ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘আগুন আর চোরে আমাগোরে নিঃস্ব করছে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৭
‘আগুন আর চোরে আমাগোরে নিঃস্ব করছে’ টঙ্গীর মিল গেট এলাকায় আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসী / ছবি: দীপু মালাকার

ঢাকা: ‘আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে অনেকের মাথা গোঁজার ঠাঁই। আবার আগুন থেকে ঘর রক্ষা পেলেও টিভি, মোবাইল, আসবাবসহ অনেকের মূল্যবান মালামাল চুরি হয়ে গেছে। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা’। 

এমনই অভিযোগ গাজীপুরের টঙ্গীর মিল গেট এলাকায় আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীদের।

শনিবার (২১ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মিল গেট এলাকার নামা বাজারের তুলার গোডাউনে আগুন লেগে তা ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে।

আগুনে মুহূর্তের মধ্যে পুড়ে যায় ৩০ থেকে ৪০টি তুলার গোডাউন। লেলিহান শিখা থেকে রক্ষা পায়নি পাশের বস্তিটিও। বস্তিতে থাকা ৩০০ ঘরের মধ্যে পুড়ে গেছে শতাধিক ঘর। আর আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ভেঙে ফেলা হয়েছে আরো প্রায় ৫০টি ঘর।

এদিকে আগুনে সম্বল হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্তনাদে ওই এলাকার আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। খেটে খাওয়া এ মানুষগুলো এখন কোথায় আশ্রয় নেবেন, তা ভেবে কপালে জমছে চিন্তার কালো মেঘ।

টঙ্গীর মিল গেট এলাকায় আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসী

সরেজমিনে দেখা যায়, আগুনে সব হারিয়ে আর্তনাদ করছেন শাহিদা বেগম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাগো উহানে ১২ ডা ঘর আছিলো, সব শেষ’।

আগুনের হাত থেকে ঘর রক্ষা পেলেও মালামাল বাঁচাতে পারেন নি তুলা গোডাউনে কাজ করা রিনা আক্তার। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘যে যেমনে পারছে সব নিয়া গেছে। মোবাইল, টাকা পয়সা সব। সর্বনাশ হইয়া গেছে’।

টঙ্গীর মিল গেট এলাকায় আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসী

একই অভিযোগ খোরশেদা বেগমেরও। তিনি বলেন, ‘অফিস থিকা আইসা দেখি বাসায় মোবাইল, টিভি কিছুই নাই। পরনের কাপড় ছাড়া এখন আমাগো কিছুই নাই। ঘর পুড়ে নাই কিন্তু ঘরের মধ্যে কিছুই নাই’।

আগুনে ঘর পুরে গেছে ইব্রাহিম মিয়ার। তিনি বলেন, আমার ঘর আগুনে নিয়া গেছে। কিন্তু আমাদের অনেকের ঘর আছে ঠিকই, ‍মালপত্র নাই।  

তিনি অভিযোগ করে বলেন, অনেকেই এখানে আগুন নিভাইতে আইছে। তাই বইলা এই অসহায় মানুষগুলার জিনিস চুরি করবো? ওরা কি মানুষ? বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন ইব্রাহিম।

টঙ্গীর মিল গেট এলাকায় আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসী

আগুন থেকে গোডাউন বাঁচাতে গিয়ে আহত হন হাবিব। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি একবারে শেষ। আমার গোডাউনে ১০ লাখ টাকার মতো মাল ছিল। এখন কিছুই নাই, সব পুইড়া শেষ। আমার মতো অনেকেই আহত হইছে। কারো পা পুড়ছে, কারো কাটছে, কারো ফাটছে যোগ করেন তিনি।  

মিলগেট এলাকায় তুলার গোডাউনের আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট একঘণ্টার বেশি সময় লাগে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০১৭
এমএইচকে/আরআর/এসএনএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।