব্যবহারের সময় পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে ভাবেন।
টয়লেটের ভেতরে দেয়ালে ৩টি করে নির্দেশনা রয়েছে। সাদা-লাল রঙের এই বোর্ডে লেখা রয়েছে ‘পানি ঢালুন’, ‘স্যানিটারি ন্যাপকিন টিস্যু পেঁচিয়ে ঝুড়িতে ফেলুন’, ‘হাত ধুয়ে নিন। ’
টয়লেটের ভেতরে দেয়ালে রয়েছে, ৪টি সচেতনতামূলক নির্দেশনা। হাত ধুয়েছেন কি?, থুথু ফেলবেন না, মেঝে শুকনা ও পরিচ্ছন্ন রাখুন ও ধুমপান নিষেধ।
অপরদিকে, বেসিনের উপরে লেখা রয়েছে বিশুদ্ধ পানি পান করুন। নিরাপদ খাবার পানি, বোতল না থাকলে কাউন্টার থেকে গ্লাস কিনে নিন, এখানে হাত-মুখ ধোয়া নিষেধ।
পরিচ্ছন্নকর্মী সুফিয়া বেগম বলেন, এখানে যে নির্দেশনাগুলো লেখা আছে, যদি ব্যবহারকারীরা মেনে চলেন তবে তারা নিজেদের বাসা-বাড়ির টয়লেট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৬
এসজেএ/জিপি/বিএস