ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রাজধানীতে নবনির্মিত পাবলিক টয়লেট প্রতিবন্ধীদের জন্য ফ্রি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৬
রাজধানীতে নবনির্মিত পাবলিক টয়লেট প্রতিবন্ধীদের জন্য ফ্রি রাজধানীতে নবনির্মিত পাবলিক টয়লেট/ ছবি- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর

রাজধানীতে নবনির্মিত পাবলিক টয়লেটগুলোতে প্রতিবন্ধীদের জন্য ফ্রি ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া গরিব-অসহায় মানুষরাও বিনা পয়সায় টয়লেটগুলো ব্যবহার করতে পারবেন।

ঢাকা: রাজধানীতে নবনির্মিত পাবলিক টয়লেটগুলোতে প্রতিবন্ধীদের জন্য ফ্রি ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া গরিব-অসহায় মানুষরাও বিনা পয়সায় টয়লেটগুলো ব্যবহার করতে পারবেন।

গত শনিবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর শ্যামলী মাঠে নবনির্মিত একটি পাবলিক টয়লেট ঘুরে এমনটিই দেখা যায়।

সরেজমিনে ওই পাবলিক টয়লেটে দেখা যায়, টয়লেটের উটকো গন্ধে নাজেহাল হওয়ার দৃশ্য পাল্টেছে। নবনির্মিত পাবলিক টয়লেটে এসেছে আভিজাত্যের ছোঁয়া। নারী ও পুরুষদের জন্য আদালাভাবে চারটি শৌচাগার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিবন্ধী নারী, শিশু ও পুরুষদের জন্য রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকছে শৌচাগার।

দেখা যায়, শৌচাগারে হাত ধোঁয়ার জন্য বেসিন ও হ্যান্ডওয়াশের ব্যবস্থা রয়েছে। রাখা হয়েছে আয়না ও হাত মোছার জন্য তোয়ালে। পরিচ্ছন্নকর্মীরা নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নের কাজ করছেন। মাঝে মাঝে সুগন্ধি স্প্রেও ব্যবহার করা হচ্ছে। টয়লেটের জন্য রয়েছে জুতা। শৌচাগারে প্রবেশের মুখেই রয়েছে বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা।  

রয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা। এক টাকা দিয়ে ওয়ান টাইম গ্লাস সংগ্রহ করে খাওয়া যাবে সে পানি। আর ১০ টাকা খরচ করে করা যাবে গোসল।

শৌচাগারে দায়িত্বরত বিলকিস বানু বাংলানিউজকে বলেন, গত ১০ নভেম্বর এটি উদ্বোধন করা হয়েছে। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সবকিছুই নিয়ম মাফিক চলছে।

তিনি বলেন, পাবলিক টয়লেটের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরেছে। মানুষ মনে করে এটি তার বাসার টয়লেটের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। প্রতিদিন ১১শ’ থেকে ১২শ’ মানুষ এটি ব্যবহার করছে।  

‘৫ টাকার চেক দিয়ে পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করার নজির বোধহয় এটিই প্রথম। আবার প্রতিবন্ধী ও গরিব মানুষকে ফ্রি টয়লেট ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে। ’ 
 
শ্যামলীর বাসিন্দা আব্দুল আলীম বাংলানিউজকে বলেন, কাজের প্রয়োজনে  প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় চলাচল করেন। দু’একটি এনজিও’র সহায়তায় কিছু মোবাইল টয়লেট নজরে আসে। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই নগণ্য। তাই পাবলিক টয়লেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

টয়লেটটি চালু হওয়ার পর থেকে আমি নিজেও এটি ব্যবহার করছি। খুবই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। তবে এ টয়লেটে আগামীতে যেনো এরকম পরিবেশ বজায় থাকে।  

শ্যামলী মাঠের এ টয়লেটে কর্মরত আব্দুল রাজ্জাক, শুভ, ফরিদ ও রীনা জানান, ৬ জন কর্মী টয়লেটটি দেখভালের কাজ করেন।  আমরা শুধু চাকরি করতে চাই না, এ কাজের মধ্য দিয়ে মানুষের সেবা করতে চাই।

নগরীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ঢাকা ওয়াসা এবং ওয়াটার এইড যৌথভাবে রাজধানীতে বেশ কয়েকটি আধুনিক টয়লেট নির্মাণ করছে।  

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) আরও ১২টি আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হবে। এছাড়া রাজধানীর তেজগাঁওয়ে দু'টি আধুনিক পাবলিক টয়লেট উদ্বোধন করা হয়েছে।

শুধু উত্তর সিটি করপোরেশন নয় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনেও ১০০টি আধুনিক টয়লেট নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে সায়েদাবাদ, পল্টন এলাকায় ৮টি টয়লেট সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।  

২০১৭ সালের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১০০টি উন্নতমানের আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। স্থান ও মানুষের ব্যবহারের কথা চিন্তা করেই এসব টয়লেটের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। ৫০ লাখ টাকা থেকে শুরু করে কোটি টাকা পর্যন্ত খরচা করে এসব টয়লেট নির্মাণ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৬
আরএটি/জেডএস  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।