শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতি আয়োজিত ইউনিটি ইন ডাইভারসিটি ইন ইন্ডিয়া শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আগামী ২৬ জানুয়ারি ভারতের ৬৮তম প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গন্ধুর নেতৃত্বে আমরা এক লাইনে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। মুক্তিযুদ্ধে আমরা ভারত সরকার ও সেখানকার জনগণের কাছ থেকে যে সহযোগিতা পেয়েছি, তা ভোলার নয়। সেই সহযোগিতার জন্য আমরা ভারতের জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বাংলাদেশের মানুষ কোনো দিন ভারতকে ভুলবে না। আমরা একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাবো।
আলোচনা সভায়ু ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকা, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, আশ্রয়, খাদ্যসহ আসামের দেরাদুনে প্রশিক্ষণ, ভারতের সেনাবাহিনীর লে. জে. উবানের কথা স্মরণ করেন তোফায়েল আহমেদ।
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ভারত শুধু আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র নয়, ভারতের কাছে অনেক ক্ষেত্রে আমরা কৃতজ্ঞ। বঙ্গবন্ধু ভারতের কাছ থেকে ১শ’ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে রাষ্ট্রের কার্যক্রম শুরু করেছিলেন।
আলোচনা সভায় তোফায়েল আহমেদ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্পর্কও তুলে ধরেন। এ সময় তিনি ভারতে পাট রফতানির ক্ষেত্রে এন্টি ডাম্পিং প্রথা তুলে দিতে ভারত সরকারের প্রতি বিশেষ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ভারতে আমরা সাড়ে ১২ ভাগ শুল্কে পাট রফতানি করছি। এন্টি ডাম্পিংয়ের কারণে আমাদের পাট রফতানি বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা অনুরোধ জানাই, এই এন্টি ডাম্পিং তুলে দেওয়ার।
তিনি প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে ভারতের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, অনেক জাতি,ধর্ম, বর্ণ, সংস্কৃতির মানুষ ভারতে রয়েছে। সবাই ঐক্যবদ্ধ আছে। যখন কোনো যুদ্ধ হয়, সমস্যা দেখা দেয়। তখন কোনো ধর্ম, বর্ণ, জাতি থাকে না, সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে যান।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, বঙ্গবন্ধু ও ইন্দিরা গান্ধী ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বের শক্তিশালী বীজ বপণ করেছিলেন। শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী সেই সম্পর্ক উঁচু মাত্রায় নিয়ে গেছেন। এই সম্পর্ক চিরদিন অটুট থাকবে। দুই দেশ গণতান্ত্রিক দেশ। দুই দেশের উন্নয়ন নীতিমালা একই। দুই দেশই এখন বিশ্বে অন্যতম বিকাশমান অর্থনীতির দেশ।
এ সময় তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চারণ করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান-সন্তুতিদের ভারতে পড়াশোনা করার জন্য ১৫ কোটি টাকা বৃত্তি দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন হাই কমিশনার।
এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন- বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতির সভাপতি এমিরেটাস প্রফেসর ড. একে আজাদ চৌধুরী।
সেখানে আরও বক্তব্য রাখেন- ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. এসএম মাকসুদ কামাল, একাত্তর টেলিভিশনের সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক বাবু।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৭
এসকে/পিসি