গাইবান্ধা: মাহবুর রহমান (১৩)। চলতি বছরে অনুষ্ঠিতব্য জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা সবেমাত্র শেষ করেছে।
এতেই থেমে নেই মাহবুর। এর আগে, জেডিসি পরীক্ষার ফরম ফিলাপের টাকার জন্যও সে রিকশা-ভ্যান চালিয়েছে। আর সে টাকা দিয়েই ফরম ফিলাপ করে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এখন ফলাফলের অপেক্ষায় মাহবুর। তবে, আবারও তাকে রিকশা-ভ্যান চালাতে হচ্ছে নতুন বছরে নবম শ্রেণিতে ভর্তির টাকার জন্য।
মাহবুর রহমানের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়নের বজরা কঞ্চিবাড়ি গ্রামে। সে ওই গ্রামের সবজি বিক্রেতা মকবুল হোসেনের ছেলে। কঞ্চিবাড়ি মজিদা দাখিল মাদ্রাসা থেকে জেডিসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে মাহবুর।
মাহবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘তার বাবা একজন মৌসুমী সবজি বিক্রেতা। বাড়িতে মা আর মাহিন (১০) নামে এক ছোট ভাই আছে। অভাবের সংসার তাদের। বাবার ভিটেমাটি ছাড়া আর কিছুই নেই। এজন্য তার পড়ালেখার খরচ পরিবার থেকে দিতে পারে না। আর সে কারণেই মাহবুর বাধ্য হয়েছে রিকশা-ভ্যান চালাতে।
মাহবুর আরও বলে, ‘এখন শীতকাল। গায়ে গরম পোশাক না পরলে ঠাণ্ডা লাগে। তাছাড়া নবম শ্রেণিতে ভর্তির টাকাসহ আরও অনেক খরচ আছে। এখন স্কুল বন্ধ, অবসরে আছি। তাই প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রিকশা-ভ্যান চালিয়ে টাকা আয় করছি। এতে করে গরম পোশাকও কিনতে পারবো, নবম শ্রেণিতে ভর্তির টাকাও যোগাতে পারবো। ’
ছোট বেলা থেকেই পড়ালেখার প্রতি বেশ আগ্রহ মাহবুরের। আর সে কারণেই কষ্টের মাঝে পড়ালেখার আনন্দটা সে নিতে পেরেছে। রিকশা-ভ্যান চালিয়ে দিন শেষে ২শ’ থেকে ২৫০ টাকা আয় করছে সে। এ টাকার অনেকটা অংশ পরিবারকে দিচ্ছে, বাকিটা স্কুলে ভর্তির জন্য রেখে দিচ্ছে। শত কষ্টের মাঝেও পড়ালেখা চালিয়ে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে চায় মাহবুর।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৬
পিসি/