গত বৃহস্পতিবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে খুমেক’র বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ছাত্রাবাস থেকে এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করার কথা বলে বের হন সাকিব। তারপর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন।
সাকিবের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদরের উত্তর কাঞ্চননগর এলাকায় এবং বর্তমান ঠিকানা চট্টগ্রামের নন্দনকাননের টিঅ্যান্ডটি কলোনি। নিখোঁজ আল মাহমুদ সাকিবের বাবা মো. আজম হোসেন পাটোয়ারী একজন প্রকৌশলী। সাকিব চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ থেকে ২০১২ সালে এসএসসি এবং ২০১৪ সালে এইচএসসি পাস করে খুমেকে ভর্তি হয়। সাকিবের আরও দুই বোন রয়েছেন।
এদিকে একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে তার বাবা-মা হতাশায় ভেঙে পড়েছেন। তার স্বজনরা আত্মীয়-স্বজনসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বিষয়টি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষও পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। কিন্তু সাকিবকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
রোববার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সাকিবের বাবা মো. আজম হোসেন পাটোয়ারী বাংলানিউজকে বলেন, কী কারণে ছেলে নিখোঁজ তার কোনো দৃশ্যমান কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সাকিব কোনো দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। তার সঙ্গে কারও কোনো বিরোধও নেই।
তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ ও পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে তদন্ত করছেন। জিডির তদন্ত কর্মকর্তাকে আমি জানিয়েছি, জিন্নাহ মসজিদের সামনে থেকে সাকিবের মোটরসাইকেল থামিয়ে একলোক মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গেছে। ওই স্থানের একটি দোকানের ভিডিও ফুটেজে তা পাওয়া গেছে। তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন ভিডিও ফুটেজ সম্পর্কে তারা অবগত রয়েছেন।
সহপাঠীরা বলছেন, নিখোঁজের চারদিন পরও সাকিবের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। সে অপহরণ না গুম হয়েছে এখনো সে রহস্যের কিনারা হয়নি।
তারা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে খুমেকের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ছাত্রাবাস থেকে এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করার কথা বলে বের হয় সাকিব। তার সঙ্গে ছিলো কালো রংয়ের একটি লিভো মোটরসাইকেল। এরইমধ্যে পুলিশ মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করেছে। কিন্তু সাকিবের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে মহানগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় সাকিবের মামা মো. ইসমাইল হোসেন একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
দায়েরকৃত ওই জিডিতে উল্লেখ করা হয়, বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে সাকিব খুমেকের ছাত্রাবাস থেকে বের হন। রাত ৮টার দিকে জনৈক জসিম (৩৫) এর মাধ্যমে সাকিবের রুমমেট নাসিম রেজা সোহানের কাছ থেকে বাড়িতে পাঠানোর নাম করে তার ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ, একটি ট্যাব ও তিনটি মোবাইল ফোন নেওয়া হয়। এছাড়া সাকিব বিকেলে রুম থেকে বের হওয়ার সময় তার ব্যবহৃত হোন্ডা লিভো মোটরসাইকেলটিও নিয়ে যান। এরপর থেকে তার সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মমতাজুল হক বাংলানিউজকে বলেন, সাধারণ ডায়েরি করার পর সাকিবকে উদ্ধারের জোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে এখনো তার কোনো হদিস আমরা পাইনি। সাকিবের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়েছে।
সাকিব নিখোঁজ, আত্মগোপন নাকি গুম হয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, এখনও কিছু বলা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৯
এমআরএম/জেডএস