যানবাহনগুলো তখনও হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। শীতের তীব্রতা যেন কুয়াশার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, গত কয়েকদিন ধরে উত্তরের জেলা দিনাজপুরে শীতের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। শীতের পাশাপাশি ঘন কুয়াশা ও শীতল বাতাস নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করছে। তীব্র শীতে উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের তেমন অসুবিধা না হলেও বিপাকে পড়তে হয়েছে নিম্ন আয়ের ও ছিন্নমূল মানুষদের। শীতের মধ্যে শত কষ্ট হলেও পেটের দায়ে ঘর থেকে বের হচ্ছেন কাজের সন্ধানে। এই তীব্র শীতে কষ্ট পেতে হচ্ছে শিশু-বৃদ্ধসহ সব বয়সের মানুষদের।
দিনাজপুর শহরের দপ্তরিপাড়া এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম একজন দিনমজুর। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘দিন আনি দিন খাই। একদিন কাজ না করলে ৫ সদস্যের পরিবারের সবাই নাখেয়ে থাকবে। যতই শীত হোক তাদের মুখে এক মুঠো খাবার তুলে দিতে কাজে যেতেই হবে। পরিবারের সদস্যের মধ্যে দুই ছেলে, স্ত্রী ও বিধবা মা রয়েছেন। বড় ছেলে মো. সবুজ (১৫) দিনাজপুর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ক্যাম্প স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। অপর ছেলেক এবার নিকটবর্তী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করেছি। দিনমজুরের কাজ করে আয় হয় তিন থেকে চার’শ টাকা। যা দিয়ে সংসার ও ছেলেদের পড়াশোনায় খরচ চালাতে হয়। ’
তিনি বলেন, শনিবার (৬ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৭টায় শহরের শষ্টিতলা মোড়ে এসেছেন দিন হিসেবে কাজের সন্ধানে। সাধারণত ইট, বালু, খোয়া, বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ ইত্যাদি করে থাকেন তিন। এই কাজগুলো এই রকম শীতে করা খুবই কষ্টকর। কিন্তু বাঁচার তাগিদে কষ্ট করতেই হবে। এ শীতে গরম কাপড় কেনার কথাতো আমাদের স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই না। বিত্তবানদের ফেলে দেওয়া ছেড়া কাপড়ই আমাদের শেষ ভরসা। তবে তীব্র এই শীতে সরকারি সহায়তার আহ্বান জানান তিনি।
দিনাজপুর আবহাওয়া অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, শীত বাড়ছে। শনিবার সকালে দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসের আদ্রতা ছিলো ৯৭ শতাংশ আর গতি বেগ ছিলো ঘণ্টায় ৮ কিলোমিটার।
তিনি বলেন, আবহাওয়ার পূর্ব আভাস অনুযায়ী আগামী আরও দুই থেকে তিনদিন দিনাজপুরে শীতের তীব্রতা থাকবে। পাশাপাশি ঘন কুয়াশা ও শীতল বাতাস বয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪১, জানুয়ারি ০৬, ২০১৮
জিপি/