ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দৃশ্যমান হলো পদ্মাসেতুর ১২০০ মিটার 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৯
দৃশ্যমান হলো পদ্মাসেতুর ১২০০ মিটার  পদ্মাসেতু

মুন্সিগঞ্জ: পদ্মাসেতুর উপর দিয়ে পদ্মা পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেওয়ার পথে। জাজিরা প্রান্তে সেতুর ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিলারের ওপর "৬ই" স্প্যান (সুপার স্ট্রাকচার) বসানোর মাধ্যমে জাজিরা ও মাওয়া প্রান্ত মিলিয়ে দৃশ্যমান হলো ১২০০ মিটার। 

জাজিরা প্রান্তে ৬ষ্ঠ স্প্যান বসানোর ২৮ দিনের মাথায় বসলো এই সপ্তম স্প্যানটি। বাকি স্প্যান বসানোর সময়ের হিসেবে খুব কম সময়ে স্প্যানটি বসাতে পারায় আনন্দিত দেশি বিদেশি প্রকৌশলীরা।

এভাবে প্রত্যেক মাসে একটি করে স্প্যান বসানোর ধারাবাহিকতা থাকলে পদ্মাসেতু খুব শিগগিরই দৃশ্যমান হবে।

বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পৌনে ১টার দিকে সেতুর ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিলারের ওপর জাজিরা প্রান্তে বসে সপ্তম স্প্যানটি। এর আগে সকাল ৮টা থেকে পিলারের ওপর স্প্যান বসানোর কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে মাওয়া প্রান্তে একটি অস্থায়ী স্প্যানসহ পুরো সেতুতে এখন ৮টি স্প্যান। ভোর থেকে পদ্মায় কুয়াশার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তাই প্রকৌশলীদের কাজে ধীরগতি ও বাড়তি ভাবনা যোগ হয়েছিল।  

জাজিরায় ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১ ও ৪২ পিলারে সাতটি স্প্যান ও মাওয়া ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের উপর একটি অস্থায়ী স্প্যান।

এর আগে মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে রওনা দিয়ে স্প্যানটি বিকেলে জাজিরা প্রান্তে কাঙ্ক্ষিত পিলার এলাকায় এসে পৌঁছে। ধূসর রংয়ের স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার আর ওজন তিন হাজার ১৪০ টন। তিন হাজার ৬০০ টন ধারণক্ষমতার ক্রেন 'তিয়ান ই' স্প্যানটি বহন করে আনে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকৌশলী বাংলানিউজকে জানান, সকাল থেকে এই স্প্যানটি বসানোর কাজ শুরু হয়। তবে ঘন কুয়াশার কারণে কাজে ধীর গতি দেখা দেয়। খুঁটিনাটি বিষয়গুলো এর আগে থেকেই বিশেষজ্ঞ প্যানেল দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হয়। ওয়েট টেস্ট, ট্রায়াল লোড টেস্ট, বেজ প্লেট, পাইল পজিশন, মেজারমেন্টসহ আনুষাঙ্গিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা সফলভাবে শেষ হয়। মডিউল ৬ এর দ্বিতীয় স্প্যান বসানো হয়েছে।  

স্প্যান বহনকারী ক্রেনটিকে পিলারের ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিলারের পজিশন অনুযায়ী রাখা হয়। এরপর লিফটিং ক্রেনের সাহায্যে রাখা হয় পিলারের ওপর। স্প্যানটি পুরোপুরি স্থায়ীভাবে বসে যেতে সময় লাগবে আরো কয়েকদিন।  

উল্লেখ্য, মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে চীনেরই আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বসানো হয় প্রথম স্প্যান। এর প্রায় ৪ মাস পর ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্প্যানটি বসে। এর দেড় মাস পর ১১ মার্চ জাজিরা প্রান্তে ধূসর রঙের তৃতীয় স্প্যান বসানো হয়। এর ২ মাস পর ১৩ মে বসে চতুর্থ স্প্যান। এর এক মাস ১৬ দিনের মাথায় পঞ্চম স্প্যানটি বসে ২৯ জুন। এরপর ৬ মাস ২৫ দিনের মাথায় বসে ষষ্ঠ স্প্যানটি। আর মাওয়া প্রান্তে ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর একটি স্প্যান রাখা আছে।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুতে ৪২টি পিলারের ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান। স্প্যান বসানো হয়েছে ৮টি, বাকি আছে ৩৩টি। পদ্মা বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।