বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে স্মার্ট কার্ড বিতরণের স্থান ২ নম্বর গৌরিচন্না ইউনিয়নের নওয়াব সলিমুল্লাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গেলে এ অভিযোগের সত্যতা মেলে। এর আগে বুধবার সোনার বাংলা নামক স্থানে স্মার্ট কার্ড বিতরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায়।
স্মার্ট কার্ড বিতরণ কেন্দ্রের গেটেই দেখা মেলে ইমরান নামের একজন সোনালী ব্যাংকের চালান ফরমের মাধ্যমে ৪শ’ করে টাকা নিচ্ছেন। টাকা নেওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করতেই ইমরান গিয়ে মো. রিয়াজুল নামের এক ব্যক্তিকে ডেকে আনে। রিয়াজুল এসে জানান, ইমরান তার নিয়োগ করা অফিসের লোক। ৪শ’ টাকা নেওয়ার কারন সর্ম্পকে তিনি বলেন, যারা জাতীয় পরিচয় পত্র হারিয়েছেন; তাদের কাছ থেকে ৪শ’ টাকা নেই। বুধবার (৩ জানুয়ারি) ২৩টি চালান ফরম জমা দিয়েছি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ১১টি চালান ফরম জমা করেছি।
সরকার নির্ধারিত ৩৪৫ টাকার বেশি নেওয়ার কারণ হিসেবে রিয়াজুল বাংলানিউজকে জানান, অফিসের খরচের জন্য বাড়তি টাকা নেওয়া হয়। এ টাকা নেওয়ার বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার অবগত।
বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বাড়তি টাকা নেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বাংলানিউজকে জানান, গ্রামের লোকজন সোনালী ব্যাংকের চালান ফরম লিখে পূরণ করতে পারে না। তাই টাকা নিয়ে তাদের সাহায্য করা হচ্ছে। শুধুমাত্র গরীবের সুবিধার জন্যই এ টাকা নেওয়া হয়। তাছাড়া চালান ফরমের টাকা আমাদের অফিস সহকারী মজিবুর সোনালী ব্যাংকে জমা দিয়ে আসেন।
অবশ্য অফিস সহকারী মজিবুর জানান, আমি কোনো চালান ফরম পাইনি। আর সোনালী ব্যাংকে কোনো টাকাও জমা দেইনি।
যদিও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের নির্দেশনা রয়েছে, স্মার্ট কার্ড বিতরণ কেন্দ্রে কোনো অবস্থাতেই নগদ লেনদেন করা যাবে না।
তারপরও স্মার্ট কার্ড বিতরনের কেন্দ্রে বসে নগদ অর্থ লেনদেন করেছন কম্পিউটার অপারেটর রিয়াজুল ইসলাম, (টিম লিডার) আল-আমিন, তরিক ও অর্জূন।
যদিও সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান কম্পিউটার অপারেটর ও টিম লিডারদের পক্ষেই কথা বলছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরগুনা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. দুলাল তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, আমি ট্রেনিং করতে ঢাকায় আছি। বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার এ সব বিষয়ে দেখাশোনা করেন, তার সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. মোখলেছুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, স্মার্ট কার্ড বিতরণের ব্যাপারে অতিরিক্তি অর্থ নেওয়া হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা নির্বাচন অফিসারকে বলে দিচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ০২৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৮
এমএইউ/