মোট নয়জন সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক প্রশ্ন করেন প্রধানমন্ত্রীকে। তারা হলেন- দৈনিক সমকালের সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সম্পাদক নাইমুল ইসলাম খান, একুশে টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, একাত্তর টেলিভিশনের মোজাম্মেল বাবু, ডিবিসি নিউজের মঞ্জুরুল ইসলাম, এটিএন বাংলার জ ই মামুন, মাছরাঙা টেলিভিশনের বিশেষ সংবাদদাতা ইবতেশাম নাসিম মৌ এবং দেশ টিভির সাংবাদিক জয় যাদব।
মিয়ানমারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি কমিটি করা হবে। কমিটির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদেরকে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে’।
খালেদা জিয়ার ক্ষমা করে দেওয়া- এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ক্ষমা করে দিয়েছেন! কিসের ক্ষমা করে দিয়েছেন, সেটি হলো প্রশ্ন। ২১ আগস্ট আমাকে হত্যার জন্য গ্রেনেড মেরেছিলেন, আমি বেঁচে গিয়েছি, সে কথায় বলছিলেন? ক্ষমা করেছেন, না চাচ্ছেন, সেটি স্পষ্ট নয়’।
তিনি বলেন, ‘বরং তারই উচিত- দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়া’।
সৌদি আরবে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের অর্থপাচার সর্ম্পকিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সৌদিতে যে বিশাল শপিংমল, সম্পদ সবকিছু পাওয়া গেছে। এটাতো আমরা কিছু করিনি। বিদেশ থেকেই সংবাদটা এসেছে। জনগণ এর বিচার করবে, মানিলন্ডারিং, দুর্নীতি- সবকিছুর বিচার হবে’।
আগাম নির্বাচনের নাকচ করে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পার্লামেন্টরি সিস্টেমে যেকোনো সময় নির্বাচন হয়। এমন কোনো দৈন্যদশায় পড়িনি যে, এক্ষুণি নির্বাচন দিতে হবে’।
আদালতের রায়ে দণ্ডিত তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আজ হোক কাল হোক একদিন না একদিন তাকে আসতেই হবে এবং বিচারের কাঠগড়ায় তাঁকে দাঁড়াতে হবে।
জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে আমেরিকার ঘোষণা প্রসঙ্গে ফিলিস্তিনের অধিকার আদায়ে মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
বিএনপি ও খালেদার সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনাও নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কার সঙ্গে আলোচনা? ২০১৪ সালে ফোন দিলাম, আলোচনার কথা বলেছি। তারপর যে ঝাড়িটা খেলাম, আমার আর ওরকম অপমানিত হওয়ার ইচ্ছে নেই’।
‘যাদের মধ্যে এতোটুকু ভদ্রতা জ্ঞান নেই, তাদের সঙ্গে কথা বলার কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না’।
বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে সরকারের উদ্যোগ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের কি বরণডালা পাঠাতে হবে? এখানে মাল্টিপার্টি ইলেকশন সিস্টেম। কোন দল নির্বাচন করবে, কোন দল করবে না- সব দলের সিদ্ধান্ত। তারা যদি নির্বাচন আসতে চায়, আসবে, না আসতে চাইলে না আসবে। এটি তাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত। এখানে তো আমাদের কোনো কিছু বলার দরকার নেই’।
‘তবে গতবার যে ভুল করেছে, এবার সে ভুল করবে না। এবার নাকে খত দিয়ে নির্বাচনে আসবে’।
বিএনপি প্রধানকে সর্তক করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘এতিমের টাকা মেরে খাওয়া, সৌদি আরবে এতো সম্পদ, এগুলোরতো বিচার হবে। বিচারের হাত থেকে বাঁচার জন্য জ্বালাও-পোড়াও-ভাংচুর শুরু করলে এবার কিন্তু জনগণ ছাড়বে না। জনগণই প্রতিরোধ গড়ে তুলবে’।
জামায়াত নিষিদ্ধ করার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর উত্তর ছিল, ‘সেটাতো আদালতে এখনো রয়ে গেছে। এটি কোর্টের রায়ের ওপর নির্ভর করে’।
বিভিন্ন সেক্টরের পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তিতে উন্নতির কথা বলতে গিয়ে রোবট সোফিয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সজীব ওয়াজেদ জয়ের মেয়ের নামের সঙ্গে মিল থাকা রোবট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার নাতনি’।
সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা হবে না
বাংলাদেশ সময়: ২২৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৭
এমইউএম/এএসআর