ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খেলাপির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার আশ্বাস অর্থমন্ত্রীর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৯
খেলাপির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার আশ্বাস অর্থমন্ত্রীর জাতীয় সংসদের অধিবেশন কক্ষ ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: দীর্ঘদিনের ঋণ খেলাপির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার আশ্বাস দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সেই সঙ্গে ব্যাংকগুলোর সুদের হার একক ডিজিটে অর্থাৎ ৯ শতাংশে নামিয়ে আনতে সরকার বদ্ধপরিকর বলেও জানান তিনি। 

রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ সাবেক প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গার ৭১বিধিতে আনা নোটিশের উত্তরে মন্ত্রী এ আশ্বাস দেন।

রাঙ্গা বলেন, সকারের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও দেশের ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদ হার এখনও এক অংকের ঘরে নেমে আসেনি।

নোটিশের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, বক্তব্যটি পুরাপুরি সত্য না হলেও আংশিক সত্য। আমরা সবাই জানি ব্যাংক ঋণে অব্যবসাবান্ধব অতিরিক্ত সুদ হার ধার্য করা হলে দেশের অর্থনীতি সাবলীলভাবে এগিয়ে যেতে পারে না। ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বাধাপ্রাপ্ত হয় আমাদের কর্মসংস্থান। সামষ্টিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক অবস্থার সৃষ্টি হয়।

‘বিষয়টি অনুধাবন করে দেশের ব্যবসায়ী সমাজ অবস্থাটি ব্যাখা করার জন্য ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলাপ করে ব্যাংকঋণের সুদের হার এক অংকের ঘরে নামিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থমন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। সেই নির্দেশনার ফলশ্রুতিতে এরইমধ্যে দেশের ২১টি ব্যাংক ঋণের ওপর সুদ হার এক অংকের ঘরে তথা ৯ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। ’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক অন্য সব ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আশাকরা যাচ্ছে বাকি ব্যাংকগুলোও প্রদত্ত ঋণের সুদ হার অল্প সময়ের মধ্যে এক অংকের ঘরে নামিয়ে আনতে সক্ষম হবে। বিষয়টি নিয়ে আমি নিজেও এরই মধ্যে সংশ্লিষ্টদের, অর্থাৎ সরকারি কর্মকর্তা সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের মালিক এবং ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কয়েক দফা কথা বলেছি। সংশ্লিষ্ট সবাই ইতিবাচক মনোভাব প্রদর্শন করেছেন।

মুস্তফা কামাল বলেন, ব্যাংকঋণে উচ্চহারে সুদ আমাদের অর্থনীতিতে দীর্ঘকাল ধরে একটি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে আসছে। ব্যাংকঋণের সুদের হার একটি গ্রহণযোগ্য ও ব্যবসাবান্ধব পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য আমাদের সরকার বদ্ধপরিকর। সংশ্লিষ্ট সবার কাছে উইন উইন ফ্যাক্টের হাত ধরে অল্প সময়ের মধ্যে আলোচন্য বিষয়ে সমধান পাবো।

তিনি বলেন, আমরা ব্যবসাবান্ধব একটি সরকার। আমরা ব্যবসায়ীদের বিপক্ষে না। ব্যবসায়ীরা যদি ব্যবসা না করতে পারেন, আমাদের কর্মসংস্থান কোথা থেকে আসবে? দারিদ্র্য বিমোচন কীভাবে হবে? সেই কাজগুলে করার জন্য তাদের (ব্যাংক মালিকদের) সঙ্গে বারবার বসছি। আমি আশস্ত করছি শিগগিরিই এর ফলপ্রসূ অবস্থা দেখতে পাবেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা ঘোষণা দিয়েছি ক্লাসিফায়েড ঋণের পরিমাণ আর বাড়বে না। ঋণ খেলাপির সংস্কৃতি দীর্ঘকাল ধরে আমাদের এই সমাজে বহমান। আমরা সেই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। আমি আশস্ত করতে পারি আমরা সেই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসবো। আমাদের ঋণের পরিমাণ বাড়বে না।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৯ 
এসকে/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।