ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর ভাষাসমূহের আন্তর্জাতিক বর্ষের বৈশ্বিক উদযাপন উপলক্ষে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের প্লেনারি সভায় এ প্রতিশ্রুতির কথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের এ স্থায়ী প্রতিনিধি।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমাদের মাতৃভাষা বাংলার অধিকার আদায়ের দাবিতে ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
তিনি বলেন, এটা আনন্দের বিষয় যে এ বছর ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ ও ‘২০১৯-ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর ভাষার আন্তর্জাতিক বর্ষ’ একসঙ্গেই উযাপন করা হচ্ছে। উভয় উদযাপনই ভাষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এ ভাষা ও সংস্কৃতি হচ্ছে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ বিষয়টিকে সমুন্নত রাখার নির্ণায়ক। আর এ বছরই বাংলাদেশ আনীত ‘শান্তির সংস্কৃতি’ রেজুলেশন গ্রহণের ২০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হবে। সবমিলিয়ে ভাষা, সংস্কৃতি ও শান্তির মেলবন্ধনে অর্জিত আমাদের ‘একতা’কেই আমরা যেন মহাসমারোহে উদযাপন করতে যাচ্ছি। আমাদের সব জাতীয় নীতি, কর্মসূচি ও উন্নয়ন পরিকল্পনায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অধিকার সংরক্ষণ করেছি। যার স্বীকৃতি স্বরূপ ইউনেস্কো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রদান করেছে সম্মানজনক ‘কালচালার ডাইভারসিটি’ পুরস্কার।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমরা পাহাড়ি জেলাসমূহে মোট সাতটি বিশেষায়িত সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছি, যা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীসহ সব উপজাতীয় সংস্কৃতি, রীতি-নীতি, ঐতিহ্য ও ভাষার প্রসার ও সংরক্ষণে কাজ করছে। আমাদের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট ভাষার সংরক্ষণ গবেষণা এবং এ সংক্রান্ত মেধাভিত্তিক কাজ বাস্তবায়ন করে চলেছে। আমরা বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর নিজস্ব মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করেছি। ইতোমধ্যে পাঁচটি নৃ-গোষ্ঠীর নিজস্ব মাতৃভাষায় পাঠ্যপুস্তক প্রকাশিত হয়েছে। এ সব অঞ্চলে প্রায় ১৩২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাতৃভাষায় শিক্ষা দিচ্ছে।
সকাল ১০টায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ এর ৭৩তম অধিবেশনের সভাপতি মিজ্ মারিয়া ফার্নান্দা এসপিনোসা গার্সেজ এ অনুষ্ঠানের শুধু সূচনা করেন এবং উদ্বোধনী বক্তব্য দেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কি-নোট স্পিচ দেন বলিভিয়ার রাষ্ট্রপতি ইভো মোরালেস। এছাড়া বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়াবলী সংক্রান্ত আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল লিউ জেনমিন, ইউনেস্কোর সংস্কৃতি বিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আর্নেস্টো অটোনি রামিরেজ এবং ‘স্থানীয় ভাষার আন্তর্জাতিক বর্ষ’ উদযাপনের স্টিয়ারিং কমিটির চারজন কো-চেয়ার।
অনুষ্ঠানে কানাডার নর্দান ভ্যাঙ্কুভার আইল্যান্ডের কোকোয়াকা ভাষাভাষী জনগণ তাদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশন করেন। কানাডার ও ইকুয়েডরের মন্ত্রীদ্বয় এ সভায় বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৭২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৯
ইইউডি/এসআই