তবে মুক্তিযুদ্ধের ৪৬ বছর পর বগুড়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অবশেষে খননের কাজ শুরু হয়েছে ওই মৃত্যুকূপের।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯ টার দিকে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী সেই খনন কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. মকবুল হোসেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডর রুহুল আমীন, মুক্তিযোদ্ধা ডা. আরশাদ সায়ীদ, প্রকৌশলী মো. সাহাবুদ্দীন সৈকত, সাংবাদিক মাহমুদুল আলম নয়ন,আব্দুস সালাম বাবুসহ মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা ও নানা শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। এসডিও বাংলোটি বধ্যভূমি হিসেবে চিহ্নিত হলে এটিই হবে জেলার সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি।
মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্রের অষ্টম খণ্ডে দাশিন জামাদার নামে তৎকালীন রেলওয়ে কর্মচারীর দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলা হয়েছে, কমপক্ষে ৫ শ’ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে ফেলা হয়েছে কূপে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর এমন বর্বরোচিত ঘটনা এত বছর আলোচনার বাইরে থাকলেও গত মার্চ মাসে তা নজরে আসে প্রশাসনের। স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্রের অষ্টম খণ্ডে পাওয়া যায় এই বর্বর হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রেলওয়ের কর্মচারী দাশিন জামাদারের বরাতে তাতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় রেলওয়ের এসডিও বাংলোটি ছিলো পাকিস্তানিদের টর্চার সেল। বর্বর নিপীড়ন চালিয়ে সেই সেলে প্রতিদিন খুন করা হতো মুক্তিকামী মানুষকে। এরপর তাদের মরদেহ ফেলা হতো বাংলোর ভেতরে থাকা ওই কূপের ভেতর।
সম্প্রতি কয়েকজন তরুণ গবেষক এই সূত্রের ভিত্তিতে চিহ্নিত করেন স্থানটি। পরে জেলাপ্রশাসন যাচাই-বাছাই শেষে বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সেখানে আনুষ্ঠানিক খনন শুরু করে।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী সাংবাদিকদের জানান, খনন শেষে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রমাণ মিললে এটি জেলার সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি হিসেবে সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৭
এমবিএইচ/আরআই