ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ছাত্র হিসেবে এসেছি, সপ্তাহের মধ্যে শিখে যাবো

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১৮
ছাত্র হিসেবে এসেছি, সপ্তাহের মধ্যে শিখে যাবো সচিবালয়ে প্রথমবারের মতো আসেন মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ছাত্র মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ছাত্র হিসেবে এই মন্ত্রণালয়ে এসেছি। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে বিভাগের সবকিছু শিখে যাবো।

টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়ে বৃহস্পতিবার (০৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে প্রথমবারের মতো আসেন আইসিটি ব্যক্তিত্ব মোস্তাফা জব্বার।

বেলা আড়াইটার দিকে সচিবালয়ে এসে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে কথা বলেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমি প্র্যাকটিক্যালি আজকে এসেছি, এই মন্ত্রণালয়ের ছাত্র হিসেবে। আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ড এবং এর যে বিষয়গুলো আছে সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানা। এতো দিন পর্যন্ত যে তথ্যগুলো জানতাম, সেটা হচ্ছে বই, পত্র-পত্রিকা অথবা আমাদের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যখন মিটিংয়ে বসতাম তখন যেসব তথ্য পেতাম সেগুলোর খোঁজ-খবর নিয়ে দেখতাম। কিন্তু এখন আমার ছাত্র হওয়ার সময়। এই ছাত্র হওয়ার সময়টাতে এখন আমার জানার বিষয়, বোঝার বিষয়।
 
নতুন বছরের শুরুতে আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে মোস্তাফা জব্বারসহ তিনজনকে মন্ত্রিসভায় যুক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সেই প্রসঙ্গ টেনে মোস্তাফা জব্বার বলেন, যেহেতু মাত্র একবছর সময়কাল, আমি এখন গুনতেছি। সেহেতু শেখার জন্য আবার বেশি সময় দেওয়া যাবে না। সপ্তাহ খানেকের ভেতরে আমি বোধ হয় শিখে যাবো। আমি ছাত্র হিসেবে খুব একটা খারাপ না, প্রাইমারিতে সব সময় ফার্স্ট হতাম। সেই কারণে বলি যে শেখার পরে আমি হয়তো আরও বিস্তারিতভাবে প্রসঙ্গগুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারবো।

‘এক বছর যথেষ্ট সময় কিনা, আমার নিজের কাছে বিষয়টা অন্যরকম। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য ২০০৯ থেকে যে প্রচেষ্টার তার ৯ বছর অতিক্রম করেছি। এটি যদি প্লেনের টেক-অফের সঙ্গে তুলনা করেন, প্লেন যখন টেক-অফ করে তখন তার সমস্ত শক্তি একত্রিত করে আকাশে উড়ে। আমরা ৯ বছরে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি, এখন এক বছরে বহু বছরের কাজ একসঙ্গে হওয়া উচিত। ’

মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি মন্ত্রণালয়। তার কারণ, এটি এক সময় শুধু ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ছিল, তখন এর পরিধিটা হয়তো ছিল এরকম- মানুষ মনের কথা বলতে পারি কিনা, বা তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় আছে কিনা, এটুকুর মধ্যে হয়তো সীমিত ছিল।

‘কিন্তু এখন এ মন্ত্রণালয় দুই দিক থেকে- তথ্যপ্রযুক্তি এবং টেলিযোগাযোগ। এই দুই দিক থেকে এমন একটি জায়গায় গেছে বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরে বড় ভূমিকা পালন করে এই মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় যেমনি করে টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করছে, তেমনি তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে পালন করছে। আজকের দিনে প্র্যাকটিক্যালি গাড়ি চলার সড়ক তৈরি করার চাইতে ইন্টারনেট চলার মতন মহাসড়ক তৈরি করতে পারে কিনা, এটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আগামী দিনে এটি আরো গুরুত্বপূর্ণ হবে এবং এ মন্ত্রণালয় যে ভূমিকা পালন করবে তার উপর নির্ভর করবে, বাকি মন্ত্রণালয়গুলো কী করে কতটা জনগণের কাছে সেবা পৌঁছাতে পারবে অথবা রূপান্তরগুলোকে মানুষের কাছে কীভাবে নিয়ে যেতে পারবে। ’

মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়ে কৃতজ্ঞতা জানান মোস্তাফা জব্বার।

‘…আমি কৃতজ্ঞ যে, প্রধানমন্ত্রী তার এ মেয়াদকালের শেষ বছরে এমন একটি জায়গায় বসিয়েছেন, যেটি আমার সবচেয়ে বেশি প্রিয় জায়গা। আমাকে যদি কেউ বলে যে, এই জীবনের মধ্যে আপনি কী বিষয় নিয়ে সবচেয়ে বেশি সময় কাটাইছেন? তাহলে বুঝতে হবে, এই মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সবগুলো বিষয় নিয়ে আমি যে পরিমাণ সময় দিয়েছি, দুনিয়ার আর কোন বিষয় নিয়ে বোধহয় না এ পরিমাণ সময় দিয়েছি। ”
 
ডাক বিভাগ নিয়ে নতুন মন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি এ মন্ত্রণালয়ের সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং বিষয় হচ্ছে, পৃথিবীতে ডাক চলাচলের যে বিবর্তন…, তাকে এই ডিজিটাল যুগে কীভাবে রুপান্তর করা যায়, সেই জায়গাটা চ্যালেঞ্জ।  

‘বহুল আলোচিত টেলিফোন শিল্প সংস্থা, টেলিটক, বিটিসিএল নিয়ে কথা হয়, মানুষের প্রত্যাশা আছে অনেক। সবটুকু হয়তো পূরণ করতে পারি না। আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে, প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ করতে পারবো তা জানি না, কিন্তু পূরণ করার জন্য যে চেষ্টা অব্যাহত ছিল সেই চেষ্টাকে আরো জোরদার করে কীভাবে মোকাবেলা করতে পারি সেই জায়গায় চেষ্টা থাকবে। ’

নতুন মন্ত্রী বলেন, আমি স্পস্টবাদী মানুষ, সমালোচনা করি, সমালোচনা সহ্য করতে পারি। সহ্য করার ক্ষমতাটা যেহেতু আমার আছে, আপনারা স্পস্টভাবে যদি আমাদের কোনো ভুল ত্রুটি দেখেন, কোনো জায়গায় ভুল পথ পরিচালতি হই আপনারা আমাদের সংশোধন করে দেবেন।
 
এসময় টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ এবং বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৭
এমআইএইচ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।