ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বাসাবা‌ড়ির বর্জ্যে দূ‌ষিত হচ্ছে গুলশান-বা‌রিধারা লেক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৬
বাসাবা‌ড়ির বর্জ্যে দূ‌ষিত হচ্ছে গুলশান-বা‌রিধারা লেক ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শহুরে মানুষগুলো একটু মুক্ত বাতাস আর প‌রিচ্ছন্ন প‌রিবেশ দেখতে সাধারণত ঘুরতে আসেন লেক পাড়ে। লেকের পাড়ে গেলে মন ভালো হয়ে যাওয়ার কথা, কিন্তু সেই লেক য‌দি হয় দূ‌ষিত! তাহলে মন ভালো হওয়া তো দূরের কথা, লেকের এ দূ‌ষিত বাতাসে শ‌রীরও খারাপ হতে পারে যে কারো।

ঢাকা: শহুরে মানুষগুলো একটু মুক্ত বাতাস আর প‌রিচ্ছন্ন প‌রিবেশ দেখতে সাধারণত ঘুরতে আসেন লেক পাড়ে। লেকের পাড়ে গেলে মন ভালো হয়ে যাওয়ার কথা, কিন্তু সেই লেক য‌দি হয় দূ‌ষিত! তাহলে মন ভালো হওয়া তো দূরের কথা, লেকের এ দূ‌ষিত বাতাসে শ‌রীরও খারাপ হতে পারে যে কারো।

শ‌নিবার (১০ ডিসেম্বর) সরেজ‌মিন ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর অ‌ভিজাত এলাকা খ্যাত গুলশান-বা‌রিধারা লেক। লেকের আশপাশের বা‌ড়ির ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে লেকের পা‌নিতে। ‌এতে নষ্ট হচ্ছে পানি, দূষিত হচ্ছে প‌রিবেশ। কোথাও কোথাও ময়লার স্তূপে প‌রিণত হয়েছে লেকের পাড়।  

লেকের পাড়ে কেউবা আবার চাষ করছে লাউ, শিম, সব‌জি। লেকে মাছ চাষে ব্যবহার করা হচ্ছে সার, কীটনাশক। তাই অনেক জায়গায় লেকের পা‌নিতে বুদবুদ করে ফেনা উঠতে দেখা যায়।

এ‌দিকে, বাসাবা‌ড়ির বর্জ্যের সঙ্গে প‌লি‌থিন, কাঠ, বাঁশের টুকরা সব‌কিছু রাখার জায়গা যেন লেকপাড়! এতে নষ্ট হচ্ছে লেকের সৌন্দর্য। এসব দেখার কেউ নেই।

স্থানীয় এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. কবির হোসেন (৪৫) বাংলা‌নিউজকে বলেন, 'দিনে দিনে লেকের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, মানুষ পানিতে ময়লা আবর্জনা ফেলে সুন্দর পরিবেশ নষ্ট করেছে। যদি সঠিক তত্ত্বাবধান না করা হয়, তাহলে এলাকার পরিবেশসহ ধ্বংস হবে লেকের পাড়।

গুলশান (আমেরিকা অ্যাম্বাসির পেছনে) লেকের গার্ড, রফিকুল ইসলাম (৪০) বাংলা‌নিউজকে বলেন, এলাকার মানুষ আবর্জনা বেশি করে। এক পাশে ময়লা ফেলতে বাধা দিলে অন্য পাশে ফেলে। এ ময়লা আবর্জনার গন্ধে প‌রিবেশ দূ‌ষিত হয়, আমরা সব সময় প‌রিষ্কার রাখার চেষ্টা করি, সপ্তাহের ৩-৪ বার পরিছন্নকর্মীদের নিয়ে আমাদের অং‌শে যতটুকু ময়লা পড়ে তা প‌রিষ্কার ক‌রি। ‌লেকের পা‌নিতে শিল্প বর্জ্য, মে‌ডিকেল বর্জ্য পুরো লেক এলাকার প‌রিবেশ দূ‌ষিত করেছে। ‌কোথাও কোথাও আবার বিকেলে ফুসকা, চটপ‌টির দোকানে বি‌ক্রি করা অব‌শিষ্ট খাবার ও বর্জ্য সরাস‌রি লেকের পা‌নিতে ফেলতে দেখা গেছে।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর চেয়ারম্যান এম বজলুল ক‌রিম চৌধুরী  বাংলা‌নিউজকে বলেন, লেক উন্নয়নে আমাদের একটা প্রজেক্ট চালু আছে। ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। আশা কর‌ছি বর্ষা মৌসুমের আগেই কিছু কাজ দৃশ্যমান হবে। কিছু জায়গা অ‌ধিগ্রহণ করতে হবে। এছাড়া ওয়া‌সাকে বলে‌ছি, বাসাবা‌ড়ির স্যুয়ারেজ লাইনের বর্জ্য বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে। ওয়াসার সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা ২০১৮ সালের মধ্যে ওয়াকওয়ে সহ লেকের উন্নয়ন কাজ শেষ করবো।

অথচ এই লেক উন্নয়নে ঢাকা ওয়াসা থেকে ১০০ কো‌টি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। সেই প্রকল্পের প‌রিচালক আখতারুজ্জামান বাংলা‌নিউজকে বলেন, আমরা ২০১৪ সালে কাজ শেষ করে‌ছি। এখন রাজউক দেখবে আমরা লেকের অথ‌রি‌টি না, তাই নোংরা হলো কি প‌রিষ্কার থাকলো, আমাদের দেখার বিষয় না।

রাজউক (তদানীং ডিআইটি) ১৯৬১ সালে ‘গুলশান মডেল টাউন প্রকল্প’ গ্রহণ করে। একই সময়ে ‘বনানী-বারিধারা প্রকল্প’ গ্রহণ করে। এ প্রকল্প দুটিতে দুটি লেক রয়েছে। একটি হচ্ছে বনানী মডেল টাউন ও গুলশান মডেল টাউনের মধ্যে, অপরটি গুলশান মডেল টাউন ও বারিধারা মডেল টাউনের মধ্যে এবং লেক দুটির আয়তন ২০০ একর। এর ৬০ শতাংশ হচ্ছে গুলশান-বারিধারা লেক এবং ৪০শতাংশ হচ্ছে গুলশান-বনানী লেক।

বাংলা‌দেশ সময়: ০৯৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৬

এসএম/আরআইএস/পিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।