ঢাকা: মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেন সিফাত। বুধবার (২১ ডিসেম্বর) জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন করিয়েছেন কোনো ধরণের ঝামেলা ছাড়াই।
রাজধানীর শেরে বাংলানগরের এনআইডি অফিসের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় স্বাভাবিক নিয়মেই তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করেছেন।
সিফাত বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার বড় আপুর কার্ডে বয়স বেশি দেখানো হয়েছিল। এইচএসসি সনদে এক সাল এবং এনআইডি কার্ডে আরেক সাল লেখা। এটা ঠিক করাতে গিয়ে দালালের খপ্পরে পড়েছিলাম। তবে এবার আমারও একই ভুল। মায়ের নাম হবে রেখা বেগম, কিন্তু লেখা আছে শুধু রেখা। এ ভুল সংশোধন করলাম দালাল ছাড়াই। এখন এখানে কোনো দালাল নেই’।
জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ঘিরে গড়ে উঠেছিল শক্তিশালী দালালচক্র। আর এ চক্র এনআইডি ঘিরে চালিয়ে যেতো রমরমা বাণিজ্য। ফলে দালালদের হাতে পড়ে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়তেন সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষেরা।
দালাল চক্রের সদস্যরা অর্থের বিনিময়ে এনআইডি কার্ড সংশোধন, হারানো কার্ড নতুন করে উত্তোলন ও নতুন এনআইডি কার্ড করে দেওয়ার কাজগুলো করতেন।
একে কেন্দ্র করে আগারগাঁওয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভবনের সামনের বস্তিতে দালাল চক্রের আঁখড়াও গড়ে উঠেছিল।
তবে সম্প্রতি সেই চিত্র পাল্টেছে। নেই এনআইডি’র সামনে নেই কোনো দালালের দৌরাত্ম্য।
দালাল তাড়াতে বস্তি উচ্ছেদ করা হয়েছে। অফিসের সামনেও লোহা ও কংক্রিটের নির্মিত খুঁটির সাহায্যে দেওয়া হয়েছে কাঁটাতারের শক্ত বেড়া। ফলে দালালদের ‘আশ্রয়স্থল’ ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।
বুধবারও কয়েকজন ভ্রাম্যমাণ দালালকে হাতে-নাতে ধরেছে শেরে বাংলানগর থানার পুলিশ। থানার এসআই জহির উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘এনআইডি অফিসের সামনে দালাল দেখলেই ধরে নিয়ে যাচ্ছি। এনআইডি কার্ড সংশোধন করতে আসা মানুষ যেন দালালের খপ্পরে না পড়েন, সে ব্যবস্থাই করা হচ্ছে’।
এনআইডি উইংয়ের পরিচালক (অপারেশন) আবদুল বাতেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘দালালদের উচ্ছেদেই আমরা বস্তি উচ্ছেদ করেছি। এখানে দালালদের আঁখড়া ছিলো। এখন এনআইডি’র সামনে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছি। শুধুমাত্র আমাদের কাজের সুবিধার জন্যই কাটাতারের বেড়া দিয়েছি। এনআইডি অফিসের সামনে এখন কেউ নেই। দুই একজন থাকলেও পুলিশকে এলার্ট করা হয়েছে’।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর