ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পুলিশকে জনবান্ধব হতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৭
পুলিশকে জনবান্ধব হতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: ঔপনিবেশিক আমলের ধ্যান-ধারণার পরিবর্তে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে একাত্ম হয়ে পুলিশকে আরও জনবান্ধব হতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
 
 

তিনি বলেন, শান্তিময় ও নিরাপদ সমাজ গঠনের লক্ষ্যে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমকে আরো জোরদার করতে হবে। প্রতিটি পুলিশ সদস্যকে অসহায় ও বিপন্ন মানুষের প্রতি অকুণ্ঠ চিত্তে সেবার হাত প্রসারিত করতে হবে।


 
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে পুলিশ সপ্তাহ- ২০১৭ এর কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ, পদক বিতরণ এবং পুলিশ-মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বায়নের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের কর্মক্ষেত্র ও কর্মব্যাপ্তি প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেবল চুরি-ডাকাতি, হত্যা-রাহাজানি বন্ধ নয়, পুলিশের কাজের ক্ষেত্র আজ বিস্তৃত হয়েছে-সাইবার ক্রাইম, মানি লন্ডারিং, মাদক পাচার এবং পণ্য চোরাচালান ও নারী-শিশু পাচার প্রতিরোধে, এমনকি জলজ ও বনজ সম্পদ এবং পরিবেশ সংরক্ষণেও।
 
পুলিশের আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, পরিবর্তনশীল বিশ্বে প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তা ও অপরাধের নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুলিশের আধুনিকায়নের বিকল্প নেই।
 
পুলিশের উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের কৌশলগত পরিকল্পনা, অবকাঠামো এবং মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করে কর্মক্ষেত্রে পুলিশের সার্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, স্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেশের উন্নয়নের পূর্বশর্ত। আইন-শৃঙ্খলা খাতে বরাদ্দকৃত অর্থকে ব্যয় হিসেবে ধরি না। এটিকে জাতির কল্যাণে বিনিয়োগ মনে করি। সরকারের গৃহীত উন্নয়ন কার্যক্রমের বিস্তৃতি দেশের প্রধান আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাংলাদেশ পুলিশেও সমভাবে বিস্তৃত হয়েছে।
 
মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের অবদানের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২৫ মার্চ ১৯৭১ সালের কালরাতে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স এর নির্ভীক, দেশপ্রেমিক পুলিশ সদস্যরা।
 
পুলিশ বাহিনীর প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের শান্তি, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার প্রতীক বাংলাদেশ পুলিশ। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা প্রদান, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার রক্ষার দায়িত্বে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য।
 
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সচেতন থাকার পাশাপাশি প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ একটি আত্মমর্যাদাশীল এবং আত্মনির্ভরশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু দেশি-বিদেশি একটি চক্র বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রাকে বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। গণতান্ত্রিক পথে মানুষের মন জয় করতে ব্যর্থ হয়ে এরা সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে।
 
পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে ৭৩৯টি ক্যাডার পদসহ ৩২ হাজার ৩১টি পদ সৃষ্টি, পুলিশে আরও ৫০ হাজার জনবল নিয়োগের সিদ্ধান্ত, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট গঠন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ গঠন, বিশেষায়িত পুলিশ ইউনিট যেমন-পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ-পুলিশ এবং ২টি স্পেশাল সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রটেকশন ব্যাটালিয়ন গঠন, এসআই/সার্জেন্ট পদকে ৩য় শ্রেণী থেকে ২য় শ্রেণীতে এবং ইন্সপেক্টর পদকে ২য় শ্রেণী থেকে ১ম শ্রেণী (নন-ক্যাডার) পদে উন্নীত করা, আইজিপি’র পদকে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় উন্নীত করা এবং পুলিশ বিভাগের ২টি গ্রেড-২ পদকে গ্রেড-১ পদে উন্নীত করা, এপিবিএন বিশেষায়িত ট্রেনিং সেন্টারসহ সারাদেশে ৩০টি ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন, ঝুঁকি ভাতা প্রবর্তন, আবাসন, চিকিৎসা সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ, পুলিশ হেল্প লাইন নামক অ্যাপ চালু, সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেন্টার এবং সাইবার ক্রাইম ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন, পুলিশে নারীদের নিয়োগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ ও পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
 
**পুলিশের বীরত্ব-অবদান জাতি চিরদিন স্মরণ করবে

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৭
এমইউএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।