ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নরসিংদীতে ৭ দিনব্যাপী বাউলমেলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৯
নরসিংদীতে ৭ দিনব্যাপী বাউলমেলা বাউলমেলায় আসা বাউলরা। ছবি: বাংলানিউজ

নরসিংদী: নরসিংদী শহরের মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষে প্রাচীন শ্রী শ্রী বাউল ঠাকুরের আখড়া। বাউল সম্প্রদায়ের নিয়ম অনুযায়ী প্রায় ৭শ’ বছর ধরে মাঘী পূর্ণিমা তিথীতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৭ দিনব্যাপী মেলা। গত রোববার থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে আগামী শনিবার পর্যন্ত।

মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ছিল দেবতা ব্রহ্মার মহাযজ্ঞানুষ্ঠান। মুন্সিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, গাজীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ ভারতের আগরতলা থেকে আসা কয়েকশ’ বাউল অনুসারী ও হাজারো পুণ্যার্থী এতে অংশগ্রহণ করেন।

তারা পুণ্য লাভের আশায় মেঘনায় গঙ্গা স্নান করে আখড়ার জগন্নাথ ঠাকুর ও বাউল ঠাকুরের সমাধি মন্দিরে ঘি বাতি প্রজ্জ্বলন করে মহাযজ্ঞে অংশ নেন।

আখড়ার আট চালা বৈঠক ঘরে চলছে বাউলদের বৈঠক। বাউল সাধকরা এ আসরে বাউল গান শোনান। আত্মশুদ্ধি আর আত্মমুক্তির জন্য এ মেলায় আসেন তারা এবং তুলে ধরেন মানব প্রেমের গান। গানের ফাঁকে বাউল দর্শন ব্যাখ্যা করে শোনান উপস্থিত ভক্ত ও পুণ্যার্থীদের।  

জানতে চাইলে অজিত কুমার বাউল বলেন, আমাদের লোভ, হিংসা, ভোগ সব ত্যাগ করে এখানে বসতে হয়। এখান থেকে মানুষ হয়ে যাতে ফিরে যেতে পারি, মানুষ হয়ে সারা জীবন যাতে কর্ম করে যেতে পারি এবং আবার যেন মানুষ হয়েই পৃথিবীতে জন্ম নিতে পারি এটাই আমাদের সাধনা।

বাউল ঠাকুরের আখড়াবাড়ি সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৭০০ বছর আগে নরসিংদীতে এক বাউল ঠাকুর ছিলেন। সেই বাউল ঠাকুরের স্মরণে তার আখড়াধামে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এই বাউলমেলা। তবে কে প্রথম এখানে বাউল মেলার আয়োজন করেন তার প্রকৃত তথ্য জানা নেই কারো। ব্রিটিশ শাসনামল থেকে মেলার আয়োজন করেছেন স্বর্গীয় নদীরাম বাউল। পরবর্তী সময় তার নাতি মনীন্দ্র চন্দ্র বাউল মেলার আয়োজন করেন। বর্তমানে প্রাণেশ কুমার ঝন্টু বাউল নরসিংদীর বাউল আখড়াবাড়ির সেবায়েত তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

বাউল আখড়ার সেবায়েত ডা. প্রানেশ কুমার বাউল ঝন্টু বলেন, দেশ-বিদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক বাউল এ মেলায় যোগ দিয়েছেন। মঙ্গলবার দেবতা ব্রহ্মার মহাযজ্ঞানুষ্ঠানে বাউলদের পাশাপাশি পুণ্যার্থীরা অংশ নিয়েছেন। বুধবার জাতি বর্ণ নির্বিশেষে সবাই কলা পাতায় মহাপ্রসাদ গ্রহণ করবেন। এবং এ মিলনমেলা আগামী শনিবার পর্যন্ত চলবে।

অনুষ্ঠানকে ঘিরে মেঘনা নদীর পার ঘেঁষে জমে উঠেছে বিশাল মেলা। মেলায় কুটির শিল্প, মৃৎশিল্প, কাঠ-বাঁশ ও মাটির তৈরি কুটির শিল্প সামগ্রী লৌহজাত সামগ্রী, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, মিষ্টির দোকানসহ অগণিত দোকানে মহিলা-শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ ভীড় জমাচ্ছে। এছাড়াও বিনোদনের জন্য রয়েছে চরক-দোলাসহ নানা রাইড।

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।