ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ইটভাটায় পুড়ছে স্কোয়াশ চাষিদের স্বপ্ন (ভিডিওসহ)

মো. রাজীব সরকার, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৬
ইটভাটায় পুড়ছে স্কোয়াশ চাষিদের স্বপ্ন (ভিডিওসহ) ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

গাজীপুরে স্কোয়াশ চাষ করে লাভবান হওয়ায় স্বপ্ন দেখলেও ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় চাষিরা এখন হতাশ। পুড়ছে চাষির স্বপ্ন মরে যাচ্ছে স্কোয়াশ।

গাজীপুর: গাজীপুরে স্কোয়াশ চাষ করে লাভবান হওয়ায় স্বপ্ন দেখলেও ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় চাষিরা এখন হতাশ। পুড়ছে চাষির স্বপ্ন মরে যাচ্ছে স্কোয়াশ।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১১নং ওয়ার্ডের কাতলাখালী এলাকায় চাষ করা হয়েছে বিদেশি সবজি স্কোয়াশ। চাষি মো. আজহার মিয়া স্কোয়াশ চাষ করে প্রথমে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় এখন হতাশ হয়ে পড়েছেন। ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় মরে যেতে শুরু করেছে গাছ ও স্কোয়াশ। পুড়ে যাচ্ছে চাষি মো. আজহার মিয়ার স্বপ্ন। গত অক্টোবর মাসের মাঝামাঝিতে নয়শ’ স্কোয়াশ গাছের বীজ লাগানো হয়। এক মাস পরে ফলন ধরতে শুরু করে। প্রথম ফলন দেখে সফলতার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন চাষি মো. আহজার মিয়া। এর কিছু দিন পর ওই এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে উঠা প্রায় অর্ধশতাধিক ইটভাটা চালু করা হয়।

এরপর থেকে মো. আহজার মিয়ার স্কোয়াশ গাছ মরতে বসেছে। হলুদ হয়ে যাচ্ছে গাছের পাতা। মরে যাচ্ছে স্কোয়াশ, পুড়ছে চাষির স্বপ্ন।

অনেকেই নতুন এই সবজির নাম জানেন না। কেউ এটাকে বলছে বড় শসা, মিষ্টি কুমড়া, খিরাই, তরমুজ ও বাঙ্গি। আসলে অনেকের কাছে এর নাম অজানা। স্কোয়াশ লম্বা ১৬ ইঞ্চির বেশি হয়ে থাকে। গাছও তেমন একটা বড় হয় না। স্কোয়াশ গাছের পাতা মিষ্টি কুমড়ার পাতার মতো দেখতে। অল্প দিনে সবজি খাওয়া অথবা বাজারে তোলার উপযোগী হয় থাকে। প্রতি কেজি স্কোয়াশ ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি করা যায়। স্কোয়াশ চাষে সার ও শ্রমিক ছাড়া তেমন কোনো খরচ নেই।  

চাষি মো. আজহার উদ্দিন মিয়া বাংলানিউজকে জানান, স্কোয়াশ হলো শীতকালীন সবজি। অক্টোবরের মাঝামাঝিতে নয়শ’ স্কোয়াশের বীজ লাগানো হয়। প্রথমে গাছে প্রচুর ফলন দেখা দেয়। ফলনও অনেক ভাল হয়। ইটভাটা চালুর হওয়ার কিছুদিন পর লক্ষ করে দেখি অনেক স্কোয়াশ মরে যাচ্ছে। গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। বাজারে স্কোয়াশের চাহিদা অনেক ভাল। অনেকেই ক্ষেত থেকে স্কোয়াশ কিনে নিয়ে যায়।

বাজারে খুচরা ও পাইকারদের কাছে এ সবজিটির চাহিদা ব্যাপক। ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় সঙ্গে বের হওয়া কালি গাছের উপরে পড়ে থাকে। ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। ইটভাটা না থাকলে স্কোয়াশ চাষ করে লাভবান হয়া সম্ভব ছিলো। এতে খরচও অনেক কম। এখন ইটভাটার কারণে লোকসান ছাড়া অন্য কিছু চিন্তা করা যায় না।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. রুবেল বাংলানিউজকে জানান, আমাদের এলাকায় স্কোয়াশ চাষ হয়েছে এই প্রথমবার। স্কোয়াশ গাছ দেখতে অনেক সুন্দর। সারিবন্ধভাবে গাছ লাগানো হয়। গাছে ফলন ভালো হলে আরোও ভাল দেখা যায়।   

এ ব্যাপারে গাজীপুর জেলা কৃষি কর্মকর্তা (উপ-পরিচালক) মাসুদ রেজা বাংলানিউজকে জানান, গাজীপুরে কোথাও স্কোয়াশ চাষ হয় না। তবে বিচ্ছিন্নভাবে কেউ চাষ করতে পারে আমার জানা নেই। স্কোয়াশ রান্না করে ও সালাদ হিসেবে খাওয়া যায়। দেখতে শসার মতো। ইটভাটা শুধু স্কোয়াশ না যেকোনো ফসলের জন্য ক্ষতিকর। ইটভাটার কারণে স্কোয়াশ গাছ মরে যেতে পারে। এতে কৃষক মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৬
আরএস/এএটি/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।