মিরপুরবাসীও এর ব্যতিক্রম নন। একে তো যানজট, তার ওপর রয়েছে ধূলিদূষণ।
সরেজমিনে মিরপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রধান সড়কগুলো থেকে যে ছোট রাস্তাগুলো বিভিন্ন মহল্লার দিকে গেছে, তার প্রায় সবগুলোই খানা-খন্দে ভরা। দেখে মনে হয়, রাস্তাগুলো পাকা করার পর আর কখনো কার্পেটিং হয়নি। আবার কোথাও চলছে ওয়াসার কাজ, কোথাও গ্যাসের লাইন, কোথাও বা চলছে স্যুয়ারেজ লাইনের কাজ।
এদিকে কোথাও কোথাও ড্রেন থেকে ময়লা তুলে দিনের পর দিন উন্মুক্ত করে রাখা হয়েছে। ফলে একদিকে যেমন রাস্তা সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে দুর্গন্ধের কারণে পরিবেশও দূষিত হচ্ছে।
এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের অভিযোগ, নগর কর্তৃপক্ষ বড় বড় কাজে নজর দিলেও ছোট রাস্তা বা গলিগুলোর দিকে যেন কোনো নজরই দিচ্ছে না। ফলে প্রতিনিয়ত ভোগন্তির শিকার হচ্ছেন তারা।
মিরপুরের পীরেরবাগ, মনিপুর, কাফরুলসহ অন্যান্য এলাকাবাসী বলছেন, মহল্লার ভেতরে রিকশা বেশি, প্রাইভেটকারও কম নয়। খানা-খন্দের কারণে এসব প্রাইভেটকার আটকে গেলে প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে অফিস সময়ে ধকলের শেষ থাকে না। আবার রিকশায় যে ঝাঁকির সৃষ্টি হয়, সেটিও খুব কষ্টকর। বিশেষ করে বয়স্কদের জন্য এ ঝাঁকি সহ্য করাই দায় হয়ে পড়ে।
তালতলা বাজার থেকে পশ্চিম কাফরুলমুখী রাস্তায় দাঁড়িয়ে রিকশা ঠিক করছিলেন রোকসানা বেগম। মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে যাবেন মনিপুর। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘এ রাস্তার চেয়ে মাটির রাস্তাও ভালো। বাইরের জ্যাম ঠেলে, বাসে কষ্ট করে এখানে নামলে আরেক সমস্যা হয়। তা হলো- রিকশার যে ঝাঁকি হয়, তা ভীষণ অসহ্য লাগে। বর্ষার দিনে সমস্যা আরো বাড়ে। কারণ খানা-খন্দ, কোথাও কোথাও গর্তে পানি জমে যায়। তখন প্রাইভেটকারগুলো ধীরে চলে আর জ্যাম লেগে যায়। বেশ কয়ক বছর ধরেই রাস্তাটা এমন। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই’।
উত্তর পীরেরবাগের একটি গলিতে দেখা গেল, এক বৃদ্ধ হোঁচট খেয়ে পড়ে যেতে যেতে কোনোমতো সামলে নিলেন। আকবর আলী নামের এ সিনিয়র সিটিজেন বলেন, ‘কী বলবো আর- সড়কে শান্তি নাই, গলিতেও অশান্তি। রাস্তাগুলো এমন, ঠিকমতো হেঁটেও যাওয়া যায় না’।
বারেক মোল্লার মোড় থেকে কাজীপাড়ামুখী রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে শামসুল আলম বলেন, ‘এখন শীতের সময় যাচ্ছে, রাস্তা ঠিক করার কোনো নাম নেই। কিন্তু বর্ষা এলেই দেখবেন, খোঁড়াখুঁড়ি বেড়ে যাবে। এতে ভোগান্তি আরো বাড়বে’।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৭
ইইউডি/এএসআর