ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দিনে একজনেরই খেজুর রস সংগ্রহ ৮০ লিটার!

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০১৭
দিনে একজনেরই খেজুর রস সংগ্রহ ৮০ লিটার! রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছি। ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ফেনী: প্রকৃতিতে এখন শীতের দাপট, কদর খেজুর গাছের। মিষ্টি দুপুর পেরিয়ে বিকেল গড়ালেই গাছে গাছে শুরু হয় গাছিদের ব্যস্ততা। 

গাছের ওপরের ঠিক বুকের দিকটার নির্দিষ্ট স্থানে কাটা অংশ পরিষ্কার করে আবার সামান্য কেটে বিকেলেই বসানো হয় রসের পাত্র। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হলে সেই পাত্র ভরে যায় রসে।

রস নিয়ে সে পাত্র খালি করে আবার বসানো হয়। মধ্যরাতে আবার চলে রস সংগ্রহ।  

এভাবেই এখন খেজুর রস সংহে ব্যস্ত দিন-রাত যাচ্ছে ফেনীর সোনাগাজীর গাছিদের। রাজ্যের সব ব্যস্ততা যেন এখন শুধু তাদেরই। বরাবরের মতো এবারও শীত মৌসুমের পুরোটা সময় এভাবেই ব্যস্ত থাকতে হবে গাছিদের।

উপকূলীয় উপজেলা সোনাগাজীর চরচান্দিয়া, মুহুরী প্রজেক্ট, সাহেবের ঘাট, সোনাপুর, বাখরিয়া, মহেশচর, চর খোন্দকার, চর এলাহি, চর লামছি, চর শাহবিভারী, চর দরবেশসহ বিভিন্ন এলাকার বিস্তৃত জনপদ ঘুরে দেখা যায়, খেজুরের গাছে গাছে এখন রস নেওয়ার জন্য কলস বা মাটির হাড়ি বসানো। কোথাও কোথাও রস সংগ্রহেও দেখা যায় গাছিদের।  এভাবে গাছের উপরিভাগের একটি অংশ কেটে বসানো হয় রস সংগ্রহের পাত্র।  ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমএমনই পড়ন্ত দুপুরে মুহুরী প্রজেক্ট এলাকায় কথা হয় খেজুর রস সংগ্রহে মগ্ন গাছি আবুল খায়ের রিপনের সঙ্গে। তিনি জানান, এবারের মৌসুমে ১২০টি খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ  করছেন তিনি।  

এই গাছগুলো থেকে প্রতিদিন তার প্রায় ৮০ কিলোলিটার রস আসে। শীত যখন আরও বাড়বে তখন রিপনের টার্গেট হবে দৈনিক ২’শ লিটার সংগ্রহ।  

প্রতি লিটার রস খুচরায় বিক্রি হয় ৪০ টাকায়। আর পাইকারি বিক্রি হয় ৩৫ টাকায়।  

রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছি।  ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমরিপন জানান, গেল মৌসুমে রস বিক্রি করে তিনি ৭০ হাজার টাকা আয় করেছেন। এবার তার মুনাফার টার্গেট লাখ টাকা।  

প্রতি ৯ লিটার খেজুর রসে ১ লিটার রাব হয়। আর তা বিক্রি হয় আড়াইশ’ থেকে তিনশ’ টাকায়।  

তবে এ রসগুলো দিয়ে ফেনীতে গুড় তৈরি হয় না। কারণ হিসেবে গাছিরা জানান, সমুদ্রোপকূলবর্তী সোনাগাজী লোনা পানির এলাকা হওয়ায় এ আবহাওয়ায় গুড় তৈরি করা যায় না। গুড় তৈরি করার জন্য যশোর থেকে কারিগর আনা হলেও তারাও পারেন না। তাই রস বিক্রিতেই লাভ হয় তাদের।  

এলাকার গাছিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পুরো উপজেলার প্রায় তিন হাজার গাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ করা হচ্ছে। এছাড়া জেলার ছাগলনাইয়া, পরশুরাম, ফুলগাজী ও দাগনভূঞাঁর গ্রামগুলোতে খেজুর রস সংগ্রহ চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।