এতিমখানা ভেঙে দিলে রাস্তায় ঘুরে বেড়াবে কোমলমতি শিশুরা। তাই সরকারের কাছে আবেদন ওরা যেনো টোকাই না হয়।
তখন ঘড়ির কাঁটায় সকাল ১০টা। শনিবার (২১ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর কালশি মোড়ে রায়তুল মঈন জামে মসজিদ ও ক্বিরাতুল কুরআন শামসুল উলুম মাদ্রারাসা-এতিমখানায় দাঁড়িয়ে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন ঈমাম আবুল কালাম।
দুই সপ্তাহ আগে কালশি মোড়ের বিহারী পল্লীতে চলে উত্তর সিটি করপোরেশনের উচ্ছেদ অভিযান। অভিযানে বিহারী পল্লীতে অবৈধবাবে বসবাসরত বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করলেও রয়েছে গেছে এতিমখানাটি।
দুই তলা বিশিষ্ট এই এতিমখানাটির নিচের অংশে রয়েছে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা ও দোতলায় এতিম শিশুদের থাকা ও পড়ার ব্যবস্থা। ঈমাম আবুল কালামের ধারণা এতিমখানাটি হয়তো ভেঙে ফেলা হবে। কারণ অবৈধভাবেই গড়ে উঠেছে এতিমখানাটি।
সরেজমিনে শনিবার (২২ জানুয়ারি) সকাল গিয়ে দেখা যায়, রাজধানীর কালশি মোড়ের মূল সড়কের পাশেই গড়ে ওঠেছে রায়তুল মঈন জামে মসজিদ ও ক্বিরাতুল কুরআন শামসুল উলুম মাদ্রাসা-এতিমখানা।
এই এতিমখানাটি দুই তলা বিশিষ্ট। নিচে রয়েছে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা ও উপরের রয়েছে থাকা এবং পাঠদানের ব্যবস্থা।
সরেজমিনে আরও দেখা মেলে, এতিমখানাটির দোতলায় দু’টি রুমে পাঠদান করা হচ্ছে কোমলমতি শিশুদের। দু’টি রুমের ভেতরে প্রায় ৫০ জনের মতো শিশু মাদুরে বসে ক্লাস করছে।
মসজিদের ঈমাম আবুল কালাম বাংলানিউজকে বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে মসজিদটি ভেঙে ফেলা হবে। এতিম শিশুরা কোথায় যাবে? ওদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই।
তিনি জানান, কালশি রোডে চলাচলরত গাড়ি থেকে এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা তুলে চলছে এই এতিমদের থাকা খাওয়া ব্যবস্থা। এটি ভেঙে দিলে এতিম এই শিশুদের রাস্তায় থাকতে হবে।
ওরা হয়তো টোকাই হবে। সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে আবুল কালাম বলেন, ওরা যেনো টোকাই না হয়।
রায়তুল মঈন জামে মসজিদ ও ক্বিরাতুল কুরআন শামসুল উলুম মাদ্রাসা সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মাল বাংলানিউজকে বলেন, মাদ্রাসা-এতিমখানাটি যেহেতু সরকারি জায়গায়। ভেঙে দিলে তেমন কিছুই করার থাকবে না। তবে সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, প্রতিটি এলাকায় সরকারিভাবে মসজিদ থাকে এবং প্রয়োজনও রয়েছে। সে ক্ষেত্রে এতিম শিশুদের কথা বিবেচনায় নেওয়ার অনুরোধ করছি। এছাড়া ভেঙে ফেললে আমাদের স্থানান্তরের জন্য যেনো সময় দেওয়া হয়।
এ বিষয় ঢাকা উত্তর সিসি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এতিমখানাটি যেহেতু সরকারি জায়গায়, সেক্ষেত্রে ভেঙে ফেলাই স্বাভাবিক।
এতিমখানার লোকজন জানান, ২০০৭ সালে এতিমখানাটি স্থাপন করা হয়। প্রায় ২শ’ জন ছাত্র রয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ৮০ জনের ছাত্র এতিমখানাটিতে থাকে। এছাড়া বাকি ছাত্র বহিরাগত। এখানে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৭
এএটি/