ঢাকা: বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী-এমপিদের বেতন বাড়লে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন কেন বাড়বে না? মন্ত্রী-এমপিদের বেতন বাড়লে শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর এই প্রশ্নটি আসতে পারে। তবে, কতটা বাড়বে তা আলোচনার বিষয়।
শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি ।
জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের ১৫তম দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
রাশেদ খান মেনন বলেন, শুরুতে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন ছিল ৫৭০ টাকা। তা থেকে এখন বেতন অনেক বেড়েছে। অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমে এ অর্জন হয়েছে। তবে, দ্রব্যমূল্য যে বেড়েছে, সেদিকটাও দেখতে হবে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী-এমপিদের বেতন বেড়েছে। কাজেই গার্মেন্ট শ্রমিকরা প্রশ্ন করতেই পারেন, কেন তাদের বেতন বাড়ছে না? অবশ্যই এ প্রশ্ন তারা করতে পারেন। তবে, বেতন কতো বাড়বে তা আলোচনার বিষয়। অনেকে বলেন, শ্রমিকেরা বাড়াবাড়ি করছেন। কিন্তু কারখানা বন্ধ করে শ্রমিকদের কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়ার জন্য বাড়াবাড়ি করেছেন কারখানা মালিকরা। শ্রমিকরা মুচলেকা দেননি, দেবেনও না।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের একটা ধারা আছে, তা বুঝতে হবে। নিয়ম মেনে, আইন মেনে আন্দোলন করলে দাবি অবশ্যই আদায় হবে। এজন্য ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করতে হবে।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান বলেন, ১৯৮৪ সালে বেতন ছিল ৫৭০ টাকা। ধাপে ধাপে তা এখন অনেক বেড়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতার আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে কারখানা মালিকদের সঙ্গে দর কষাকষি করেছেন। আশাকরি, ২০১৮ সালের প্রথম দিকেই ওয়েজ বোর্ড হবে। শ্রমিক ছাড়া গার্মেন্টস চলবে না। তেমনি মালিক না থাকলে গার্মেন্টস হবে না। তবে অবশ্যই শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা দিতে হবে।
তিনি বলেন, আইন ও বিধি-বিধানের বাইরে গিয়ে কোনো আন্দোলন করলে তা সফল হয় না। তাই বেতন বাড়ানোর দাবিতেও আন্দোলন, আইন ও বিধি-বিধানের মধ্যে থেকেই করতে হবে। আন্দোলনের নামে ভাঙচুর করা যাবে না।
ফ্রান্সের বৃহৎ শ্রমিক সংগঠন সিজিটি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য ফেবিয়েন ক্রু বলেন, শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর দায়িত্ব অনেক। কিন্তু তারা তাদের দায়িত্বগুলো পালন করছে না। শ্রমিকের শ্রমের মূল্যের চেয়ে উৎপাদিত পণ্যের মূল্য অনেক বেশি। কিন্তু তার সবটুকুই নিচ্ছে বহুজাতিক কোম্পানি। তাই আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। আপনাদের সংগ্রাম, আমাদেরও সংগ্রাম।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আমিরুল হক আমিরের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক নাইমুল হাসান জুয়েল, সদস্য ড. ওয়াজেদুল ইসলাম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৬
ইইউডি/জিপি/পিসি