ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দেশকে উন্নত করতে যত শ্রম লাগে দেব

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৯
দেশকে উন্নত করতে যত শ্রম লাগে দেব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ফাইল ছবি)

আবুধাবি (সংযুক্ত আরব আমিরাত) থেকে: বাংলাদেশের জনগণ আমার উপরে আস্থা রেখেছে, বিশ্বাস রেখেছে। তারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে, সর্বোপরি সেবা করার সুযোগ দিয়েছে। তাই আমি অন্তত এটুক বলতে পারি, যত শ্রম দিতে হয় হোক আমি এই দেশটাকে উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলে জাতিকে উপহার দেব। 

মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন মা-বাবা, ভাই-বোন হারিয়ে আমার রিক্ততা কাজ করে।

তার মধ্যে একটাই শক্তি কাজ করে, যে জাতির জন্য আমার মা-বাবা জীবন দিয়ে গেছেন, ভাইরা জীবন দিয়ে গেছেন, সে জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করা। তার (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) যে স্বপ্ন, সে স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশকে একটি পরিপূর্ণ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা, এটাই আমার প্রাপ্য।  

হুন্ডির মাধ্যমে রেমিটেন্স দেশে না পাঠিয়ে ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য প্রবাসীদের উদ্বুদ্ধ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীরা বিদেশে বসে অর্থ উপার্জন করে যেন দেশে গিয়ে তা বিনিয়োগ করতে পারে তার জন্য আমরা ব্যাংক করে দিয়েছি। তাছাড়া আমরা দেশে যে শিল্পাঞ্চল তৈরি করেছি সেখানে তাদের জন্য স্পেশাল প্লট বরাদ্দের ব্যবস্থাও রেখেছি।  

এ বিষয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমরা ইনসেনটিভ দেওয়ার ব্যাপারে অনেক চিন্তাভাবনা করেছি। কথা হচ্ছে, যদি এখন আমরা এক টাকা বাড়ায় তাহলে যারা হুন্ডি ব্যবসা করে তারা যদি দুই টাকা বাড়ায় তাহলে কি হবে? প্রশ্নটা কিন্তু সেখানেই এসে যায়। তবুও এ ব্যাপারে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, অনেক প্রাইভেট ব্যাংকও অনুমোদন দিয়েছে। অনেক ব্যাংক বিদেশে ইতোমধ্যে শাখা করেছে। ব্যাংকের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে সঙ্গে সঙ্গে টাকা পাঠানো ভালো। বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে এ পদ্ধতিতে টাকা পাঠানোর সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।  

হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠালে আত্মসাতের ঝুঁকি বেশি বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, অন্যভাবে টাকা পাঠালে যে অসুবিধা হয়, টাকা সঠিক সময়ে যায় না বা টাকা আত্মসাৎ হয়ে যায়। কাজেই সে পথে না যেয়ে সবাই যদি ব্যাংকের মাধ্যমে বা এখন তো মোবাইল ফোনের মাধ্যমে টাকা পাঠানো যাচ্ছে সেভাবে পাঠালে সেটা যেন স্বচ্ছতার মধ্যে থাকে সেটার ব্যবস্থাও করে দিচ্ছি। যেন কোনভাবেই প্রবাসীদের কষ্টার্জিত টাকা নষ্ট না হয়। এদিকে আমরা বিশেষ নজর রেখেছি।  

এসময় তিনি বলেন, বাঙালিদের বুদ্ধি অনেক বেশি। আমি যদি একটা পথ বন্ধ করি তারা আবার আরেকটা পথ খুঁজে বের করে। মুশকিল সেখানেই হয়ে যায়। এক্ষেত্রে আপনারা যদি সচেতন থাকেন তাহলে আমার মনে হয় আমরা যথেষ্ট সহযোগিতা করতে পারবো।  

এক্ষেত্রে অ্যাম্বাসিও তৎপর রয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, অ্যাম্বাসিকে নির্দেশ দেওয়া আছে। যেহেতু অ্যাম্বাসি কেন্দ্রীয় শহরে থাকে, তাই তাদের বলেছি প্রতিনিয়ত আপনারা বিভিন্ন এলাকায় যাবেন এবং মানুষের খোঁজ নেবেন। তাদের সমস্যাগুলো জানবেন, সমাধানের ব্যবস্থা করবেন।  

এদেশে কারাভোগকারীকে দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হবে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, অনেক বাঙালির কাছে কারাগারে থাকার অভিযোগ শুনেছি। প্রায় ৭০০-এর মতো লোক কারাগারে রয়েছে। আমরা তাদের ফেরত নেওয়ার ব্যবস্থা করছি। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে, এমন কোনো কাজ আপনারা করবেন না যেন বিদেশে আপনাদের কারাভোগ করতে না হয়। এদেশের আইন-নিয়ম মেনে চলুন। যখন যে দেশে যাবেন সে দেশের আইন, নিয়ম, রীতিনীতি মানতে হবে এবং অন্যদের সচেতন করতে হবে।        

অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীকে প্রবাসীরা ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।  

সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন প্রবাসী বক্তব্য রাখেন। এছাড়া প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।  

বাংলাদেশ সময়: ০০৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৯
এমইউএম/এমএএম/আরআর     

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।