জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে: জন্ম থেকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত সুরাইয়া, সৌদি আরবে কাজে
গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার জসিম মোল্লা, ছোটবেলায় টাইফয়েডে আক্রান্ত শরিফও পক্ষঘাতগ্রস্তদের পুর্নবাসন কেন্দ্রে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আজ তারা এসেছেন জাতীয় স্মৃতিসৌধে, বিজয়ের ৪৫ বছরে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।
সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয়। সেই দলে শামিল হয়েছেন সাভারের পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুর্নবাসন কেন্দ্রের (সিআরপি) চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরাও।
শুক্রবার ( ১৬ ডিসেম্বর) সকালে গায়ে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের জার্সি পরে এক লাঠিতে ভর করে এসেছেন শরিফ হোসেন। ছোটবেলায় টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে এক পা পক্ষাঘাতগ্রস্ত তার। বলেন, অনেক দিন আসার ইচ্ছা ছিল আজ পূরণ হলো।
“দেশের প্রতি একটা টান আছে না, এ জন্য এসেছি”, জানালেন শরিফ। সাভারের স্থানীয় একটি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র শরিফ জানান, ছোটবেলায় থেকে তার শখ ক্রিকেটার হবেন। কিন্তু শারীরিক কারণে পেরে উঠতে না পারলেও এখন তিনি সিআরপির ডিজ্যাবল টিমের ব্যাটসম্যান।
এই ডিজ্যাবিলিটি দলে একদিন বড় খেলোয়াড় হওয়ার আশা ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের শরিফের।
জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বড় হয়েছেন ময়মনসিংহের সদর থানার সুরাইয়া, সিআরপিতে গত ছয় মাস ধরে কম্পিউটার ট্রেনিং নিচ্ছেন ডিগ্রি প্রথমবর্ষের এই ছাত্রী।
হুইল চেয়ারে করে তাকে নিয়ে এসেছেন সিআরপির আরেক ছাত্র আরিফ। সুরাইয়া জানান, অনেক আগ্রহ ছিল, স্মৃতিসৌধে ফুল দেয়ার। আর আজ সবার সঙ্গে এসে অনেক ভাল লাগছে।
একই মত ব্যক্ত করলেন দোহার মুকসুদপুরের জসিম মোল্লা তিনি সৌদি আরবে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে গত তিন মাস ধরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বড় ভাই মাসুম মোল্লা হুইল চেয়ারে করে নিয়ে এসেছেন তাকে।
জসিম মোল্লা বললেন, শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে এসে মনেই হচ্ছে না আমি অসুস্থ। এতো মানুষের সাথে স্মৃতিসৌধে আসার সুযোগ হয়তো হতোই না, এজন্য সিআরপি কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান জসিম।
জসিমদের মতো অন্তত ২০ জন হুইল চেয়ারে এবং আরও বেশ কয়েকজন লাঠিতে ভর করে
এসেছে বিজয় দিবসে লাখো শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৬
এমআইএইচ/আরআই