ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

তুলার গোডাউনে আগুনে সম্বলহীন শতাধিক পরিবার

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৭
তুলার গোডাউনে আগুনে সম্বলহীন শতাধিক পরিবার তুলার গোডাউনে আগুনে সম্বলহীন শতাধিক পরিবার / ছবি: দিপু মালাকার

টঙ্গী মিলগেট থেকে: গাজীপুরের টঙ্গীর মিলগেট নামা বাজারের তুলার গোডাউনে লাগা আগুনে গোডাউনসহ বস্তির শতাধিক ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে বস্তির প্রায় শতাধিক পরিবার সম্বলহীন হয়ে গেছে।

ঘরের সঙ্গে পুড়ে গেছে তাদের কপালও। কিছুই বাঁচাতে পারেনি ওই বস্তি বাসিরা।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডে নামা বাজারের প্রায় ৩৫ থেকে ৪০টি তুলার গোডাউন সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।

শনিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে টঙ্গীর মিলগেটে তুলার গোডাউনের এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

সর্বস্ব হারানো গার্মেন্টস কর্মী রুবিনা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, ‘জীবনে যা কামাইলাম সব আগুনে পুড়ে গেছে। এখন কি খামু আর কই যামু। কিছুই রাখতে পারলাম না, টাকা পয়সা ও কানের দুল ছিলো, তাও শেষ। কোনো রকম নিজের জীবনটা বাঁচাতে পেরেছি। ’

সকালে রুবিনা কাজে যান। মোবাইল ফোনে আগুন লাগার খবর পেয়ে ছুটে আসেন তিনি। কিন্তু বাসায় পৌঁছানোর আগেই আগুনে তার ঘরের সব পুড়ে গেছে। তুলার গোডাউনে আগুনে সম্বলহীন শতাধিক পরিবার

শুধু রুবিনাই নয় এই বস্তির বাসিন্দারা জানায়, তুলার গোডাউন থেকেই আগুনের সূত্রপাত। আগুন মুহূর্তের মধ্যেই বস্তিতে ছড়িয়ে পড়ে।    

এদিকে, মেসার্স খান এন্টারপ্রাইজের (তুলার গোডাউন) মালিক মাহতাব খান বাংলানিউজকে বলেন, যখন আগুন লাগে তখন আমি আমার গোডাউনে বসা ছিলাম। হঠাৎ কয়েকজন নারীর চিৎকার শুনে বাইরে গিয়ে দেখি ধোঁয়া, আর মুহূর্তের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আমরা কিছুই সরানোর সুযোগ পাইনি।

তিনি বলেন, আমার প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখন আমার কিছুই নেই। বাসায় বাজার করার টাকাটাও নেই।

আগুনের বিষয়ে ফায়াস সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন ও মেন্টেনেন্স) মেজর শাকিল নেওয়াজ বাংলানিউজকে বলেন, ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট কাজ করছে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

তিনি বলেন, পুরো এলাকায় টিন, কাঠ ও বাঁশ দিয়ে ঘরবাড়ি তৈরি করা। তাই আগুন খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।

এদিকে, এ ঘটনায় দিদারুল আলম ও মো. এরশাদ নামে বিভাগীয় দু’জন ফায়ার কর্মী আহত হন। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিলগেটের নামা বাজার এলাকার বস্তিটি কয়েকজন অংশীদার মিলে তৈরি করেছেন। এদের মধ্যে জামিলের ৩০টি ঘর, ওয়াসিমের ৫০টি ঘর, মোহসিনের ৪০টি ঘর, ইয়াসিনের ৭০টি ঘর এবং আনোয়া হোসেন এলুর একশো ১০টি ঘর নিয়ে বস্তিতে মোট তিনশোটি ঘর আছে। তবে তুলার গোডাউনে লাগা আগুনের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আনোয়ার হোসেন এলুর একশো১০টি ঘর। তুলার গোডাউনে আগুনে সম্বলহীন শতাধিক পরিবার

বস্তিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, একটি পুকুরের মধ্যে কিছু পিলারের ওপর বাঁশের মাচা তৈরি করে তার ওপর নির্মাণ করা হয়েছে এসব ঘরগুলো। বাঁশের পাটাতনের ওপর আবার দেওয়া হয়েছে আরসিসি (সিমেন্টের) ঢালাই। আর ঘরগুলো টিনের তৈরি। আগুনে ওই ঘরগুলো সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।  
    
বস্তির মালিক আনোয়ার হোসেন এলু বাংলানিউজকে জানান, আগুনের সূত্রপাত তুলার গোডাউন থেকে। গোডাউন থেকে আগুন মুহূর্তের মধ্যে আমাদের বস্তিতে ছড়িয়ে পড়ে। এখানে বসবাসকারী অনেকেই চাকরি করেন। যারা ছিলো তারা সবাই নিজেদের জীবন বাঁচাতে দৌঁড়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৭
এসজেএ/এমএইচকে/এজি/এএটি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।