ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্ত্রীর মরদেহ পাঠালেন শ্বশুরবাড়ি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৯
স্ত্রীর মরদেহ পাঠালেন শ্বশুরবাড়ি লিপির মরদেহ। ছবি-বাংলানিউজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: স্ত্রীর মরদেহ সৎকারের ব্যবস্থা না করে প্রতিবেশীদের দিয়ে শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়েছেন কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মানিক কুমার দেব। 

চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পিটিয়ে ও গলা টিপে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে ওই নারীর মৃত্যু হয়।

 

নিহতের নাম লিপি নারী দেব। তিনি জেলার নাসিরনগর উপজেলার সদরের দত্তপাড়া এলাকার তুলসি রঞ্জন দেবের মেয়ে।  

নিহতের বাবার বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, মানিক তার স্ত্রী লিপিকে হত্যা করেছেন। পরে মরদেহ নিজেদের বাড়িতে না রেখে পারিবারের কাউকে না পাঠিয়ে প্রতিবেশীকে দিয়ে নাসিরনগরে পাঠিয়েছেন।  

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১২ বছর আগে অষ্টগ্রামের দুর্গামোহন দেবের ছেলে মানিক চন্দ্র দেবের সঙ্গে পারিবারিকভাবে লিপির বিয়ে হয়। মগ্ন চন্দ্র দেব নামে মানিক ও লিপি দম্পতির আট বছরের একটি ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো। শুক্রবার বিকেলেও বাড়ির রাস্তা নিয়ে স্বামী ও ননদদের সঙ্গে লিপির ঝগড়া হয়। এ সময় মানিক তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে গিয়ে বোনদের পক্ষ নেন। একপর্যায়ে মানিক ঘরে স্ত্রীকে মারধর করে হত্যা করেন।  

এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে মানিক চন্দ্র দেবের চাচাতো ভাই বিদ্যুৎ চন্দ্র রায় নামে একজন কথা বলেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, মানিক অসুস্থ। মানিক আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী। শুক্রবার তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন। আর তার স্ত্রী লিপি দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। এজন্যই তার মৃত্যু হয়েছে।

নিহতের বড় ভাই চন্দন দেব অভিযোগ করে বাংলানিউজকে জানান, মানিক প্রায়ই লিপিকে মারধর করতেন। শুক্রবার বিকেলে মানিক গলা টিপে তার বোনকে হত্যা করেন। পরে তাকে অষ্টগ্রাম থেকে স্পিডবোটে করে এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে নাসিরনগর পাঠিয়েছেন। এ ঘটনায় বোন জামাতার বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করবেন তিনি।  

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক আজহারুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ওই নারীর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা যাবে।

অষ্ট্রগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, মারা যাওয়ার সংবাদ পেয়েছি। এ বিষয়ে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। তবে স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, স্বামীর সঙ্গে ঝগড়ার জেরে ওই নারী আত্মহত্যা করেছেন।  অভিযোগ পেলে এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৯
জিপি/এমআইএইচ/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।