ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে চীনের সঙ্গেও সম্পর্ক বাড়াতে হবে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৯
রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে চীনের সঙ্গেও সম্পর্ক বাড়াতে হবে প্যানেল আলোচনা সভায় বক্তারা-ছবি-বাংলানিউজ

ঢাকা: রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধানে মিয়ানমার ও চীনের সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা। রোহিঙ্গা সমস্যাকে আঞ্চলিক সমস্যা উল্লেখ করে তারা বলছেন, এর দ্রুত সমাধানের জন্য চীন ও ভারতের মতো প্রতিবেশী দেশের পাশাপশি মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ ও সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। 

মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান: দীর্ঘমেয়াদী কার্যকর পদক্ষেপ’ শীর্ষক এক প্যানেল আলোচনা সভায় এমন মতামত দেন বক্তারা। রিডিং ক্লাব ট্রাস্টের সহযোগিতায় ঢাকাস্থ কানাডিয়ান হাইকমিশনের উদ্যোগে রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

 

প্রফেসর সৈয়দ আমীর খসরুর সভাপতিত্বে প্যানেল বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন-ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত এম সাখাওয়াত হোসেন, রাজা দেবাশীষ রায়, মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত এ এন এম মুনীরুজ্জামান এবং কূটনৈতিক হুমায়ুন কবির।  

মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে কানাডিয়ান সরকারের বিশেষ দূত বব রে।  

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে দীর্ঘমেয়াদে নেওয়া কোনো পদক্ষেপ বাংলাদেশের জন্য স্বস্তিদায়ক হবে না উল্লেখ করে বব রে বলেন, এই সংকট সমাধানের জন্য স্বল্প কিংবা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার পাশাপাশি অন্তবর্তীকালীন সমাধানের পথও খুঁজতে হবে। স্বল্পমেয়াদে এর সমাধান হবে না আর দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের কথা বললে ক্ষতি শুধু বাংলাদেশকে বহন করতে হবে। তাই অন্তবর্তীকালীন সমাধানের পথ আমাদের খুঁজতে হবে যার মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ, টেকসই  ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন বিষয়ক আলোচনায় তাদেরকেও সম্পৃক্ত করতে হবে।  আবার, একইসঙ্গে শরণার্থীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে যাতে তারা কট্টরপন্থা কিংবা সন্ত্রাসবাদের প্রতি আকৃষ্ট না হয়ে পড়ে।  

বব রে আরও বলেন, মিয়ানমারের উপর কোনো অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এর সমাধান হবে না। বরং এমন সিদ্ধান্ত চীনকে মিয়ানমারের আরও কাছে নিয়ে আসবে। তাই ভারত ও চীনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশগুলোকে বাংলাদেশের পক্ষে নিয়ে আসার জন্য কাজ করতে হবে। একইসঙ্গে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ ও সম্পৃক্ততা আরও বাড়াতে হবে।  

প্যানেল বক্তা হিসেবে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এটা আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমরা আরও আগেই মিয়ানমারের দিকে সেভাবে নজর দেয়নি। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য পাঁচ-দশ বছরও লেগে যেতে পারে। যেহেতু এটি একটি আঞ্চলিক সংকট, ফলে তা  নিরসনে বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সাহায্য নিতে হবে।  

এছাড়া মিয়ানমার সহস্ত্রবাহিনীর সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বর্তমান সময়ের তরুণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের সশস্ত্রবাহিনীর কর্মকর্তাদের যোগাযোগ বাড়ানোর প্রতি তাগিদ দেন এই সামরিক বিশ্লেষক।  

আলোচনা সভায় অতিথি বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। আরও আগে থেকে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগের ঘাটতির বিষয়টি স্বীকার করে শাহরিয়ার আলম বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে যেসব দেশ আমাদের সাহায্য করতে পারে আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছি। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি জেনেভায় একটি সভায় এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করবো। তার আগে শুধু রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ওআইসির একটি সম্মেলন রয়েছে। সেখানেও আমরা এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেন এই ইস্যুটিকে ভুলে না যায় সেদিকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।  

আলোচনা সভায় সবার প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডিয়ান হাইকমিশনার বেনৈত প্রিফন্তিনে। তিনি বলেন, এ ধরনের আলোচনার মাধ্যমে অনেক সমাধানের উপায় পাওয়া যায়। আমরা এ ধরনের আলোচনা আগামীতেও অব্যাহত রাখবো। আমরা পরিষ্কার করে জানাতে চাই যে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে কানাডা বাংলাদেশের পাশে রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৯
এসএইচএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।